রক্ত পিপাসু মানব
হে রক্ত পিপাসু মানব তুমি কি করে রক্ত চুষ!
দানবের মত জুলুম করে সম্পদশালী হও,
অন্যের ধনে লোভী সেজে ঘায়েল করে যাও?
জুলুম, নির্যাতন, অবিচার করে লুণ্ঠন করেছ সব
মনুষ্যত্ব বিনষ্ট করেছো নেই কি অনুভব?
তুমিও তো অন্যের মতই মানুষ, হুঁশ কি আছে?
সমাজে ভালো মানুষ সেজে জুলুম কর!
মনে হয় যেনো তোমার হৃদয়ে ভালোবাসা ভরা?
আসলে তুমি মুখশ ধারি টপটেরর সন্ত্রাসী
এাসের রাজত্ব কায়েম করে করেছো বেআইনি,
বিবেককে বিক্রি করে মনের অভিলাষে
স্তুপে-স্তূপে পাহাড় করেছো, টেনেছ সম্পদের দেয়াল।
হে রক্ত পিপাসু মানব তোমার রাজত্ব চলবে কত কাল?
কত আর চুষিবে নিরীহ, নিরপরাধ মানুষের রক্ত
তুমি কি জান! জীবনের রং বদলায়, সময় বদলায়
নিস্তেজ হবে মোটা তাজা তোমার এই বিশাল দেহ!
সেই দিন আর দূরে নয়, খতম কারি আছে শিয়রে
হে রক্ত পিপাসু মানব তুমি আর কত রক্ত চুষিবে ধরায়?
সম্ভ্রম বাঁচাতে তুলো হুংকার
আলোর বিছানায় আলো খোঁজে গায়
আলো ঢালিয়া দিয়াছি তোমার সর্ষা মাখা পায়
আমি প্রকৃতি, আমি আদি সৃষ্টি মানব
তুমি অন্ধকারে চন্দ্রাবতী দুগ্ধ চুষিবে মহা দানব।
হে রমণী দু'হাতে মারিয়া বজেপ্রেম জঞ্জাল
দ্রোহীর তীব্র হুংকার জ্বালিয়া আগুন বহিবা চঞ্চল
তোমায় তুমি বাঁচিয়া রাখিবে করে স্বচ্ছল
দুর্বাসারের বক্ষ পুড়াইয়া নিজেরে করিবে উজ্জ্বল।
নরপশু নরক জ্বালাবে তোমার গায়ে
সম্ভ্রম লুটিয়া তোমার আলো, নরক ঢালিবে পায়ে
নিজেরে ঢাকিয়া শির তুলে যুদ্ধ কর
বিদ্রোহ কর নরপশুর রুহে, জ্বালিয়ে আগুন হুংকার।
যেখানে বাঁধিবে পায়ে দানবের শিকল
নিজেরে করিবে শিকলের মত দানবের বাঁধিবে বল
রূপসজ্জা ঢাকিয়া রাখিবে দেখিবেনা
নরপশু লালশা ঝরাইবে, রুদ্ধ ঘরে রবে কানা।
রমণী তুমি নিজেরে লয়ে হও শক্ত
নিজেরে সাজাবে নতুন করে ঢাকিয়া আলো তক্ত
নর দানবের মুখেতে থুথু ছিটাইবে
সম্ভ্রম বাঁচাতে শক্ত রবে, শরীর ঢাকিবে ভবে।
অত্যাচারীও এক দিন
অত্যাচারীও এক দিন হাঁপিয়ে যায়
সত্যের কাগজে মিথ্যের আঁকিঝুঁকি
লিখেছে পিচাশ রক্তের পান্ডুলিপি।
অত্যাচারীও এক দিন ক্ষমতা হারায়
কোন্ এক অত্যাচারীর খুন হাতে
রাজত্ব কুকিলের মত অন্য ঘরে ভয়।
অত্যাচারীও এক দিন চুপ থাকিবে
আনমনে, নীরবে অতীত নিয়ে ভাবে
অপকর্মের প্রতিচ্ছবি আনায় দেখে।
অত্যাচারীও এক দিন রক্ত তৃষ্ণা ভুলে
মৃত্যু গামীর থেকে পানি চাইবে
চোখের জল বৃষ্টির মত ঝরে পড়ে।
অত্যাচারীও এক দিন সামলে নিবে
নারীর শরীরের আকর্ষণ থেকে
ধর্ষণের কালো হাত ফিরিয়ে যাবে।
অত্যাচারীও এক দিন ভালোবাসিবে
মা মা বলে চিৎকার করিবে নীরবে
জড়িয়ে ধূলিমাখা নিঃস্বার্থ কবরে।
অত্যাচারীও এক দিন কাঁদিবে চিৎকারে
অতীতের ভুল কল্পনা করে
শত শত ঘরে দহনের কারবারি নিজে।
অত্যাচারীও এক দিন ভয়ে থাকিবে
মৃত্যুর কাছে; ঘুমায় না চোখ ভুজে
যম মাংসের ঝুড়িতে মুখ লুকিয়ে রবে।
অত্যাচারীও এক দিন লাশ হবে
নিজের কবর দেখে আঁতকে উঠে
মনে ভয় নিয়ে ঘুরে আজ নীরবে।
অত্যাচারীও এক দিন ভুল বুঝিবে
ক্ষমা চাইবে ঈশ্বরের কাছে, মাথা নুয়ে;
দুনিয়ার ক্ষমতা রসালো ভয় মৃত্যুতে।
মৃত্যুর দোয়ারে স্বাধীনতা
জয় জয় জয়ের ধ্বনি শুনেছিলাম একাত্তরে
স্বাধীন বাংলা শোষকের হাতে
শাসক হয় অন্ধজীবি, নাগরিক মরে ভাতে।
স্বাবধীন দেশে স্বাধীনতার হাত—পা বাঁধা
বাকরুদ্ধ সত্য মানুষ, মিথ্যের কাব্য লেখা
নাগরিক আজ ঘরের গোয়াল, শিক্ষিত গাধা।
নাগরিকের চাল চুরি করে প্রশাসনের আমলা
মাথার ঘাম ভাতে পড়া সে হয় কামলা।
শাসকের তিনশত মুখ হা করে আছে
কি খাবে, কাকে খাবে, নাকি সারা দেশ খাবে?
দেশটাকে গিলে খাবে?
নাগরিকের মল খাবে, স্বাধীনতা মেরে দিবে
নাগরিক কেঁদে মরে ঘামে মিশ্রিত ভাত খাবে
শোষকেরা দেশপ্রেম মেরে যাবে।
স্বাধীন দেশে স্বাধীন ভাবে মারছে কত মানুষ
মানুষের আত্মা উড়ে বেড়ায় আগুন জ্বলা ফানুস
একাত্তরের স্বাধীনতায় দিলো যারা প্রাণ
শোষকের হাতে মানুষ মরে, গায় জয় জয় গান।
নরপশুর গন্ধ
নরপশুর গন্ধ বাতাসে বেসে আসে
নারীর দেহে; ভয়, আতংক দাগ কাটে
কত শত ফুল ঝরে পড়ে_ অকালে
বছরের পর বছর।
বাঙালী হয়ে বাঙলার বুকে
বোনের ইজ্জত নিয়ে করে খেলা
ছিঃ ছিঃ আমরা নাকি বাঙালী
তোরা মানুষ নহে, তোরা কে_ ঘৃন্না হয়
আবার তোরাই স্বাধীন বাঙালী!
ধর্ষিতা মায়ের চিৎকার শুনে কেউ আসেনি
সারা রাত রক্ত চুষে চুষে বাংলা কলঙ্কিনি
মায়ে সারা রাত চিৎকার করে বলেছিলো
তোরা আমাকে ধর্ষিতা করিসনা
আমার ছেলেরা আমাকে মা বলে ডাকবে না।
এমন দৃশ্য একাত্তর দেখেছিলো
আজ স্বাধীন দেশে ধর্ষণ_ঘৃন্না হয়
হে আমার মা-বোন তোমাদের বিচার কে করবে?
আমরা যে বরবর, হিংস্র নরপশুর ভয়।
স্বাধীনতা আজ নরপশুদের ধর্ষণের কাছে
স্বাধীনতা আজ মা-বোনের ইজ্জত নিয়ে করে খেলা
স্বাধীনতা আজ ধর্ষকের মন গড়া ইচ্ছা
এ কেমন স্বাধীনতা_ভয় হয় বেলা-অবেলা।
মা-বোনের কাপড়ে নোংরামি কত আর
প্রতিবাদ প্রতিবাদ, জেগে উঠো সত্য হুংকার।
মহানগরীর ফুটপাত
মহানগরীর যান্ত্রিক কোলাহলে
ছোট্ট ছেলেটির ইতিহাস–ফুটপাত জানে;
না খাওয়া কত রাত, ভাত জানে,
করুণ চোখ দেখেনা কেউ, কান্নার জলে।
ময়লা টিশার্ট, শরীরের গন্ধ, কে জানে?
কত রাত ঘুমায়নি,অন্ধকারে।
কুকুরের সাথে বন্ধু করেছে, ফুটপাত,ডাস্টবিনে
কেউ দেখেনা, কেউ শুনে না
চিৎকার যেন বোবা কান্না,
ধূলো জমা চোখ,জীবনের হিসাব গুণে।
খোলা জানালা, বদ্ধ দুয়ার,
না দেখা সুখ, অসুখের বেজা রুমালে নাক।
ফুটপাতে বেড়ে উঠা ছোট্ট ছেলেটিও মানুষ;
সে হেসে–হেসে কাঁদে, দুঃখেরে করে সাদর
কে বুঝে তার আত্মবিলাপ–নয়নে মাখানো আদর,
কে জানে তার রং, ভিতরে উড়ানো ফানুস।
মানুষ আর মানুষ রইল না
জিহ্বায় লেগে আছে রক্ত, পুঁজ আর মল
হিংস্র অমানুষ গুলো লালা ঝরাচ্ছে
পবিত্র মাটিতে আর পবিত্র আত্মায়,
মুখোশের ভিতর থেকে বিমর্ষ দাঁতে
মাংস আর পুঁজ খাবে_
দুর্নীতি আর ডাকাতি আর চুরি অমানুষদের হাতে।
নারীর শরীর নিয়ে ধর্ষকের টানাটানি
একটা ধর্ষকেরও ফাঁসি হয়নি
কেনো?
তারা কাদের হাতে হাত আর লিঙ্গ রেখেছে।
অসহায়ের ভাতে রক্ত, শরীরে রক্ত নেই
সব রক্ত চুষে আর মাংস খুবলে খুবলে খাবে শুকুনেরা
শুকুনেরা আর কুত্তা কেউ উপরে আর কেউ নিচে
রাজত্ব করছে সাধারণ মানুষের উপর।
ধর্মকে নষ্ট করছে এক দল ধর্ম ব্যবসায়ি
কত যে নারীর ইজ্জত লুট করেছে
পাঞ্জাবি টুপি পড়া মুখোশধারী শয়তান
ওরা ধর্ম বুঝেনা, শরীর আর তৃপ্তি বুঝে।
প্রকাশ্যে খুন, ধর্ষণ, লুট অহরহ ঘটছে
কেনো?
খবর দেখতে আর মন চায়না মৃত্যুর খবর
তারা কাদের হাতে হাত আর লিঙ্গ রেখেছে।
অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই
ধূলিমাখা হাতটি দেখে খুব মায়া হয়
মন চায় বুকে জড়িয়ে রাখি সবসময়।
ধূলিমাখা গায়ে যখন সামনে এসে বলে
ভাইয়া দুইটা টাকা দিবেন ভাত খাব
তখন বিবেকের বড় মাথাটা নেড়ে
ইঙিত করে বলি যাও অন্য কোথাও
কারন আমার পকেটও ফাঁকা–প্রতিদিনের মত।
আমিও তোমাদের মত সাহায্য চাই
আমাকেও ফিরিয়ে দেয় সবাই
তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও
আমি শিকল বাধা ভিক্ষুক,
আমি চাইলে রাস্তায় হাত পাততে পারিনা
কারন আমি যে অভিশপ্ত শিক্ষিত
বেকার নামক বেড়াজালে আটকে আছি।
তোমাদের অসাভাবিক শরীর দেখে কষ্ট হয়
অজান্তেই চোখের কোনে জল এসে যায়।
আমারও মন চায় তোমাদের সাহায্য করি
কিন্তু আমিও যে তোমাদের মত সাহায্য চাই
বেকারত্বের ভেড়া জাল থেকে মুক্তি চেয়ে
আমাকে মুক্তি দেও,
পথ শিশুদের জন্য কিছু করতে দাও,
আমার সবটুকু দিয়ে ওদের মাঝে থাকতে চাই
ভালোবাসা দিয়ে, ভালোবাসা পেয়ে সারা জীবন।
শিক্ষিত চাই শিক্ষিত, শিক্ষিত জাতি চাই
উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত,নির্মবিত্ত চাই না
চাই সাম্য, সবার মুখে ভাত, আশির্বাদ।
পথ শিশুর চোখে চাই স্বপ্ন, আলো
হাত পাতার অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই।
হাসি চাই, ভালোবাসা চাই, মায়া চাই
সবার চোখে–মুখে,
হাত পাতা থেকে মুক্তি চাই।
রক্ত বেচে ভাত খাব
রক্ত বেচে কি তিন বেলার ভাত জুটবে?
রক্ত শুকিয়ে গেলে কি জীবন বাঁচবে?
পানির অভাবে রক্তের দাম খুবি সস্তা,
কত ব্যাগ লাগবে ঘামে মিশ্রিত রক্ত?
আমাকে শুধু ভাত ভিক্ষে দেও,
আমি রক্তের ক্যানভাস এঁকে দিব, বাংলার বুকে।
কত রক্ত চাই তোমাদের?
আমি দিব শুধু আমাকে ভাত ভিক্ষা দেও।
বুকের তাজা রক্ত চুষে নেও, ভয় নেই,
আমার শরীরে ক্যান্সার নেই,
আমি খেঁটে খাওয়া মানুষ, হারাম খোর নহে।
হয়তো ভিক্ষার হাত লজ্জায়
লাল রক্তে পরাজয়ের দাগ কেটে আছে,
তবুও আমি সত্যের পূজারী,
রক্ত বেচে কি তিন বেলার ভাত জুটবে?
যদিও আমি নর্দমার পোকাদের আবিস্কারক,
নর্দমার পোকাদের নিয়ে বহু সুত্র আবিস্কার করেছি,
তবুও আমি অপ্রকাশ্য বিজ্ঞানী।
কারণ আমার বাস নর্দমার পাড়েই?
আমি পানির স্বাদ বুঝি, রক্তের চেয়ে দামি,
তাইতো আমি রক্ত বিক্রি করে দিব,
তবে কি তিন বেলার ভাত জুটবে?
কুকুরের সাথে শুয়ে গল্প করতে করতে,
অনেক কিছু জানলাম,
সত্যি কুকুরের সাথে মানুষের তুলনা করাটা ভ্রান্তি,
কারণ মানুষের থেকে কুকুর বেশি নির্দোষ,
কুকুরের কোন হিংসা নেই, অহংকার নেই,
যত সব মানুষের মাঝে, মানুষের রক্তে।
আমি রক্ত বেচেক দিব,
তবে কি তিন বেলার ভাত জুটবে?
মানবতা তুমি শ্বেতশার্দূল
মানবতা তুমি শ্বেতশার্দূল; পাহাড়, বন
সুন্দরী জঙ্গলে তোমার পদার্পণ
তোমাকে দেখা বড় কষ্ট সাধ্য
তুমি দানবতার মুঠোয় অবাধ্য।
তুমি মানবতা, তুমি সত্য মানবের হুংকার
দানবতার মুঠোয় মানবতার আর্তনাদ
খোঁজে কাঁতর মায়াবী আঁখর
জল মাখা চোখ কাতরায় হয়ে উন্মাদ।
তুমি শ্বেতশার্দূলের মত কত রঙের?
কখনও সুখ কখনও দুঃখ কখনও জঞ্জাল
মনের অজান্তে উড়ে যাও নীলাচল
কখনও গাংচিলও ভয়ংকর রঙ দেখায়।
মানবতা তুমি যখন শ্বেতশার্দূল অন্ধ চোখে
অন্ধের হাত ধরে এগিয়ে যাও
বন্ধী হও দানবের রক্ত মাখা মুঠোয়
তখন মনুষ্যত্ব শুঁকুনের পিঠে ভর করে।
মানবতা-দানবতার মুঠোয় শুধু কাঁদে
তুমি মানবতা শ্বেতশার্দূলের মত
কখনও এই শহরে কখনও অন্য শহরে
খোঁজে মমতা খোঁজে হারানো ভালোবাসা।
দেশের আজ একি হাল
দেশের আজ এ কি হাল
মানুষ মারে কুলাঙ্গার
ধর্মে যারা কটূক্তি কর
পুলিশ আজ তাদের দল।
মুসলিম দেশে মুসলিম মারে
নাস্তিক রয়েছে বেঁচে
মুসলিমের গায়ে গুলি মারে
মনুষ্যত্ব দিয়েছে বেচে।
জিহাদের ঘোষণা দিয়েছি আজ
ইসলামের হবে জয়
নাস্তিক কুলাঙ্গার মেরে ফেল সব
বুকের রক্ত কবিবো ক্ষয়।
বাংলার বুকে থাকিবে না নাস্তিক
কাউকে করিনা ভয়
আল্লা ছাড়া ভয় কিসে আর
ইসলামের হবে জয়।
শুধু ভোলাতে আজ জাগলে হবে না
জাগতে হবে সারা দেশ
ইসলামের জন্য জিহাদ করিবো
বাঁধা দিবে যে সে শেষ।
আল্লাহ ছাড়া কে আর আছে
এই পৃথিবীর শাসক
আল্লাহর পথে জিহাদ করিবো
মারবো সকল শোসক।
মানুষের গর্ভে পশুর জন্ম
মানুষ সবাই কেমন জানি নষ্ট হয়ে যায়
নষ্ট পথে চলছে ঠেলে, মনুষ্যত্ব গিলে খায়
রক্ত দিয়ে নেশা করে, মানুষ মারে হায়
দিনে দিনে পশুর স্বভাব মাখে হৃদয় গায়।
মানুষের গর্ভে মানুষের জন্ম, মানুষ হয় পশু
সে মানুষপশু মানুষ মারে, মারে অবুঝ শিশু
পাপের বীর্যে জন্ম নেওয়া, সে নয়তো পাপি
জন্ম দেওয়া মানুষ সে যে বেড়ায় সমাজ দাপি।
অত্যাচারীর মানুষ গুলো মানুষ নাহি হয়
মানুষপশু জুলুমকারীর মুখে বড্ড ভয়
রক্ত পিসাচ মানুষ রুপি জোঁকের সাম্য হয়
সমাজ রাষ্ট্র তিলে তিলে ধ্বংস করে ক্ষয়।
বদ্দর পোশাক মুখোশ পড়া পাপের গন্ধ গায়
কালো টাকার রাজপ্রাসাদে ঘু—গোবর খায়
মানুষ মারার টিকেট তারা নিয়েছে আজ হাতে
আজরাইলের সাথে সন্ধি করে মানুষ মারে ভাতে।
ঘুষখোর, সুদখোর, জুলুমকারীর মেলা
বাংলার বুকে অমানুষ তারা করে কুত্তার খেলা
বেলা অবেলায় মানুষ মারে, কামড়ে খায় মাংস
টাকার নেশায় কত পরিবার করেছে তারা ধ্বংস।
মানবতা আজ কোথায়
মানুষ গুলো কেমন করে মানুষ মারে হায়
বিবেক, বুদ্ধি, মানবতা মৃত্তিকাতে লুকায়।
নিষ্ঠুরতা বাড়ছে দিনে, কাড়ছে আপন মন
ভালোবাসা নাইতো মনে, নিষ্ঠুরতার প্রাণ।
মানুষ গুলো কেমন জানি নিচ্ছে শুধু জান
নিজের জানের মায়া খুঁজে গাইছে মিথ্যে গান।
মান নাহি তার মানের খোঁজে, অট্টহাসি মুখে
চোখ রাঙিয়ে কথা বলে মানুষের করুণ দুঃখে।
মানুষ নাকি শ্রেষ্ঠ প্রাণী-প্রাণ থাকিলে নয়?
মানবতা কোথায় গেলো, মানুষ কুলে ভয়।
দিনে দিনে মানুষ সবাই মানুষ নয়তো হয়
মানুষের মনে ভালোবাসা তিলে তিলে ক্ষয়।
কত মানুষ কথা বলে বিবেক বুদ্ধি ভুলে
মান নাহি তার মানের কথা নিজে শুধু বলে।
হাজার হাজার মানুষ কাঁদে, আপন মানুষ মরে
অমানুষ গুলো হাসছে কেমন, মানবতা ছেড়ে।
মানবতা কার মানুষ নাকি পশু–পাখির?
মানুষ সবাই মানুষ হয় না, মানবতার ঘুড়ি।
মানবতা ঘুরছে দেখ, উড়ছে মিথ্যে পাতা
মানুষ কারা সত্য মানুষ, ধরবে মানবতা?
ভাই, ওরা মানুষ নহে!
ভাই,
ওরা মানুষ নহে!
রক্ত চাহে আমার কাছে
না হয় জীবন মিলিয়ে দিবে-গ্রহে!
ভাই, দ্রোহে দেহে জ্বলছে আগুন
হাকিয়ে আয়াজ উঠছে_
ভাইরে, থাম!
ওরা রক্ত নিবে?
যম!
আমরা সত্য মন্তর জানি
জ্বালিয়ে দিব সব।
থমথমে রথ অক্ত ভক্তি
জোরসে ঠেলে-ল শক্তি!
ভাইরে সত্য ভক্তি জয়
নাই ভয়, নাই ভয়।
ভাই,
ওরা সম্পদ চাহে
মায়ের দেওয়া আদর
বাবার মাঠের ফসল,
ওরা মানুষ নহে!
থাম; আসতে-দে, ভাই,
রক্তের খেলা হবে নাকো
মনের খেলা হবে-দেখ
চক্ষু চেয়ে ভীতু ওরা ভাই
আয়াজ তুলে মুখে হাঁই।
ভাই; ভয়ে ওরা চক্ষু ভুজে_
রক্ত চাহে,
উঠান বরা ধান,
ভাই, ওরা মানুষ নহে!
ভাই, থাম
শক্ত হাতে কর্ণদ্বয়ে দেই দামদাম
মুখ ঘুরিয়ে ভয়ে ঘাম!
ওরা বাহু দেখে নরম জনে-ধর,
দুর্বল হাতে রক্ত চাহে-ভর,
কত জনের রক্ত নিবে-চুষ
হিংস্র দাঁতে, পশুর সাথে-হুঁশ।
অঙ্গ দাহে মানুষ বেচে
নাহি রস বোধে, নিজে বেঁচে।
ভাই, ওরা মানুষ নহে !
ভাই থাম;
ওরা ভিক্ষা বহে।
ওরা মায়ের চোখে চায় লাল চোখে
চক্ষু দু'টু উঠিয়ে-নে, লাথি-দে মুখে।
ওরা নাকি বৃক্ষ চাহে?
মাটির রসও চুষে দেহে
ওরা রাক্ষস, রক্ত চাহে বঙ্গ মাতার
থুবড়ে-দে মাথার খুলী-ধর,
চামড়া উঠে রোদ্র দিব-ঘর।
ভাই, ওরা রক্ত চাহে!
ভাই, থাম_
মৃত্যু ওদের বহে।
শক্ত হাতে চড় মেরে-দে
লালে-লাল গাল করে-দে
ভয়ে সব পায়ের তলে
আসবে ছুটে দলে-দলে।
সব ভিতুর দল
ভাই, সাব্বাস সাব্বাস
বরবাদ-বরবাদ
ভাই, সাব্বাস সাব্বাস।
সংঘাত
এখানে ওখানে দলাদলি, বলাবলি
গিবতে কলাকলি, যে যার পিছে চলাচলি।
জায়গা নিয়ে মারামারি, দরাদরি
টাকা নিয়ে জোরাজোরি, কাড়াকাড়ি।
জোরদারের বারাবারি, পারাপারি
দুর্বলের কাঁদাকাঁদি, গড়াগড়ি।
এখানে-ওখানে সত্য মানুষ চোখের বালি
মিথ্যে মানুষের গলাগলি-দালাদলি।
মানুষের ঘরে মানুষ করে মারামারি
সত্য মানুষ আলো নিয়ে করে সত্যজারি।
অমানুষ-মানুষের মত সব খানে ছড়াছড়ি
মানুষের সাথে অমানুষের দলাদলি-জড়াজড়ি।
এপাড়ে দু'দিন ওপাড়ে জনম-জনম চলি
কি কার, কে কার, জীবন ভাণ্ড খালি?
কোন গলি চলি, হায়-হায় মরি-মরি?
দুনিয়া গুনিয়া, কত দিন বাঁচি-ঘড়ি।
দু'চোখে আলো, মনে শুধু কালো
দু'চোখ নিবে যাবে, পরকালে চলো।
হারাম খোর
টাকার সাথে বাসর দিলি, কত রাত সুখে ছিলি?
আজতো মুখে আহার নাহি, দু'হাত খালি?
মানুষের মুখে, মানুষের চোখে রুক্ষ চাহনি
রক্ত চুষে-চুষে, গরিবের চোখে দিলি কত দাহনি?
ঘুষের হাতে ভিক্ষা চাইলি, হারাম খেয়ে-খেয়ে
শরীরের ভিতর রক্ত ক্ষয়ে, রক্ত চলে ভয়ে-ভয়ে।
তুই মানুষ বলে চিৎকার করিস মানুষ নহে তুই
তুই শত জনমের তৃষ্ণা লয়ে, থাকিস কোথায় শুই।
তুই মানুষদ্বের রক্ত চুষে, রুক্ষ মুখের ভয়
তোর শরীরে পাপের আগুন জ্বলছে দ্বয়-দ্বয়।
তোর দেহেতে রক্ত চলে, অন্য মানুষ খেয়ে
টাকার লোভে সত্য শরীর তীলে-তীলে ক্ষয়ে।
সরল মানুষ তোর কাছেতে শিক্ষা নিতে আসে
তুই উল্টো পথে চলার কথা বলিস রাশে-রাশে।
তুই ঘুষের বাটি সামনে রেখে-ভিক্ষা চেয়ে-চেয়ে
টাকার পাহাড় গড়িস বসে, হারাম খেয়ে-খেয়ে।
তুই ঘুষ মাস্টার, জুলুমকারী, মিথ্যেবাদী তুই
তুই অন্যের পাতে হাত বাড়িয়ে আহার কাড়িস ছুঁই।
আগুনের পরশমণী
দাউ দাউ করে জ্বলিছে আগুন
দুঃখির রুদ্ধ মনে
দুঃখির তরে সুখ নাহি আজ
দুঃখিরা দুঃখ গুনে।
এক ঘরেতে পুষ্প ফুটিয়াছে
সুখের আবাস মনে
আরেক ঘরে জ্বলিতেছে আগুন
কেউ নাহি শব্দ শুনে।
কারো আগুনে, কেউ উষ্ণ খোঁজে
জ্বলেপুড়ে যায় দেহে
হাসিতেছে কেউ সুখের জলে
আসিবে না কেউ চাহে।
দুঃখির ঘরেতে চাহে না কেউ
স্বচ্ছ চোখ পেতে
দূর থেকে হাসিতেছে তাহারা
রবে আনন্দে মেতে।
দাউ দাউ করে জ্বলিছে আগুন
দুঃখির রুদ্ধ ঘরে
সুখেরা কেউ চাহিবে না ফিরে
জ্বলেপুড়ে যাক মরে।
এই ভবেতে আজব খেলা
খেলে সকল মানুষ
কেউ হাসিতেছে আকাশ উঠে
উড়ায় রঙিন ফানুস।
অন্ধ চোখে দেখিবে না কেউ
অর্থের বেড়াজালে
কারো ঘরে বেড়া নাহি সুখ
খাবার পেট জ্বলে।
সুখের মাঝে হাসিবে জীবন
রবে কত সুখ ঘরে
সবার তরে আসিবে না সুখ
যে দিন যাবে মরে।
আগুনে জ্বলার মানুষ গুলো
কাঁদিবে কত কাল
মরণ এসে হাসিয়ে দিবে
সুখে রবে পরকাল।
রক্ত চুষা
রক্ত চুষার কালো মানুষ, রক্ত চুষে যায়
রক্ত স্বাদের মানুষ গুলি চিবায়-চিবায় খায়।
যেমন-তেমন রক্ত চুষে, রক্ত শুধু চায়
গরিব দুঃখীর রক্ত চুষে, কিমজাটা পায়?
জুলুম, অবিচার, দুর্নীতি, কালো টাকা খায়
রক্ত চুষা, রক্ত চুষে, গরিব-দুঃখীর হায়?
ঘামের শরীর রিক্সা চালায়, সত্যের আশায়
কালো টাকার ভক্ত যারা, ঘুমায় রক্তের ছায়ায়।
কালো টাকার মুখোশধারী রক্ত চুষে যায়
সত্য মানুষ না খেয়ে সব, মরার চোখে চায়।
ডাল-ভাতেতে জীবন কাটে, চাকরি নাহি পায়
তাদের সাথে দুর্নীতিতে হাড় চিবে খায়।
আশা-আশা ভালোবাসা একটু খানি চায়
রক্ত চুষা, কালো টাকা সত্য মানুষ খায়।
টাকার লোভে মানুষ যখন হিংস্র হয়ে যায়
ভালোবাসা, সত্য-সাচা মৃত্তিকাতে লুকায়।
বস্তির ছেলে
বস্তির ছেলেটি না খেয়ে বেড়িয়ে পরেছে
জীবিকার আশায়,
দুপুরের খাবার খায়নি
রাতেও করেছে উপোস,
কেহ নেয়না খবর
কেহ দেয়না খবর
মা কোথায়?
ঘুমন্ত শহরে, নির্ঘুম রাত কাটে
স্বপ্নরা আসেনা ভয়ে
হাসে না সে হাসে না।
আলো নেই, ঘর নেই
পরাজয় নেই, ভয় নেই
আপন করে নিবে কে?
মাও যে নেই_
খোলা আকাশে চেয়ে থাকে-দুর্লভ চোখে
মুখে খাবার নেই, আদর নেই দুঃখে।
সুখ কাঁদে নর্দমার পানির স্রোতে
বস্তির উল্টো দিকের আকাশ ভার হয়ে আছে
তিন দিক চুপ, বিষণ অভিমানে
আকাশে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে
ভালবাসা দিবে চাঁদ-বাতাসে মিশে
চাঁদ দূর থেকে ডাকে,
বস্তির ছেলেটি হাসতে হাসতে
জীবনের উল্টো দিকে পা রাখলো,
সে জানতো মানবতার দ্বারে, জল্লাদের আনাগোনা,
তবুও সে যুদ্ধ করেছে, নিজের মনুষ্যত্বের সাথে।
সমাজের উচ্চ আঁখি
উচ্চ বলে তুই, আঁখি উচ্চ আকাশে?
বাহু আছে বলে; বল, টাকা পুষে।
মাটিতে পিশে মানুষ তুচ্ছ করে
গরিব–দুঃখী কি মানুষ নয়রে?
সুদ দিয়ে, ঘোষ, হারাম খেয়ে
মাটির দেহে কালো রক্ত বহে
মানুষের মাংস মানুষে খেয়ে
আবার বলিস তুই মানুষ হে?
মৃত্তিকার ভেতর থেকে আকাশ ডুসে
কার পিছে ছুটে, কার জীবন পিশে
খিদে তোর সারা বিশ্ব জুড়ে?
নিজের জীবন নিজে তিলে তিলে পুড়ে।
আয়নাতে দেখ তোর মুখখানি
মুখ দেখে ভাবিস না, আলোর ঝলমলানি।
ভয়ে ফেরাবি মুখ, দেখে চরিত্র কালি
ভেতরে আত্মা করে শয়তানি, তোর চক্ষুবালি?
সভ্য শহরের এপিট ওপিট
রাজধানী ‘চার’ দিকে আলোর ঝলমলানি
ভিতরে কোলাহল, অবাক বাণী,
চোখ ভুজে চোখ মেলে,
কালো টাকা, সাদা টাকা
গরীবের পেটে লাথি, বড় লোকে করে মদ-মাস্তি।
অর্থ হীন ধনী রাস্তায় করে বাস
নেই বড়-বড় বাড়ি,
গাড়ি তো স্বপ্ন হীন,
মুখে অন্ন নেই—ক্ষেত?
তো আমি বাংলার।
ছন্দ হীন বাস্তবতা
আমি শহুরে কবি 'টোকাই'
আমার কবিতা গুলি, তৃষ্ণায় মরুভূমি,
চার দিকে চেয়ে দেখি, আমি একাই,
আমার বাক্য গুলি করে মিথ্যে জয়ের ধ্বনি,
তবে কি সত্য এমনি?
মিথ্যে সব চেয়ে দামি?
আমি শহরের আঁকা ডাসবিন
বড় লোকের ফেলে দেওয়া ময়লা?
সোনার শহরে কাঁড়ি–কাঁড়ি টাকা
টাকা ছাড়া চলে না পা_
পয়সা তো হাতের ময়লা,
ডাসবিনে ফেলে দেওয়া,
আমার মত তুচ্ছ পোলা।
এ শহরে টাকা ছাড়া চলে না গাড়ির চাকা
প্রেমেও হয় চলনা!
শহরের মানুষ গুলি একটু ভিন্ন
নিজেরে নিয়ে চলে কল্পনা
আশেপাশের মানুষ গুলি হোক লাঞ্ছনা!
কার কি আসে যায়?
না খেয়ে মরে যাক
সভ্য সমাজের টোকাই পোলা।
এটাই রাজধানী
কংকিটে ঘেরা হৃদয়বখানি।
শহরের অলিগলি, অসহায় হাত খাদ্য খোঁজে
চোখের জলে কত আর দুঃখ ভুলা যায়,
কার দোষে, ভিক্ষার হাত, চোখ ভুজে?
ঘর নাহি আবার খাস জাড়ি,
অসহায় হাত দেখে, বড় লোকের ঘাড় ঘুরি,
ময়লা ঝুড়িতে ছোট্ট দেহ,
জারজ সন্তান, কে খবর রাখে?
যার শ্রমে গড়া অন্ন–পণ্য
সে আবার জঘন্য–নগণ্য।
কার পিঠে পাড়া, কে উচ্চবিলাসী,
যতই আকাশ ঢুসি,
মাটিতেই খাট, কবর খাঁটি_
বাস তোমার সেই ভাবনার ‘নগন্যের’ সারি!
আজ চোখে আলো, আজই কালো,
কিসের আশায়, টাকার নেশায়?
কার পিছে ছুটে, কার মান লুটে,
নাকি নিজের পাপের ওজন নিয়েছ মেপে
খারাপ-ভালোর পাল্লা সমানে?
তবে এপৃট ওপিট কর এক পিটে।
অন্ধ
আমি চোখ ভুজে কত থাকি
আমি চোখ মেলে কত দেখি
অসহায়ের কান্না!
আমি ঝাল চোখে কত রাগি
আমি হিংসা নিয়ে কত চাহি
আমিও কি অসহায়?
আমি রাত ভয়ে_কত জাগি
আমি ঘুম চোখে অন্ধ থাকি
আমি কি অন্ধ?
আমি কি দেখিনা অসহায় মুখ গুলি?
না খেয়ে, না ঘুমে, শীত মেখে গায়ে
রাতের পর রাত কাটিয়ে দেয়_
আমি কি দেখিনা, দেখি না,
আমি কি অন্ধ?
ফুটপাতে শুয়ে আছে থেতলানো শরীর নিয়ে
আধমরা হয়ে, নিরবতার হাত ধরে_
ওদের' আমি দেখি না, দেখি না,
আমি যে অন্ধ?
উদাম গায়ে শীরের লোমশের গোড়ায়-গোড়ায়_
করুণ চিৎকার, আমি যে শুনি না,
প্রতিটা ধূলিমাখা চুলের আর্তনাদ-মরা
আমি যে কানে শুনি না?
আমি-অন্ধ, চোখ মেলে কিছুই দেখি না
কারণ, আমি যে চোখ মেলে আছি,
মন অন্ধ হয়ে বাঁচি_
আমি আজও অন্ধ? অন্ধ অন্ধ অন্ধ!
প্রতিচ্ছবি
নর্দমার পোকারা আমার গবেষণার প্রথম আবিষ্কার
তাহাদের আর্ত চিৎকার কানে এসে লাগে,
যাতনার বাক্য দমকা হাওয়ায় উড়ে বহু যোগে যোগে।
তাঁহাদের চোখের জল সাদা বলে
রক্তের কোন দাম নেই, তুচ্ছ ময়লার কোলে।
আমাদের বর্যে যাঁহাদের জন্ম
তাহাদের করি ঘৃণা, ছিঃ ছিঃ?
ভাবতেই লজ্জা লাগে আমারা নাকি মানুষ?
জন্মের স্বাদ ভুলে যাই, আনমনে অজন্ম।
আমাদের প্রাণ উড়ে মাছ মারা চিলের মত!
শুঁকুনের ভাবনা প্রাণি মরার ইচ্ছে যত।
নর্দমার পোকারা যতই চিৎকার করে
তাঁহাদের চিৎকার নর্দমার পাড়েই গড়াগড়ি করে।
ক্লান্তি শেষে চোখ বুজে মাটির সাথে মিশে যায়!
তাঁহারাই আমাদের প্রতিচ্ছবি, দেখ খুলে আঁখি_
কান পেতে শোনো দূর থেকে কে যেন ডাকে,
আমার-তোমার প্রতিচ্ছবি,আড়ালে অন্ধকার,নেই আঁখি?
বিচার নাই
হাঙ্গামা দাঙ্গামা
বঙ্গে ভাঙ্গামা
কার হাতে ক্ষমতা
দেশ কার উপমা?
টাকা কার কত বেশি
রক্তের স্বাদ বেশি
টাকা চোরের মান বেশি
সৎ লোকের হয় ফাঁসি।
হরতাল মারামারি
রাস্তায় লাশ সারি
শুঁকুনের দল ভারি
রক্ত চুষা কারবারি
ক্ষমতার বারাবারি
মাতাব্বরের দল চুরি
গরীবের গম চুরি
রাগ চোখে সিনাজুরি।
চার দিকে এত চুরি
নাই বিচার আসল চুরি
কে চোর, কার রশি
বিনা চুরি দেয় ফাঁসি।
এক সন্ধায়
এক সন্ধায় আমি হেঁটে যেতে যেতে
উঁচু নিচু কংক্রিট, কালো অন্ধকার শহরে_
শহর চিৎকার করে বলে থামাও আমাকে থামাও,
নইলে আমার ভিতর থেকে
শত মৃত্যুর যন্ত্রণা খশে পড়বে_
হাসি-খুশি, শান্তনা সব বিলিন হবে।
কালো হাতের থাবা টন টন ওজন
যে থাবা সহ্য করতে পারবে না উড়ন্ত ভ্রমর,
নিষ্পাপ শিশু, ঘর হারা পক্ষি।
হে কালো হাত_
শিশুর স্বপ্ন গুলো মাটি চাপা দিওনা
দিওনা তাঁহাদের মনে কষ্ট–যাতনা
তাঁহারা নিষ্পাপ, অবুজ ধর্মের সাধনা।
খুঁজে দেখ অন্ধকার শহরের ছবি
চাঁদের আলোতে, শহরের কালো মেঘ গুলি___
ছুটাছুটি করছে, রক্ত চুষার নেশায়'
আর তারা গুলো মিটমিট করে জ্বলছে!
কালো মেঘেরা অন্ধ চোখে বেরিয়ে পড়েছে
অতি শিগ্রী আলো নিবে যাবে,
আর রুক্ষ মানব গুলো নিজের কবর নিজেই কুড়বে
পিপীলিকার মত মাটির ভেতর থাকবে
দেখবে নিজের পাপ, আজ কোথায় লুকাবে?
শুধু মাটি আর মাটি, মাটির গলি।
কোথায়ও অক্সিজেন নেই!
যানজট, যানবাহনের হর্ন
কোথায়ও স্তব্দতার বাজার নেই!
সবাই কেমন আনমরা!
ছুটে চলা শত চরণ, কে কার সর্বনাশা?
দিনে সবার মুখোশ খোলা, বাহিরে উচ্চ মালা
বুঝিবার উপক্রম নেই কে অন্ধকারের তালা।
শহরের আলো গুলো, কালো-অন্ধকার চুষে খাচ্ছে
রুক্ষ মানব গুলো মেঘের বেশে গ্রাস করছে,
শহরের আর্তনাদ, নীরিহ মানুষের জন্য,
শত কষ্ট, লাঞ্ছনা, নিপীড়িত, যাতনা
কোথায় তার শেষ সন্ধ্যা জোনাকির আনাগনা।
ক্ষমতা
এপার ওপার, দুপার কার?
জোরের হাতে দুর্বলের হার
মুখে হাসি, চক্ষু ভারি
অঙ্গভঙ্গি হয় দিশারী
কার পিছে কার নজরদারি
মিথ্যে আশা, সত্যের বাড়ি।
আজ আমার দখল, কালকে কার?
ক্ষমতা আমার, শরীরের বল?
টাকা আছে তো কাকে ডরাই?
মাথা উঁচু, সব বড়াই
ক্ষমতা আমার, টাকা পুষি
গরিব–দুঃখির রক্ত চুষি।
কি আছে মোর সম্ভল, সবি পর
এক দিন আমি ভুলে হয়েছি ইতর
আমার ভিতরে ছিলোনা মনুষত্ব্য
ছিলো অত্যাচার, ক্ষমতার তত্ব্য
আমি ছিলাম মত্ত্ব,
আমি জ্ঞান হীন পশুর সাম্য
আজ আমার বুঝ চক্ষু ভুজে
ক্ষমতার দ্বার মৃত্যু খোঁজে।
কোথায় কার বাড়ি, কোথায় দেয় পাড়ি
দ্বার ছাড়া ঘর, বন্দী জীবন
মরণ এলে কোথায় আসন?
কবর তো দাফন, সমাধি কেবল।
একাই যাবো চলে
ক্ষমতাহীন জগতে
ফিরবো না আর তোমাদের পৃথিবীতে
ক্ষমতার অবসান মরণের কাছে।
ওরাও মানুষ
দুঃখ দেখে-দেখে
সুখ ভুলে গেছে-নিখোঁজ
দুঃখ আসে ফিরে-ফিরে
সুখ কত দূরে।
ওরাও মানুষ-টোকাই
ওরাও হাসতে চায়, ভালোবাসতে চায়
মায়ের কোলে ঘুমাতে চায়
হাসি মুখে ভাত খেতে চায়
ওরাও মানুষ আমাদের মত।
দ্বারে-দ্বারে হাত পাতে ভিক্ষা দে.......
চোখ কাঁদে, অন্তরে অদৃশ্য দুঃখ
টোকাই নামে জীবন্ত দৃশ্য।
কেহ কাছে টানেনা
কেহ আদর করেনা
কেহ চোখ খুলে দেখেনা
কেহ জড়িয়ে ধরেনা
কেহ খবর রাখেনা
কেন ওরাও তো মানুষ আমাদের মত?
গতরে ছেঁড়া শার্ট, না হয় উলঙ্গ গতর
না খেয়ে পড়ে আছে রাস্তার পাথর
ঘুমের ঘর ফুটপাতে কাতর
কেহ খবর রাখেনা-দেখেনা
ওরাও যে মানুষ কেহু বুঝেনা।
ওরাও মানুষ,
যারা বৃষ্টিতে ভিজে রিক্সা চালায় সাহেবের শরীর ঢেকে
যারা ফুটপাতে শররীর ভিজায় আকাশের দিকে চেয়ে।
ওরাও মানুষ,
যারা আকাশ ছোঁয়া দালানেতে ঘুমিয়ে আছে
যারা বাতাসে উড়ায় টাকা, স্বপ্ন সুখে বাঁচে।
ওরাও আমাদের মত স্বপ্ন দেখতে চায়
ওরাও হাসতে চায় মুখে রংধনু মেখে
ওরাও ভালোবাসা চায় ভালোবেসে
ওরাও মানুষ আমাদের মত
তবে কেন ওরা টোকাই?
চৌ রা স্তা
দেহের সাজানো ঘরে মনুষ্যত্ব আঁটকে মরে
এত রাস্তা সব কি রুক্ষ দ্বারে?
দ্বার ছাড়া ঘর অন্ধকারে
কার ঘরে আলো বসত করে?
নিয়ম–নীতি অন্যায় খোঁজে
আকাশ ছোঁয়া দালান চোখ বুজে।
চৌরাস্তার মোড়ে হাত বাড়িয়ে
ভাত দিবে কে চোখ ভিজিয়ে?
রাস্তা ছাড়া ঘর বানিয়ে
সেই ঘরেতে বসত করে সঙ্গ বিনে।
সব রাস্তায় মানব দাঁড়া
ভাবিসনা তুই মানব হারা।
তোর কাতারে আলো আছে
না হয় সারা বিশ্ব কাঁপে।
মানব সবাই সবার তরে
এই দুনিয়ায়, না হয় মরন কালে।
আপন কে সে, যে গোপন দিশে?
বিপদ–আপদ কালো হিংসে বাসে।
বিষের বাঁশি কাল দৃশ্য রাশি
চৌরাস্তায় চোখ, কাঁদে বিশ্ববাসী।
টাকার গাছ
আকাশ ছুঁতে চায় যে মাথা
মাথার ভিতর যত ভণ্ডামি গাঁথা
হিংসায় লাল দু’চোখ ভরা
কে কার ক্ষতি করবে তাড়া।
উপরে উঠতে চায় যে সবাই
পিছন টানে দু’হাত বাড়াই
কে উঠবে আগে টাকার সুতই
যার আছে জোর, বড্ড লড়াই।
টাকা গাছে পাকা ধরে!
বিক্রি করে হাট–বাজারে
কে টাকার গাছে লাফাই মরে?
গরিব–দুঃখি আগের ঘরে।
সুদ মাস্টার
রাত-দিন বসে সে ডাবা টানে
গরিবকে টাকা দেয় সুদের তরে,
গরিবকে টাকা দিয়ে দলিল আনে
দলিলকে নকল করে নিজের করে।
গরিবে বলে তাকে ঈশ্বর-ঈশ্বর!
টাকা চুষে ধনী হয় বুঝে নাতো আর।
গরিবে বলে তাকে বিপদের কাণ্ডারি
আসলে সে সুদের ভাণ্ডারী।
পায়ের উপর পা রেখে, পেটটা যে বের করে
বসে থাকে চেয়ারে।
হাড় ভাঙ্গা হামি দেয়, নাক ডাকা ডাকনি
নাড়িবুড়ি খাবে কি ?
বাম হাতে হাতরি, ডান হাতে ডাক্তারি
জুলুম, অবিচার-দুর্বলের উপর জোরচুরি।
সুদ ছাড়া কত কাজ করে সে ভণ্ডামি
নাম তার সুদ মাস্টার, কাজের ভাণ্ড দন্ডামি।
নরক পতিতার নিষ্পাপ রমণী
তুমি শ্রেয় সাবলীল বালিকা;
শারীরিক ভাবে উড়ন্ত তেজস্ক্রিয়,
তুমি সহবাসের অবিশ্রাম খুঁজতে-খুঁজতে
শত-শত বিছানায় শরীরের ছাপ এঁকেছ!
নিতম্ব নাচনার, আঁকাবাঁকা সাজ,
পুরুষের চোখের ঈক্ষণ কেড়েছ,_
তোমার চোখে সহস্র চোখ দেখতে পাই;
লাল চোখে ক্ষেপা ষাঁড়ের মত-হাঁপাই।
তুমি টাকা চাও, শরীর বিক্রির টাকা,
শরীর ক্ষত-বিক্ষত করে সতীত্বের কাপড়ে নোংরামি,
সবাই নরম মাংসের স্বাদ খোঁজে_
কেউ মন খোঁজে না, ভালোবাসা খোঁজে না।
ব্লাউজের বোতামে শত-শত হাতের ছাপ-অশ্লীলতার
নরপশুর আক্রমণে, নরম মাংস হয় ক্ষত-বারংবার।
আজ যাঁহারা বেশ্যা, করে দেহ ব্যবসা-কুনজর!
তাঁরাই সমাজের অশ্লীল সম্বন্ধীয় খাবার।
যাঁহারা বেশ্যার স্বাদ গ্রহণ করে,তাঁহারাই করে ঘৃণা!
আলোতে মহাপুরুষ, আঁধারে করে যেনা।
একটি মেয়ে কত লাঞ্ছনা, অবহেলিত হয়ে,
নিজের অবাধ্যে ঠাঁই হয় পতিতার নিরয়ে।
আমরাই বেচে-কিনে, সম্ভ্রম লুটে, তৈরি করি বেশ্যা!
আবার আমরাই ঘৃণায় ঠেঁলি, বলি বেশ্যা!
যদি তাঁহাদের ভিতরের চিৎকার শুনতে পেতাম,
তাঁহাদের যন্ত্রণা দেখতে পেতাম; তাহলে
শত-শত বার তাঁহাদের কাছে ক্ষমা চেতাম।
ওরা নরক দেখেনি-পতিতা দেখেছে,
পতিতার যন্ত্রণা গায়ে মেখে,
পাঁথরের সাথে যুদ্ধ করে, সুখ বিসর্জন দিয়েছে।