মহাকালের এক নবীন তারা
আদিত্য তার নাম,
আকাশগঙ্গার দূরতম তীরে
সেই নক্ষত্রের গ্রাম।

সহসা এল ঝড়,
তীব্র ভরবেগে সে তারকার
কেঁপে ওঠে অন্তর।

দানবীয় সেই দ্বন্দ্ব,
আটের অধিক গ্রহ জীবনে
শুরু হল নবছন্দ।

চক্রের পাঠ নিল সকলে
কেন্দ্রে ভানুমতি,
কেন্দ্র থেকে তৃতীয় গোলক
পেল সঠিক জ্যোতি।

ধরিত্রী, ধরণী যে নামই ডাক
নীল সে রাজাধিরাজ,
শ্রেষ্ঠ জাতির জন্ম সেথায়
বিমূঢ় বিস্ময় আজ।

প্রথম বৃষ্টিবিন্দু এল
ভাসিয়ে মেঘের ভেলা,
মৃত্তিকা তার পেল ঠিকানা
মাতাল হাওয়ার খেলা।

অনেক বছর পর,
জলের ধারায় সৃষ্টি হল
হ্রদ, নদী ও সাগর।

দীর্ঘ দিবস গেলে
তপ্ত বিজনভূমে,
প্রাণের আবেশ উঠল জেগে
বারির অধর চুমে।

প্রথম প্রাণ ক্ষুদ্র অতি
অকোষী অনুজীব,
জন্ম নিয়ে সাগরতলে
বহুকাল নির্জীব।

লক্ষ বছর পেরিয়ে গেলে
বৃক্ষের কিশলয়,
গলা উঁচিয়ে ঘোষণা দিল
শাখার দিগ্বিজয়।

বড় গিরগিটি মহাহস্তী
লুপ্ত হলে পরে,
আশরাফুলরা এল মাটিতে
জয়ের ঝাণ্ডা উঁড়ে।

সম্প্রীতি আর সাম্য ছিল
আদি মানবের নীতি,
সবার উপরে মানুষ সত্য
দিবানিশি এই গীতি।

এল এক যুগ, শ্রেনী-সংগ্রামের
সামন্ত প্রভু মৌন,
যারা নিল হাতে কাস্তে হাতুরী
সেই মানুষ হল গৌণ।

‘মানুষ’ মুখ্য করতে একদল
দিয়ে গেল বলিদান,
সময়ের অগ্রজ তারাই হলেন
মহামানব আগুয়া্ন।

এর পরের ইতিহাস
সহসা নিরবধি,
আপন সৃষ্টি গেল ছাড়িয়ে
আকাশ পাতাল ভেদী।

আকাশের পথ চেনা হল তার
নেপথ্যে বিজ্ঞান,
নীহারিকায় গড়বে নতুন বসত
উড়িয়ে বিজয়-কেতান।

তবু-
আজ মানুষ আবার একা
থেকেও খাদ্য বস্ত্র,
মহা যুদ্ধের দুঃসহ স্মৃতি
আর দেখে মারণাস্ত্র।

নাগাসাকি আর হিরোশিমাতে
হল গর্বের ইতি,
মানবের শেষ বিবর্তনে
দানব হল তার জ্ঞাতি।

জেগে উঠলে মহীয়ান মানব
ভয় তবে বল কিসের?
দূর নক্ষত্রে বার্তা যাবে
“ভালবাসা মানুষের”।

মানূষের এই গল্প-
ফুরাবেনা কোনদিন,
“মানুষ সত্য, সুন্দর মানুষ”
লেখা থাক্ অমলিন।



রাত ৩ টা
জুন ২৮, ২০১৬, সিলেট
(সহধর্মিনী শাকিলা শারমিন লিসাকে উৎসর্গ)