কবি জানতেন তার কবিতা ছাপা হবে না
ছাপা হবে না কাগজের পাতায় কিংবা লিটলম্যাগে
তবু তিনি কবিতা লিখতেন অগত্য অবিরাম
হৃদয় স্পন্দন জাগিয়ে নৈসর্গিক প্রেমে মানব কল্যাণে
লিখতেন বিরহ কাতুরে নারীর প্রেমের উজানে
তারপর ইলেকট্রিক মেইলে পাঠাতেন সংবাদপত্রে
এরপর ভোর হতে চেয়ে থাকতেন চাতক পাখির মতো
হকারের ডাকের পাতায় পাতায় চোখ রেখে খুঁজতেন
আর পথিক ডেকে বলতেন হাত নেড়ে দৃষ্টি ভঙ্গি দিয়ে
কাল কাগজে ‘কবি জানতেন’ কবিতা পাঠালাম
আজও পত্রিকার পাতায় ছাপা হয়নি
আমার ‘একটি কবিতার জন্য’ রাত দিন যুদ্ধ করি
কি দারুণ অনুভূতি নিয়ে বলতেন তবু কবিতা লিখতেন
এবং কবি জানতেন তার কবিতা ছাপা হবে সাদা কাগজে
এরপর একদিন ফিরতি মেইলে সাহিত্য সম্পাদক লিখলেন-
কি ভাবে ছাপা হবে কবিতা, কবিতায় দ্রোহ নেই
নেই ছন্দ, নেই মাত্রা বৃত্ত এমনকি নেই অন্তঃমিল
আছে কেবল গদ্যে ভরা ডাহা ডাহা ভাষার কিল
পক্ষান্তরে এক পাঠক ফেসবুকের পাতায় লিখলেন
কবিতা লেখা সহজ জিনিস নয় আবার কঠিনও নয়
কবিতা যারা লেখে তারা নিছক পাগল না হয় ভবঘুরে
এভাবে উত্তাল হাওয়ায় একজন সাহিত্যিক ফোনে বললেন
পন্ডশ্রমের মতো কারো কথায় দিওনা কান লেখ শুধু লেখ
মনে যাহা কিছু আসে তাহাই কিছু সাজিয়ে গুছিয়ে লেখ
তুমি যেটাই লিখবে সেইটাই হবে তোমার দুর্লভ কবিতা
তবু কবি জানতেন শ্রম আমার পন্ড হবে মিথ্যা হবে জ্ঞান
তাহাই হবে বৃদ্ধাশ্রম জীবন যৌবন কাল
রাত জেগে জোছনার আলোয় বসে চাঁদকে ডেকে ডেকে
দিন কাটাতেন অপোয় একটি কবিতায় ঘুম ভেঙ্গে
তবু তিনি লিখতেন কাগজের পাতায় কলমের খুঁচায় খুঁচায়
স্বরে অ স্বরে আ স্বরবর্ণ অথবা ক খ ব্যঞ্জনবর্ণ মাতৃভাষায়
কবি জানতেন এবং লিখতেন নীতি নৈতিকতার ইতিকথা
স্বপ্ন দেখে স্বপ্ন ভাঙতেন আশা জাগ্রত হতো কবিতা
হাল ছেড়ে হাল ধরে আকস্মিক দেখেন একদিন
কাগজের পাতায় ফুটে আছে কবিতার অঝর পাঁপড়ি
কালির গন্ধে পাঠক বার বার নাকে গন্ধ নেয় দম ছেড়ে দম নিয়ে
তখন কবি জানতেন কবিতা তার মানব ও নৈসর্গিক সন্তান।