মনে পড়ে নীল?
আজ হতে তের বছর পূর্বে শরতের বিকেলে
হরিহর নদের জলে তুমি আমি বসিতাম পা’টি ভিজে
মাছ শিকারী ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় ছিপ বর্শি দেখে
তুমি বলিতে রুদ্র আমায় শিকার করিলে মনের বর্শি দিয়ে।
মনে পড়ে নীল?
সাদা কালো ধূসর লাল রঙের মেঘে উড়তে চাইতে
পাখির মত ডানার ঝাপটানি শব্দে আমাকে ডেকে
আমি কত মানা করতাম হাত দু’টি চেপে ধরে
তবু তুমি ভালবাসার বাণী শুনাতে আমাকে ব্যাকুল করে।
মনে পড়ে নীল?
আকাশ রোদ চলতো যেমন লুটোপুটি মেখে
তুমি চলতে আমাকে জীবন সঙ্গী ভেবে
অবশেষে শুনাতে জীবনানন্দের ‘সুরঞ্জনা’ কবিতা
কাঁধে মাথা রেখে বলিতে সুনীলের বরুনার মত
গন্ধ রুদ্র তোমার বুক জুড়ে।
মনে পড়ে নীল?
সন্ধ্যার ধুসর মেঘে আন্ধকার নেমে আসতো
পৃথিবীর বুকে তবু তুমি বলিতে আর একটু
বসনা পাশাপাশি দু’জনে মুখোমুখি বনলতার
মত অন্ধকার নীড়ে বাসা বাঁধি প্রেম প্রত্যায়ে।
মনে পড়ে নীল?
সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে আসিতে প্রতিদিন
হরিহর নদের তীরে ঢেউয়ের মিতালী দেখে
হেসে লুটোপুটি খেতে আমার গায়ে।
মনে পড়ে নীল?
আসিতে একটু দেরি হলে বলিতে অপেক্ষা এত নিষ্টুর কেন
আমায় অপেক্ষা করিতে ভাললাগে না রুদ্র আমায় নিয়ে
চল সেই ভূবনে যেখানে তুমি আমি আর আমাদের
ভালবাসার স্বপ্ন থাকে চাঁদের মত জেগে।
মনে পড়ে নীল?
তোমার ছোট ভুলে আজ হরিহর নদের এপারে আমি ওপারে তুমি
মাঝখানে তের বছরে বিষক্ত স্মৃতির জল রশ্মি খেলা করে।
মনে পড়ে, শরত এলে স্মৃতির এ্যালবাম হৃদয় জুড়ে
বিষক্ত বীজ নিয়ে খেলা করে ফাগুনের বাতাসে।