নীল পদ্ম

“এই পৃথিবীর রূপ নারীর মাঝে উজ্জ্বল;আমার চোখ
নারীতে ডুবিয়া থাকিবে দোয়েল ডাকা শেষ ভোরে”
কুয়াশা মাখা ধানের শীষে চোখ ছুঁয়ে দিয়ে সুখ_
তোমার নয়নে সূর্য উঠিবে, ফুটিবে সাদা ঘাস ফুল।
সুখ খুঁজে খুঁজে পৃথিবী ঘুরেছি, সৌন্দর্য্যের ঢেউয়ে,
সে সুখ আমি নারীর মাঝে পেয়েছি নীল পদ্মে_
আমাকে শান্তি দিয়েছিল পৃথিবীর মত তাঁহার বুকে।
আমি বার বার সুখ স্বাদ সংগ্রহে ছুটে যাই নীল পদ্মে
যে নারী আমার জন্য উত্তেজিত শরীরে,ভেজা ঠোঁটে,
সুখ নিয়ে নীল শাড়ি পড়ে শত রজনী রয়েছে চেয়ে।
আমি আজ ভোরে পৃথিবীর কুয়াশা ঠেঁলে, নারীতে_
ক্লান্ত চোখে ছুটে গিয়েছি ঘাস ফড়িং এর রূপ সাথে।


বড্ড ধেরি করে এলে;নারীর রূপআজ মিলিয়ে যাবে
পৃথিবীর অন্ধকার রূপে, ছুঁয়া যায় না—চোখের জল;
এ নারী নিষিদ্ধ পৃথিবীর মাঝে, ‘নীল পদ্ম বাজারে
রক্ত ক্ষয়ের রূপ’ নারী আজ ভোরের অন্ধকারে।
“নীল শাড়ি শুকিয়ে আছে এই পৃথিবীর তরে”
সে নারী আজও ছুঁয়ে দেয় দোয়েল ডাকা ভোরে।



তুমি ফুল আর ভোর

আলো ছুঁয়ে মন সরষা ফুলে
দেখেছিলে ভ্রমরা মধুচুষে তোমার নিঃশ্বাসে?
ঘুম ঘুম চোখে কাজল মেখেছিলো_
কালো মেঘ, ঘণ অন্ধকার।
তুমি দেখেছিলে কি পেঁচাদের সভা?
আমি পেঁচা হয়ে এসেছিলাম ঘণ অন্ধকারে
তোমায় দেখবো বলে_
তোমার রূপ-সুন্দর, পূর্ণিমা মুখ।
তুমি কি দেখেছিলে জোনাকপোকা?
আমিও তাহাদের দলে এসেছিলাম শত রজনী
তোমায় দেখবো বলে_
তোমার কেশ, ধবধবে সাদা পা।


তুমি ছুঁয়ে দিলে আমি রং বদলাই!
তোমার হাতে আরেক বার ছুঁবে বলে
আমি কখনও সবুজ, কখনও নীল, কখনও লাল হই
তোমার হলুদ শাড়িতে_
তুমি কি আমাকে দেখেছিলে?
আমি কতটা রঙিন করেছিলাম তোমাকে?
প্রতিটি ভোরে, তোমার ঠোঁটে আর চোখে।




কপালের কালো টিপ

ঘন কালো অন্ধকার ‘টিপ’ কপালে চেপে
রমণী তোমার রূপ অপরূপ হয়ে আছে,
আমার চোখ ভরে আছে তোমার রূপে।
রমণী তুমি নীল শাড়ি শরীরে জড়িয়ে,
বাতাসে আঁচল মেলিয়া দিবে, আমার মুখে_
এক মুঠো ঘাসফুল তোমার দীঘল চুলে
গুজে দিবো; অন্য সব ভুলে, আমাকেও!
সবুজ শাড়ি পড়িবে কি? দূর সবুজ বনে,
যেখানে কারো চোখ নেই, শুধু আমি।
শতশত গাছের আড়ালে সবুজ শাড়ি উড়িয়ে
তোমাকে সাজাবো' ফুলে-ফুলে, সবুজ বনে_
কপালে কালো টিপ দিয়ে হাস ‘লাজুক’।
ঘন কালো অন্ধকার টিপ কপালে চেপে
আমার চোখে কত সুখ দিবে, গোপনে চুপে;
যত সুখে জান্নাত, সবুজ বনের পাখিরা।



প্রিয়তমা

আমি আজও ভালোবাসি তোমায়_
                           প্রিয়তমা
তোমায় নিয়ে লেখা পুরনো দিনের কবিতা
কাঁচের দেয়াল দিয়ে ঘিরে রেখছি হৃদয়
ধূলি জমেছে আমার মাংসপেশিতে
চোখ কথা বলে শান্ত অস্পষ্ট ভাষায়
মন পুরনো দিনের মতই হাসায়  
আমি আজও ভালোবাসি তোমায়_
                          প্রিয়তমা।

আজও কবিতা লিখি পুরনো দিনের মত
তোমার সেই পুরনো যৌবনের আলেখ্য
আজও আমার চোখে ছবি আঁকে, কবিতার
আমার চোখে ভাজ পড়েছে বয়সের
মন তো আগের মতই আছে-চঞ্চল?
তোমার সাজানো হাসি মুখের অঞ্চল  
আমি আজও ভালোবাসি তোমায়_
                       প্রিয়তমা।

আমার কবিতা গুলোর বয়স একটুও বাড়েনি
তোমার যৌবনের চিত্র এখনও সতেজ নব ঘাসফুল
তোমার চোখ,ঠোঁট,নিঃশ্বাস, স্পর্শ এখনও ষোল
তোমায় নিয়ে লেখা কবিতার বয়স একটুও বাড়েনি
আজও ভালোবাসি তোমায় পুরনো দিনের মত_
                      প্রিয়তমা।


তোমার হাতের চুড়ি

লাল, নীল, সবুজ, হলুদ, চুড়ি গুলো সাজে
তোমার হাতের চুড়ি গুলো উঠেছিলো বেজে
মধুর সুরে বাজিছে আমার জঙ্গ কানে,
আমি মুগ্ধ হয়ে শুনছিলুম ঘুমের তন্দ্রা ঘরে।
তোমার কলমিলতার হাতে বেঁধেছিলে
কত রঙের চুড়ি,
আমি কত বার তন্দ্রা চোখে হাতখানায় দিয়েছি চুমু!
তোমার নরম হাতে বেঁধেছিলে
কত রঙের চুড়ি,
আমি মুগ্ধ হয়ে চেয়েছি তন্দ্রা চোখে।
আমি বার বার তোমার হাতে চুমু দেই
ভালোবাসার আলতো ঠোঁটে,
তোমার শরীর শিউরে উঠেছিল স্পর্শে।
স্নিগ্ধ ভোরে তন্দ্রা চোখে শুনেছিলুম
তোমার হাতে বেজেছিলো কত রঙের চুড়ি।
দু'হাতে টানিয়া আমার বুকে মিশাইলাম তোমায়
দু'জনের বুকে বাজিতেছে ঝনঝন শব্দ
চোখ, ঠোঁট, উরু, মিশে আছে এক সাথে,
চুড়ি গুলো আমাদের ভালোবাসার ভবিষ্যৎ স্বাক্ষী।



তোমার উদ্দেশ্যে

কুয়াশার বেষ্টনী ছেদ করে রওনা হলাম তোমার উদ্দেশ্যে
কনকনে ঠান্ডা বাতাসে আমি দুমড়েমুচড়ে লঞ্চের এক কোনে বসে আছি
চার দিকে থৈথৈ করছে পানি
ডিঙি নৌকা গুলো ডিঙাচ্ছে ঢেউয়ে
আমি এক রাশ উজ্জ্ব্বলতা নিয়ে এগেয়ি যাচ্ছি তোমার উদ্দেশ্যে।
খুব ঠান্ডা লাগছে তার উপর গাঢ় বাতাস
আমার হাত দু'খানা থরথর করে কাপছে
চোখে আলো জমে আছে এক রাশ
তোমাকে দেখবো বলে মনে হায় হুতাশ
কুয়াশার বেষ্টনী ছেদ করে রওনা হলাম তোমার উদ্দেশ্যে।
চার দিকে অন্ধকার নেমে আসছে
কুয়াশার গাঢ় রং অন্ধকারের সাথে মিশে আছে
নদীর দু'পাশে গড়ে উঠা কলকারখানার ধোঁয়া আরো অন্ধকার করছে আকাশ
যত অন্ধকার নেমে আসছে তত ঠান্ডার দৈত্য গ্রাস করছে
তখনও চোখে এক রাশ উজ্জ্বলতা
সব বাধা অতিক্রম করেই রওনা হলাম তোমার উদ্দেশ্যে।
গাঢ় অন্ধকার নেমে পড়েছে,
নদীর চারপাশ অন্ধকার আর কুয়াশা দখল করে নিয়েছে
আকাশ আর নদী একাকার হয়ে আছে
আমি একাকার হয়ে আছি তোমার উদ্দেশ্যে।


তুমি কি জানো?

তুমি কি জানো?
তোমার কিছু কছু কথায় আমি খুব কষ্ট পাই
যেমন আকাশ কষ্ট ফেলে কাঁদে বৃষ্টিপাতে
বজ্রপাতে চিৎকার করে
আমার মনের ভিতর রক্ত ক্ষয়ে
তুমি যদি জানতে,
আমাকে জড়িয়ে রাখতে কোটি কোটি বছর
সাতশো কোটি পৃথিবীর সমান ভালোবাসা দিয়ে
বলতে ওগো তোমায় অনেক বেশি ভালোবাসি।

তুমি কি জানো?
তোমাকে ছাড়া আমি কতটা কষ্টে থাকি
আমার শহর জুড়ে আমি থাকিনা
শুধু তুমি, শুধু তোমার আরাধনা
আমার একাকিত্বের সাথী তোমার ভাবনা
তোমার চোখের ভাষা, ভালোবাসা।
তুমি কি আমার ভালোবাসা অনুভব করেছিলে?
আমি কতটা ভালোবাসি তোমায়।

তুমি কি জানো?
তোমার কপালে রংধনু খেলা করে, আকাশ ভুলে
আমি আকাশ দেখিনা যবে থেকে—
তোমার হরিণী চোখ, বাঁশির ছবি নাক,
দীঘল কালো চুল, জোড় লম্বা ভ্রু,
টোলপড়া চাঁদনি গাল দেখেছি।
আমি শুধু তোমাকে দেখি, তোমাকে,
ওগো
তুমি কি সব জানার পরেও আমার সাথে
রাগ-অভিমান করে থাকতে পারো-পারবে?
আমি জানি পারবে না,
কারণ তুমি আমাকে ভালোবাস, ঠিক আমার মত করে।

তুমি কি জানো?
তোমার শত বারণ, ভালোবাসার কারণ
তোমার প্রতি ভালোবাসা দিন দিন বেড়েই চলছে
তুমি কি আমার ভালোবাসার গভীরতা মেপেছ?
তুমি শত রাগ-অভীমান করলেও আমার ভালোবাসার কমতি থাকবে না
কারণ-বারণ সব ভুলে ভালোবাসবো সারা জীবন।


কত রাত ঘুমাইনি

ঝরিতেছে শিউলি ফুল, ঝরিতেছে অন্ধকার
ঝরিতেছে চোখের জল দেবদারুর ছায়া তলে
চোখ পুলিতেছে, চোখে ঘুম নেই, সুখ নেই
বাতাসে সুখ ঠেলিয়া নিয়ে যায় গঙ্গার জলে।
গাঙচিল উড়িতেছে, ঝরিতেছে সাদা পালক পুকুরে
পুকুরে-পুকুরে ঝরিতেছে অভিশাপ;
প্রজাপতি রং ঢালিয়া দিয়েছিলো আমার গায়ে
কোনো এক দিন সে দিন আমি সুখ ছিলাম
কচি পাতার মত, কচি ফুলের মত, কচি ফলের মত;
আমার গায়ে রং ছিল, সুখ ছিলো,
সে দিন আমি সবার ছিলাম, সবার শখ ছিলাম।


বনে বনে কাক আর কোকিল বাসা বাঁধিতেছি  
বন ছাড়া যে কোথাও ঠাঁই নেই;
অন্ধকার আর নির্ঘুম চোখে শান্তি নেই,
আমিও তাহাদের সাথে বাসা বাঁধিতেছি
শান্ত দেবদারুর শুকনো পাতা আর ঢাল দিয়ে
আমাকে একটু ঘুম আর শান্তি দেও
কত রাত ঘুমাইনি
হে চাঁদ, হে তারা, হে অন্ধকার।


কালো চশমা

কালো চোখে পূর্ণিমা
নেমে আসা জোনাকিরা
নির্ঘুম ঝিঝিপোকা
পেঁচাদের সমাবেশে অন্ধকার।
আমি একা, বসে থাকা
চোখ দু'টো কাঁপা কাঁপা
তারা গুলো জ্বলে থাকা
            তোমারই চোখে।


ফুল ফুটে রাতে রাতে
চোখে চোখে কত প্রেম
সাদা ফুল কালো হাতে  
আমি চেয়ে আছি ভুলে
ভ্রমরার চোখে
তারা গুলো জ্বলে জ্বলে
            তোমারই চোখে।


কালো চশমা অন্ধকার
রাতে রাতে পেঁচা ডাকে
কানে কানে বলে যায়
প্রেম কাহিনী একা চাঁদ
আমি নির্ঘুম চোখে চেয়ে আছি
এক আকাশ হাসে
            তোমারই চোখে।


জোনাকের নীল আলো

তোমার চোখে প্রেম বিলাইয়া নার্গিসের মত
শত যৌবনের বাঁধ ভেঙেছে,
স্বর্গের সুখ তোমার আলিঙ্গনে_
তুমি কোন পূর্ণিমার চাঁদ অন্ধকারে জ্বলিছে।

আমি কত রাত তোমার খোঁজে অন্ধকারে নেমেছি
অন্ধকার জোনাক পোকার আলোতে,
গ্রামের নিষিদ্ধ ছোট্ট ঘরে তোমার বসবাস_
ঘাসের আবরণে যৌবন ঝরে রাতে, স্বর্গ তোমাতে।

যে পথে ফুল ঝরে পড়ে তোমার নরম পায়ে পায়ে
আমি সে পথে ফুল কুড়াই প্রতি রাতে,
তোমার গায়ের ঘ্রাণে ছুটে যাই পিছু_
তোমার স্বর্গে নিজেকে আরেক বার পাপ মুক্ত করতে।

রাতের পেঁচারা ঘুমায় না, চোখ বড় করে বসে আছে
তোমার স্বর্গের পথে পথে ঘাস ফুল,
অন্ধকারে ফুটিতেছে পেঁচার চোখে_
আমি সে পথে বসে আছি তোমার হলুদ শাড়ির কুল।

আমার তৃষ্ণা চোখে তোমার আঙুল দিয়েছিলে,বক্ষ
সারা রাত ঘাস ফুল দিয়েছিলাম তোমায়,
তোমার শরীরে স্বর্গ পেয়েছিলাম
নিতম্বের ছায়াতলে সুখ ঝরিয়া পড়েছে চোখ আলোয়।



দু'জনে খুব কাছাকাছি

দু'জনে খুব কাছাকাছি, দু'টি পাখির ছানার মত
জীবনের সাথে যেমন অক্সিজেনের সম্পর্ক
মন্দিরের সাথে ঠাকুরের
আমরা দু'জন খুব কাছাকাছি, নব প্রেমের মত।

দু'জনে খুব কাছাকাছি, জলের সাথে মাছের মত
কবির সাথে কবিতার গভীর অদম্য সম্পর্ক
মসজিদের সাথে মুসল্লী'র
আমরা দু'জন খুব কাছাকাছি, নব সংসারের মত।

দু'জনে খুব কাছাকাছি, কৃষকের লয়ে মাঠের মত
অন্ধকারের সাথে জোনাকির আলোর সম্পর্ক
দেবের সাথে দিব্যি দেবীর
আমরা দু'জন খুব কাছাকাছি, নব অবুঝ শিশুর মত।

দু'জনে খুব কাছাকাছি, ফুলের মিলন ভ্রমরার মত
বাতাসের সাথে মিশে যাওয়া ঘ্রাণের সম্পর্ক
প্রেমিকের সাথে প্রেমিকার
আমরা দু'জন খুব কাছাকাছি, নব ভোরের সূর্য মত।

দু'জনে খুব কাছাকাছি, কিশোরীর গলে মালার মত
চোখে দেওয়া কাজল রূপ উজ্জলের সম্পর্ক
যৌবনের সাথে কত স্বপ্নের
আমরা দু'জন খুব কাছাকাছি, নব স্বপ্ন ইচ্ছে মত।


এক রাত

আমি সারা রাত ঘুমাইনি
জানালা দিয়ে ঘন অন্ধকার দেখেছি
মেঘলা আকাশ ভার হয়ে আছে
বৃষ্টির পর বৃষ্টি  আসে আমার চোখে
তুমি নেই বলে
সারা রাত গেলো একবারও  খবর নিলানা
আমি কেমন আছি, কি করছি?


তোমার রেশমি চুড়ি আর টকটকে লাল শাড়ি
দেখেছিলাম সারা রাত
সারা রাত তোমার কথা ভেবে ভেবে
আর ঘুম আসেনি, ঘুমাইনি
সারা রাত মোবাইলে তোমার ছবি দেখেছি
আর ভেবেছি কখন খবর নিবে
কখন তুমি বলবে হ্যালো সবুজ কেমন আছো?
তুমি কি কিছুই জানতে না আমি কতটা কষ্টে আছি
তাহলে কেনো খবর নিলানা, খবর দিলানা?


সত্যি বলছি আমি সারা রাত ঘুমাইনি
তোমায় ভেবে ভেবে চোখে নেশা লেগে আছে
কখন তুমি খবর নিবে
বলবে সবুজ কেমন আছো, কি করছ?
তাহলে কেনো খবর নিলানা, খবর দিলানা?


তুমি একবারও খবর নিলানা, খবর দিলানা
আমি কেমন আছি?
আমি সারা রাত কদম ফুল দেখেছি
দেখেছি ভেজা ঘাসে জোনাক চুমু দিয়ে আছে।
অন্ধকার রাতে আমি একা বিষন্ন একা
ঝিঝি পোকা আর ব্যাঙ ডেকেছিলো দূর থেকে
আমি সারা রাত শুনেছিলাম, ভয় নিয়ে
তুমি একবারও খবর নিলানা কেমন আছি?


আমি কেঁদেছিলাম বৃষ্টির সাথে
তোমার কথা ভেবে ভেবে সারা রাত কেঁদেছিলাম
এক রাত মনে হয়েছিলো হাজার রাতের সমন
তুমি কি একটুও আমায় ভাবনি?
তাহলে কেনো আমার খবর নিলানা
আমায় দূর থেকে ভালোবাসা দিলানা?


একবারও ফোন দিলানা
ফোন দিয়েতো জানতে পারতে আমি কেমন আছি
তুমিতো জানতে আমার ফোনে পয়সাও নেই
তুমিতো জানতে আমার হাত পকেট অচল
তাহলে কেনো একবারও খবর নিলানা
আমি কেমন আছি, কি করছি?


আমি সারা রাত শুধু তোমায় ভেবেছি
জানালা দিয়ে মেঘলা আকাশ দেখে দেখে
বৃষ্টির মত কেঁদেছিলাম শত শত সাগর
কেউ দেখেনি আমি কতটা অসুখে ছিলাম
কতটা কষ্টে ছিলাম কেউ দেখেনি
তুমি ক জানতেনা আমি কতটা ভালোবাসি
কতটা ভালোবাসি তোমায় তোমায়
ওগো তুমি কি জানতেনা
তাহলে কেনো খবর নিলানা, খবর দিলানা?


আজ রাতে চার দেয়ালে একটা টিকটিকিও নেই
ঘুম নেই, চাঁদ নেই, তারা নেই,
মেঘলা আকাশ শুধু কাঁদে, আমার মত করে
কারণ তুমি নেই, তুমি নেই আজ রাতে
তুমি কি পারতে না একবার খবর নিতে
আমি কেমন আছি, কি করছি?


আমি সারা রাত জেগে জেগে এই কাব্যখানা লিখেছি
কতটা কষ্ট আর অসুখের ভেড়া জালের ভিতরে
নিজেকে টেনে নিয়েছি শান্ত মনে
সত্যি আমি সারা রাত বৃষ্টির মত কেঁদেছি
তুমি কি জানতেনা কতটা ভালোবাসি তোমায়
তাহলে কেনো খবর নিলানা, খবর দিলানা।


সারা রাত কত দূরে ছিলে?
একবারও আমার খবর নিলানা
আমি খুব কষ্টে আছি
একাকিত্ব আমায় ঘিরে।
তুমি কাছে নেই
আমি একলা মনে
আমি একলা ক্ষণে
আছো খুব গোপনে
আমায় পাগল করে।
আমি কদম ফুল চেয়ে আছি
ফুটে আছে আমার চোখে
অন্ধকার  আমায় খেলে
তুমি জানতে  তোমায় ছাড়া আমি পাগল
উদাসীন— আহত পাখির মত
তাহলে কেনো খবর নিলানা, খবর দিলানা।


সারা রাত মাকড়সার জালবোনা দেখেছিলাম
কতটা কষ্টে ঘর বেঁধেছিল
আমার ঘরের এক কোণে।
সারা রাত চোখ কেঁদেছিলো তোমার লাগি
যেমনটা কেদেছিলো মেঘলা আকাশ
ঘরের এক কোণে পেচা বসে দেখেছিল আমায়
আমার অন্ধকার চোখ
তুমি কি অনুভব করেছিলে আমায়,আমার কষ্ট।


বটবৃক্ষের পাতারা ঝরিতেছে অন্ধকারে
আমি দূর থেকে চেয়ে আছি জোনাক চোখে
মেঘ উড়ে যায়, সরে যায়, তারা খসে
তুমি কি দেখিতেছ পূর্ব গগনে চাঁদ নেই
তারা নেই, আলো নেই, পাখিরা নেই
আমার চোখে ঘুম নেই, সুখ নেই।
তুমি কি অনুভব করছো আমি কেমন আছি?
তাহলে কেনো একবারও খবর নিলানা,
কেনো খবর দিলানা।


সন্ধ্যামালতি আজ ফুটেনি
তুমি নাকি খবর নেওনি?
তাইতো ওরা দিয়েছে আড়ি
ফুটবে না আর বাড়ি।
পেয়েরা গাছে দোয়েল বসেনি
তুমি নাকি খবর নেওনি?
তাইতো ওরা করেছে আড়
আসবে না আর বাড়ি।
তুমি কি এক বারও ভাবনি?
কেমন আছে, কেমন আছি
আমরা, আমার সাথী।


টগবগিয়ে উঠছে সূর্য
ডাকছে নাকো পাখি
ভোরে আকাশ থমকে আছে
জল মাখা দু'আঁখি।


আমি কেমন আছি, কি করছি?
তুমি নিলানা খবর, তুমি দিলানা খবর।


আমার আকাশে ভালোবাসা

ভালোবাসার রঙিন আকাশে সূর্য উঠেছে
ধবল বক হলুদ পায়ে ভালোবাসা নিয়ে আসে_
গাঢ় সবুজ পাতায়; প্রজাপতির ঘরে, ফুলে ফুলে,
নীল শাড়ির আঁচলে, ফড়িং—এর বাতাসে।
ভালোবাসা আসে পাখির বাসার_
রঙিন সুতোর মালা গেঁথে, সবুজ পাতার বাতাস নিয়ে,
দূর থেকে উড়ে আসা পাখির বুকে কোলে।
রংধনুর সাত রঙে, ভ্রমরার মুখে মুখে মধু লয়ে,
ফুল ফুটে আছে রমণীদের চুলে-চুলে_
দুলে-দুলে নয়ন ভুলিয়া ক্লেশ রয়েছে শুয়ে।

পথে-পথে, নরম পায়ে-পায়ে সবুজ রঙ মাখে
জনসমুদ্রে ভালোবাসা হাসে নয়নে-নয়নে_
হাজার বছর ধরে; এই পৃথিবীর তরে,
লাল, সাদা, সবুজ, ফুল ফুটেছে বনে-বনে।
ঘরে ঘরে ভালোবাসার রঙ পড়েছে সুখে
কবুতরের চোখে, গোলাপী পায়ে, নরম গায়ে,
মাটির আদরে, গ্রাম্য রূপে, বৃদ্ধের বুকে,
আমার আকাশে, ভালোবাসা ঝরে পড়ে।


শেরিনের খোঁজে

আমি আবার সূর্যের মত জেগে উঠেছি
দৌলোদিয়ার শেরিনের পুরনো নীল চোখে
ট্রেনের ঝক্ ঝক্ শব্দে উত্তেজনার ঢেউ উঠেছে  
শত-শত বার শেরিনের চোখে জেগে উঠতে চাই।

নরকের পথে যাত্রা দিয়ে, নিষ্পাপ রমণীর গাঁয়ে,  
যেতে-যেতে কতবার হারিয়ে গেছি শেরিনের চোখে।
আমি সুখ খুঁজিয়াছি শত রমণীর ঘরে কড়া দিয়ে,
নিজের জন্য, শরীরের জন্য, ঘুরি দোয়ারে-দোয়ারে।

যারা নরকের সপ্তমে, শরীর জ্বেলে-জ্বেলে
অন্যের পাপ নিজের শরীরে নিয়ে, আগুনে জ্বালে।
আমি তাঁহাদের শরীরে আগুন জ্বেলেছি-আনন্দে
তাঁহাদের শরীরে খুঁজে পাওয়া শেরিনের শরীর অন্ধে

কত বছর পর আবার শেরিনের খোঁজে
সেই পুরনো ট্রেনের ছোট্ট ক্যাবিনে ছেপে।
দু'ধারে সবুজ, সবুজ রমণীরা দাঁড়িয়ে রয়েছে
শীতল বাতাস গায়ে দিয়ে, পুরনো দিনের মত।  

ভুল ছিলো কতশত ভুল, সেই পুরনো দিনে
শেরিনের সাথে মিশে যাওয়া অবুঝ-ভুলে।
ক্ষত গর্তে জ্বালা দিয়ে-দিয়ে সুখ খুঁজেছি,
অন্ধ চোখে; বোবা চিৎকার শুনিনি, অবুঝ মুখে।

কত খুঁজেছি, দেখা মিলেনি পুরনো ছুট্ট ঘরে
হয়তো শেরিন হারিয়ে গেছে লক্ষ পতিতার শরীরে  
শেরিনের ঘরে নতুন শেরিন নরকের—নরে পুড়ে  
কত বছর কেটে যায় শেরিনের ঘ্রাণ খোঁজে খোঁজে।  


তোমার কাশবন_

আমি আজও ভালোবাসি তোমায়
                  তোমায় কাশবন।
যে খানে তোমার কোমল চরণ নেমেছে
যে খানে তোমার চশমাপড়া দৃষ্টি পড়েছে
যে খানে তোমার চঞ্চলার ঝড় উঠেছে
আমি আজও ভালোবাসি তোমায়_
                  তোমার কাশবন।

আজও তোমার চোখে চেয়ে থাকি
চেয়ে থাকি কালো চুলে
আর কপালের কালো টিপে
কৃষ্ণচূড়ার রং মাখানো ঠোঁটে।
তোমার পায়ের নূপুরের শব্দ আজও কানে বাজে
লাল শাড়ির আঁচলে ঢেকে রাখা  
মুখখানি লজ্জায় লাল হয়ে আছে
              ভালোবাসার ফ্রেমে।
জানো! রাতের আলো তোমাকে দেখে
এত হিংসে করে কেন?
কারন! তোমার কাশবনে
এত সাদা ফুল কেন।
আমি আজও ভালোবাসি তোমায়_
              তোমার কাশবন।

নদীর জলে বাঁকানো তোমার ছবি
এদিক ওদিক খেলা করছে
বালুচরে তোমার পায়ের চাপ গুলি
আজও লেগে আছে।
একলা নদীর তীরে কাশবন
তোমার সাথে লুকোচুরি  খেলা করছে,
এক দিন আমি চোর হবো
চুরি করে নিয়ে যাবো তোমার কাশবন।
আমি আজও ভালোবাসি তোমায়_
              তোমার কাশবন ।।

        

বৃষ্টি বিলাসিনী

আমি ক্লান্তির খসড়াপাতার বুকে চরণ মেলিয়া চোখ জেগে রই
জং ধরা আলোর মাখামাখি মনের গভীর গর্তে অন্ধ দেখে সই।
এ পথে কলমিলতা মরে আছে বাতাসের গন্ধে মুখ নীল বর্ণ
এ পথে ধূলিকণা সুচারু কাঁটা হয়ে পায়ে বাঁধে দুঃখ মন শীর্ণ।
আমি কত রাত ঘুম চোখে কাক,কোকিল,চিল দেখে শান্ত রই
জং ধরা আমার শহরে ভুল,অন্ধ,মেঘ বক কালো হয় দুঃখ ভই?
শত আশা নিয়ে যেতে চাই তোমার শহরে কাশফুল কোলে ঘুম
আকাশের সাথে বাস বৃষ্টি বিলাসিনী আমারে লয়ে সুখে চুম।


আমি শত ক্লান্তির পর তোমার সাথে শান্তি মিলাতে চাই কত
তুমি সুখ দিবে তোমার কোমল হাতে, নয়নে নয়নে সুখ যত।
তুমি কাশবনে আসিবে আমার শরীর ভিজিয়ে শান্ত করে ঘুম
কলমিলতার প্রাণে ছুঁয়ে দিয়ে সবুজ ঘাস, কাক,চিল চুপ জুম।
অন্ধকার রাতে আমি চুপ করে তোমার শরীরে মিশে শান্ত হব
দু'জনে এক দৃষ্টিতে পেঁচা দেখিবো কালো চোখের আলো দিব।
আমি তোমার লয়ে শত শত বছর কাটাতে চাই সুখ বৃষ্টি তরে
ক্লান্তির শহরে ফিরবো না, বৃষ্টি বিলাসিনীর ঘরে যাই শত বারে।


সে নাহি মোর

সে কহে, সে বলে, সে নাহি মোরে সহে
বিভীষিখার আলোচনা করে মোর গৃহে।
গগনে চাহিয়া কত আর উড়াইব ঘূড়ি
মোর দেহ যে আছে বাঁচিয়া লুটাই ধূলি।
কোন গৃহে গাহিবা গান একেলা সুরে
মোরে সুরে সুরে টানে বিরহে দূরে।
ব্যাঞ্জনা মোরে ধরিয়াছে ঘিরে ঘৃণে
সে চিনে মোরে সুখহীনে-দুঃখের দিনে।
কে আছে মোরে মিলে, নাহি রাখে দিলে
সে রাখে কাহারে থাকে কাহারে কোলে।
দিশেহারা নিশিতে সে মোর নাহি আহারে
সে বলে কে, নাহি চিনে মোরে নাহিরে।
সে জানি কার বিষ তুলে বিষাদে
কারি গৃহে গান গাহে নরম গলা হলুদে।
যদিবা শির নত করিয়া তাহারও লয়ে
মোর প্রনয়ে সে নাহি স্বাদ ছুঁয়ে।
সে নাহি মোরে লয়ে পুষ্প তুলে গাঁথে
সে নাহি মোরে রাখে মনে বাসে সাথে।

চাঁদ দেখি মোর কত দূরে উড়াইতেছে ঘুড়ি
নাহি তারে ছুঁই, নাহি তার ছোঁয়ার দঁড়ি।
কত দূরে সে বসত নিলো গায়ে মেখে নীল
সবুজ শাড়িতে মুখ ডেকে চাহে গগন চিল।
সে নাহি মোর নাহি মোরে চিনে
নজরে কাহার মন, মোর মন বিহনে।
বিষন্ন মনে তাহারে খুঁজে হই ক্লান্ত  
সে নাহি মোরে ভাবে, ভালোবাসে ভ্রান্ত।



আমি তোমার মাঝে সুখি

আমি তোমার মাঝে সুখি
আমি তোমার নগ্ন চোখে সুখি
তোমার সাজানো কথায় সুখি
তোমার হাসি মাখা মুখে সুখি
আবার তোমার ঘুম চোখে সুখি
আমি তোমার সত্য প্রেমে সুখি।

আমি তোমার সুরে সুখি
আমি তোমার রৌদ্র ঠোঁটে সুখি
আমি তোমার ভালোবাসায় সুখি
আমি তোমার সুখের হাসিতে সুখি
আমি তোমার সুখের দুষ্টুমিতে সুখি
আমি তোমার আদর হাতে সুখি।

আমি তোমার গরম নিঃশ্বাসে সুখি
তোমার দুষ্টু মিষ্টি অভিমানে সুখি
তোমার আলতা মাখা পায়ে সুখি
আমি তোমার নাভির চুম্বনে সুখি
আমি তোমার জড়িয়ে ধরায় সুখি
আমি তোমার স্তনের স্পর্শে সুখি।

আমি তোমার চঞ্চল চোখ নরম সুখি
আমি তোমার বিশ্বাসে মন বড্ড সুখি
আমি তোমার পাশাপাশি হাটায় সুখি
আমি তোমার কপালের টিপের সুখি
আমি তোমার সূর্য স্নানের ভোর সুখি
আমি তোমার গায়ে ছাদর উষ্ণ সুখি।


তুমি নিসর্গ

প্রকৃতি আর তুমি অভিন্ন
দু'জনই অপরূপা, স্বর্গ আবাস  
তুমি নিসর্গ_
ভোরের স্নিগ্ধ বাতাস।
তুমি দোলনার কোলে সবুজের মাঝে
সূযের্র হাসি মুখে।
তোমার হাতে চুড়ি সাজে-বাজে
পা ছোঁয় সবুজ ঘাসের বুকে।

তুমি নিসর্গ_
তুমি নদীর কোলে জলকন্যা;
অপরূপ ঢেউয়ে ঢেউয়ে,
মধ্য নদীর বালুচরে কাশবন দিলে ছুঁয়ে।
তুমি গোধূলির চঞ্চলতা বিকেল বেলার সাজ  
তুমি নদীর কোলে সূর্য ডুবা অপরূপ আজ।

তুমি নিসর্গ_
মেঘের এপার-ওপার দু'পারেতে
তোমার রূপ সাজে,
সাদা বকের ডানায় চড়ে চাঁদ দিলে মোরে ছুঁয়ে;  
তুমি বকুল ফুলের সুবাস দিলে_
মধ্য নিশি কালে।
তুমি পূর্ণিমার সাজ গায়ে মেখে
নেশা দিলে মোর-চোখে।
তুমি নিসর্গ, তুমি আমার স্বর্গ_
আমারও পূর্ণ মাঝে।  


দস্যু প্রেমের গল্প

ছাদের এক কোণে বসে থাকা ছেলেটিও এক দিন
লিপিষ্টিক মাখা ঠোঁট স্পর্শ করেছিলো;
সেও প্রেমের সতিত্বে রক্ত নিয়ে খেলা করেছিলো
আজ সে পবিত্র_
গঙ্গার জলের মত।

ঘরের এক কোণে বসে থাকা আবেগী মেয়েটি
দুশ্চিন্তায় কাতর, নীরবে কাঁদে
মুখথুবড়ে পড়ে থাকে একেলা
বক্ষে মিশানো দস্যু প্রেমের জল চোখ ভেজায়।

কে দোষী, যে প্রেম বিলায়, যে প্রেম ছোঁয়?
সত্য প্রেমের আলোয় মরীচিকা ঘুমায়
এখানে আবেগী প্রেম দস্যুরা ভিড় জমায় না
এখানে ঘাম শীতল হয়ে রয়-বাস্তব
উত্তাপ নেই,সংঘাত নেই, আঘাত নেই, শুধু কল্পনা,
এখানে বাস্তব কল্পনা, ভবিষ্যতের চিন্তা।

গঙ্গার জলে মিশে থাকা দস্যু প্রেমের গল্প বহমান
এখানে নৌকাডুবির গল্প আছে,
কালো মুখোশের আড়ালে প্রেম বেচাকেনা গল্প
সস্তা দামে,
দস্যুরাও নিজেকে পবিত্র বলে।
লুকোচুরি, ভয়, আবার আসে ফিরে,
কি মধু আছে এই প্রেমে?
আবার কাঁদে গোপনে_নীরবে,
দস্যু প্রেম ছুঁয়ে দেয়, ফাঁসি অভয়ে
গঙ্গায় ডুবে মরে, তবুও প্রেম আসে ফিরে ফিরে।


তোমার নয়নে-নয়ন রেখে

আমি তোমারও নয়নে-নয়ন রেখে,
প্রনয়ের স্বাদ খুঁজে_
শান্ত হয়ে রয়েছি নয়ন মেলে'
তুমি দেখিবে কি আমারও নয়নে?
প্রনয়ের এক ঘরে কত আকুতি!  
আমি প্রনয় বুঝেনে; মননে ভাবনা_
তাই কি প্রনয়, নাকি অজান্তে স্বপ্নে দেখা?  
যে খানে আঁধার নেই বলে,
আলো নিয়ে কেউ ঘুমায় না,
আমি আঁধারে প্রনয় খুঁজেছি প্রনয়ের আশায়,
সুখ-অসুখ খুঁজেনি।
দেখেছি তোমার নয়ন–হৃদ নয়নে,
তোমার নয়নে আমাকে খোঁজে পাই
তুমি কি দেখেছ তোমায়, আমারও নয়নে?


তোমার সাথে জনম জনম

গোলাপ শুঁকিয়ে ডায়েরীর পাতায় মিশে আছে;
একটি রাতও ভুলতে পারিনি তোমাকে নিয়ে,
তোমার চোখে-চোখ রয়েছে স্বপ্নের নির্ঘুমে_
স্বপ্নেরা আশার বাঁধন-বাঁধে স্বাদ রস হৃদয়

তুমি বিনে মন আড়ালে কাঁদে—নীরবে
চাঁদ; সে রাত মেঘে ডাকে আলো নিবে।
তারাদের ভিড়ে আরোও একটি তারা খেলা করে,
রাতের চাঁদও তোমার থেকে বহু দূরে।
তোমার আলো আমার ঘরে রয়েছে শুয়ে,
আলো নয় আলো নয় চাই তোমারে_
                     রমণী পুরোটা চাঁদ।

সুখ খুঁজে-খুঁজে জীবনের শেষ হতে চাই,
সারাটি জীবন শুধু তোমাকে পাই।
হাতে-হাত দু'হাত বারাই, ঈশ্বরের নিকট
ঈশ্বরের সাথে দেখা হবে কবে বিস্ময়ের হাঁট!
তোমার সাথে কাটাতে চাই জনম-জনমের নিঃশ্বাস,
তুমি আমার আমি তোমার অনন্ত বিশ্বাস।



আবার যদি স্বপ্ন দিতে

শেষ হয়ে যাওয়া স্বপ্ন গুলো
যদি আবার ফিরে আসে অবেলাতে;
যদি আবার ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে_
মধ্য রাতে; আবোলতাবোল ঘুমের ঘরে বলে?
তবে আমায় আবার ভালোবাসবে কি?
আগের মত করে, লুকিয়ে দেখার সময় দিবে কি?
বৃক্ষতলে কানের কাছে ফিসফিস করে বলবে কি_
ভালোবাস;_ আগের মত করে?

যদি দুপুর বেলার রুদ্র মাখা গাঁয়ে
আবার ছুটে যেতাম তোমার কাছে।
যদি তুমি ভালোবাসার কোমল হাতে মুছে দিতে
কপালে লেগে থাকা সত্য প্রেমর রক্ত ঘাম।
যদি আবার গল্প করতে অপ্সরীদের
আমি তোমার কথা ভেবে উড়তাম প্রেমের পুষ্পবনে।
তুমি দীপ্ত হেসে আমার কোলে মাথা রেখে
যদি আবার হটাৎ করে ঘুমিয়ে যেতে!
আমি ভালোবাসার পরশ দিয়ে উষ্ণ দিতাম তোমার গায়ে।


পুরনো রংধনু

আজকের রংধনু দেখে
পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে গেলো;
তোমার কপালের সাত রঙের টিপ,
ধবধবে সাদা আকাশে উড়িয়ে দেওয়া রঙ
গোধূলির বিকেল শান্ত হয়ে,
নদীর পাড়ে বসে থাকা সময় গুলো আজ কোথায়?
যে প্রেম স্বপ্নের ঘর বেধেছিলো এক দিন,
সে প্রেম মরে আছে আজ_
অবাস্তব কথা গুলো নদীর জলে ডুবিয়ে।
স্বপ্ন দেখাবার রংধনু আজও বেঁচে আছে
আজও রংধনু উঠে, গোধূলি সাজে
নদীতে ডুবে যাওয়া সূর্যটিও ভোরে চোখ মেলে।

আজ রংধনু সাজাতে চেয়েছি তোমার কপালে
পুরনো দিনের মত, নদীর পাড়ে বসে
পুরনো দিনের রংধনু আমাকে আপন করে চিনে
তোমার হলুদ শাড়ি জড়িয়ে থাকা বিকেল খোঁজে
আমার–তোমার পুরনো কথা গুলো_
রংধনুর সাত রঙে চোখ মেলে।
আজকের রংধনু পুরনো রংধনুর সাথে হুবহুব মিলে
শুধু আমার–তোমার প্রেমের সাদৃশ্য মরে ঝুলে  
লাউয়ের মত ঝুলে থাকা কোন্ এক দিন খাবে।  


ডুব প্রেম

আমি তখনও চিন্তায় অবিশ্রামে কাতর ছিলাম
যদি সে আমার অব্যক্ত কথা গুলো
মননে যোগকষে সমাধান বের করতো
তাহলে আমার শেষ টুকু পর্যন্ত আমার লয়ে থাকিত।
আমি জানিনা_
হয়তো সে আমার অগচরে আমার অভিশাপের তজবিহ গুনছে!
আমি বুঝি না তার নীল চোখে কিসের নেশা,
কিসের সন্ধানে আমার প্রতিচ্ছবি ভুলে যায় প্রতিনিয়ত।

অন্ধ বিশ্বাসে আমি তোমায় ভালোবাসি,
তোমার ইন্দ্রিয় স্পন্দনে সত্যের নিশ্বাস শুনেছি বারংবার।
আজ আমি বিস্মিত, আমার লয়ে!
ঘৃন্না হয়, তোমার দেহে পাপের বসবাস দেখে,
আমার ভালোভাসাতো মিথ্যে ছিলোনা,
হয়তো তোমার ভালোবাসাও মিথ্যে ছিলো না!
সময় দু খন্ড করে দিয়েছে আমাদের নিয়ম-নীতি
আমাদের প্রনয়ের পঞ্চদশিয় সংবিধান।
এখনও বিশ্বাস হয়নাকো দৃশ্য_বলা না বলা কথা।

সত্য সাগরের জলে আমার_
সত্য বিশ্বাস গুলোকে ডুবিয়ে মেরে ফেলবে?  
আমার সত্য কথার মূল্য নেই?
আমার কথায় বিশ্বাস নেই?
আমি আজও সত্যের মর্যাদা হারাইনি
বিশ্বাসের সিংহাসনে মাথা উচু করে নিশ্বাস নিচ্ছি।
যদি সত্য মানুষের সংকট হয় এই ধরায়,
তবে মিথ্যের অধীনে সত্য বিশ্বাস মরে যাবে_
সত্য সাগরের জলে ডুবে।
তখনও আমি বলিব ভালোবাসি, ভালোবাসি।
তোমায়, তোমার এই অপরূপ ধরা।


বৃষ্টি ঝরে রমণী গায়ে

আকাশ কাঁদিতেছে চিৎকার করে নরম সুরে সুরে
চার দিকে ঘন অন্ধকার নামিতেছে মেঘে মেঘে_
সবুজ পাতারা ভিজিতেছে বৃষ্টির সাদা জলে
পায়ে পায়ে ভেজা ঘাস মাখিতেছে নরম হয়ে।
পথে পথে মানুষের ঢল মাথায় দিয়েছে ছাতা
বৃষ্টিরা এসে ভিজিয়ে দিলো কালো ক্যাশ মাথা।
আমার শরীরে কাপন ধরেছে অন্ধকারের ছায়া
৩২ নাম্বারে দাঁড়িয়ে রয়েছি বৃষ্টি দেয় মায়া।
কত রমণী দাঁড়িয়ে রয়েছে ভেজা পায়ে পায়ে_
নূপুর বাজে; চুলের জল ঝরিতেছে সাদা কোমড়ে
কত শরীর ভিজে রয়েছে অঙ্গ রয়েছে মেলে,
দেখিতেছি বৃষ্টি রমণীর শরীরে ভেজা নরম গালে।  
আমার চোখেতে প্রেম নেই বলে দেখিতেছি পায়ে_
পায়ে সাদা জল খেলা করিতেছে ভেজা কোমড়ে।

বৃষ্টির নরম জলে ভিজিতেছে কত রমণীর শরীরে
বক্ষ দেখিয়া প্রেম ফিরে আসে দেখি নয়ন মেলে।
চার দিকে ঘন অন্ধকার জ্বলিতেছে ল্যাম্প চোখে
বাদাম হাতে খসিতেছে, বাতাস দুলিতেছে শরীরে।
বৃষ্টিরা আসে বার বার অবসর মাঝে নিয়ে গিয়ে
লেকের পাড়ে বসে থাকা রমণী ভিজিতেছে চুপে
কি যেনো মনে মনে সুখ-দুঃখ মরে আছে শুয়ে
লেকের কোলেতে বৃষ্টি নামে অপরূপ হয়ে রূপে।


প্রনয়ের আকুতি

দিবসও রজনী তোমারে হেরি
আমারও সুখ লয়ে, প্রনয়ের আকুতি!
তুমি মোর নয়নে, তোমার নয়ন ঘেরি
তুমি মোর মনে, কবে হবে মোর সাথী?

অবেলা-বেবোলা তোমায় দেখে
আমারও মনে আমি নেই, তুমি এলে?
আমি অব্যাক্ত তোমার রূপ দেখে  
চেয়ে আছি তোমারও নয়নে-নয়ন মেলে।

তুমি হেসে ছিলে অপরূপ হাসি
যে হাসি, আমি ভালোবাসি,
তুমি বেঁধেছিলে কবরী বকুলের মালায়
আমি ভালোবেসেছি তোমার চঞ্চল আলয়।

আমি দূর থেকে দেখি-আঁকি মধুমতী
তুমি যে আমার চঞ্চলা-শান্ত গোধূলী
সন্ধার আঁধারে তুমি জোনাক রাতি,
ভোরের সূর্যে তুমি হেসেছিলে মলি।

প্রনয়ের আকুতি তোমারও লয়ে
প্রনয়ের শির তোমার তরে, এযে উচ্চ,
আমার প্রনয় তোমারও লয়ে,
প্রনয় ফুলের মালা গেঁথেছি কত গুচ্ছ।


তুমি ডেকেছিলে ভোরে

তুমি ডেকেছিলে আজ ভোরে
শিউলি ফুল আর হলুদ পাখি হয়ে
তোমার ডাকে বাতাস হয়ে যেতে চাই
সবুজ বন আর নদীর ঘ্রাণ নিয়ে।


আকাশে তপ্ত রোদ আর গাঙচিল উড়িতেছে
আমি আকাশ চাহিয়া তোমায় ভাবি
তোমার মুখ আর নোলক কতটা উজ্জ্বল হয়ে আছে
তুমি তপ্ত রৌদে সোনালী হয়ে আছ
নাকি আম গাছের ছায়া তলে চুল উড়াইতেছ?
আমাকে খুব মনে করে করে।
আমি নিশ্বাসের সাথে তোমার চুলের ঘ্রাণ নিতেছি
কত মাইল দূর থেকে শুধু তোমায় ভাবি
রাস্তার দু'পাশে সবুজ গাছ আর ধান খেত
তোমার গান গাইতেছে, আমি শুধু দু'পাশে চাহিয়া আছি।


কৃষ্ণ চূড়ার ফুল আর জারুল ফুল ফুটিয়া আছে
লাল আর সবুজ আর হলুদ মিশিয়া আছে এক সাথে।


অপ্রকাশ্য ভালোবাসা

তোমায় কতটা ভালোবাসলে
তুমি আমায় ভালোবাসা দিবে?
জানি না, জানতেও চাই না
কারন, আমি ভালোবাসি তোমায়
এটাই সত্য, সত্য, সত্য।

তুমি চাইলে চাঁদ এনে দিতে পারবো না
তবে চাঁদের আলোয় ভালোবাসা দিব।
আমার আমিত্বে সব অজানা
কারন, এতটাই ভালোবাসি তোমায়
তোমাকে নিয়ে যত কল্পনা।

তোমার সাথে কিছু তুলনা করবো না
কারন, তোমার রূপের উপমা শুধু তুমি!  
তোমাকে কতটা ভালোবাসি
অপ্রকাশ্যতাই রেখে দিলাম
কারন, তুমি তো আমাতেই বাস কর!


অপেক্ষা

আমি–আমার মনের ঘরে তোমার বসত এঁকেছি
তোমার খোঁজে, তোমার তরে, ছুটে–ছুটে গিয়েছি।
কোন পথেতে, কোন ঘরেতে, বাসা তুমি বেঁধেছ
সেই ঘরেতে আমার বসত নাহি তুমি রেখেছ।
আমার চোখের ঈক্ষন কেড়ে কোন পথেতে চলেছ
মনের সাথে দেহের খবর নাহি তুমি রেখেছ।

তুমি এক ঘরেতে প্রেম দিয়ে অন্য ঘরে থেকেছ
তুমি ভালোবাসার ধর্ম নিয়ে বেঈমানি যে করেছ।
আমার মত কত জনের মনে, আগুন তুমি দিয়েছ
ভালোবাসার যন্ত্রণা দিয়ে কষ্ট বুকে এঁকেছ।
প্রেম মানে কষ্ট ছাড়া আর কি তুমি দিয়েছ?
তোমার মত বেঈমান মেয়ে কত ঘরে গিয়েছ।

প্রেম মানে স্বর্গ-বিশ্বাস ঈশ্বরের দেওয়া আশির্বাদ
তুমি দেহের সাথে সংসার করে দিলে প্রেম অপবাদ।
তুমি বুঝলেনা মন, মনের কথা, মনের কত দাম
প্রেম আর মনের মিলন সৃষ্টি হয় ভালোবাসার নাম।
তুমি আমার বুকে দাগ কেটে, প্রেম করলে অপমান
পবিত্র ভালোবাসা নষ্ট করে তুমি হলে বড় বেঈমান।


আজ একেলা নিশিতে

আজ একেলা নিশিতে
তোর চোখে শত চুম্বন এঁকে দিব
ঘুম-ঘুম চোখে, মায়া ভরা মুখে,  
চাঁদ দিবে আলো সন্ধামালতির আড়ালে;
আজ একেলা নিশিতে
তোর চোখে-চোখ রেখে
কাটাতে চাই সুখ লীলা মেখে।

তোর হাতে-হাত রেখে_
মুখ রেখে এক পাশে
গোলাপি ঠোঁটের ঘ্রাণ
নিঃশ্বাসের সাথে মিশাবো;
আজ একেলা নিশিতে
ভালোবাসিব তোকে সুখ মেখে,
যদি আসবি বরই গাছের তলে।

গত নিশি স্বপ্নঘরে-দোষে
তোর সাথে সারা নিশি কেটে ছিলো;
আজ একেলা নিশিতে
আসবি কি বরই গাছের তলে?
শত চুম্বন একে দিব তোর চোখে_
মায়াবী মুখে।

শত চুম্বন এঁকে দিব গালে
রসনায়  গোলাপি ইন্দ্রিয় স্বাদ দিব,  
আজ একেলা নিশিতে ভালোবাসা দিব,  
যদি আসবি বরই গাছের তলে।

ঊরুর ঘরে আলপনার সাজ এঁকে দিব
নরম হাতে-চোখের ঈক্ষনে,
পায়ে আলতোভাবে আঙ্গুল বুলিয়ে দিব,
শরীরের সাথে শরীর মিশিয়ে,  
ভালোবাসা দিব,  
আজ আসবি যদি বরই গাছের তলে_
একেলা নিশিতে,  
সন্ধামালতির আড়ালে।


আজ এসেছি তোমায় দেখতে

আজ এসেছি তোমায় দেখতে
তোমার কপালের কালো টিপ,  
কত দিন দেখি নাই তোমায়
তোমার হাসি অপরূপ।

আজ এসেছি তোমায় দেখতে
তোমার মায়াবী মুখ,  
কাজল মাখা চোখ।
কালো চুলের কবরী
নিতম্বের সাথে গাঁথা চুলের করবী।

আজ এসেছি তোমায় দেখতে
তোমার পা-কালো জুতার পিতায় মোড়ানো
লাল চূড়ি হাত সাজানো।
লাল ঠোঁটের ঝাল
কত বছর দেখিনা তোমায়
তোমার আকাশ রঙ্গিন গাল।
আজ তোমায় দেখতে এসেছি।

সারা রাত জেগে কবিতা লিখেছি
ভেবেছি তোমায় নিয়ে,
কখন তোমায় দেখবো
আজ এসেছি তোমায় দেখতে।
তোমার অপরূপ মুখ
নাক ফুল, কানের দুল,
মায়াবী বাতাসে চুলের গন্ধ নিতে_
আজ এসেছি,-  
আজ এসেছি তোমায় দেখতে।


কত বছর পর

এত বছর কোথায় ছিলে, কোথায় নিলে ঘর?
কার ঘরেতে মন বেঁধেছ, চক্ষুদ্বয়ে বর।
স্বপ্ন ছিলো কত নিশর, ধূসর হয়ে যায়
তোমার খোঁজে কত বর্ষ, জীবন হলো ক্ষয়।

তোমায় নিয়ে কত কাব্য, গল্পের বাঁধি ঘর
তোমায় নিয়ে স্বপ্ন গুলি কষ্ট হলো বিবর।
পাখি আমার খাঁচা ছেড়ে, কার আকাশে খেলে?
আমার পাখি আমায় ছেড়ে কার ঘরেতে গেলে?
আমি কেঁদে-কেঁদে কত নিশি-প্রহর ভুলে যাই
তোমার লাগি পথে-পথে ফিরে-ফিরে চাই!
তুমি এক বারও কি আমার চোখে-চক্ষু রাখনি?
আমার চোখে তোমার লাগি প্রেমও বুঝনি?
মন ঘরেতে, প্রেম বসতে, তোমায় পুষে রেখেছি
ভালোবাসা এত বিবর, তোমার লাগি হয়েছি।
তোমায় কত ভালোবাসি, বোবা চিৎকার করেছি
তোমার লাগি কত কাব্য, মনের ভিতর এঁকেছি।

কত বছর খুঁজেছি তোমায়, কত সবুজ গাঁয়ে
আট প্রহরে তোমার কথা কানে শুধু বাজে!
নূপুর বাজে করুণ সুরে তোমার কোমল পায়ে
কার ঘরেতে সাজ এঁকেছ নববধূর সাজে?

এত বছর কোথায় ছিলে, কোথায় নিলে ঘর?
তোমার খোঁজে কত বছর, সময় হলো পর।
তোমার কপালে লাল টিপ, কানে জুমকা দোলে
হাতে চূড়ি, নাকে ফুল, অপ্রত্য বাঁধে কোলে।
আজ তুমি অন্য কারো, আমার থেকে দূরে
তবুও তোমায় ভালোবাসি বন্ধুর মত করে।



দূরের আকাশ

দূর থেকে চেয়ে আছি_
তোর চশমা পরা কোমল অপরূপ মুখে-চোখে
শত রমণীর ভিড়ে তোকে দেখি কত-শত নজরে,
দৃষ্টি পড়তে-পড়তে আরেক দৃষ্টি তোর চোখে।
তিন দিকে ভুলেও তাকাইনা;
এক দিকে আমার পুরো পৃথিবী-তুই
কত ভেড়া জাল এসে তোকে লুকিয়ে রাখে-দৃষ্টি থেকে
মাঝে-মাঝে হারিয়ে ফেলি ঈক্ষনের আড়ালে।
দূর থেকে খুঁজতে-খুঁজতে;
আবার কয়েক মুহূর্তের জন্য চোখের প্রান ফিরে আসে,
মন ও মনের সাথে কথা বলে, দেহের বিচ্ছিন্ন খবরে।

আমার কয়েক বার হিংসেও হয়েছিলো!
তোর আশেপাশে ঘুরাঘুরির মানুষ গুলিকে,
প্রনয়ের হিংসে, অন্য দেহের স্পর্শ।
তোকে দেখতে-দেখতে, নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি  
আমাকে-আমি খুঁজতে অন্য দেহের আনাগোনা,
তবুও তোকে দেখতে মন চায়।
দূর থেকে কাছে, কাছে থেকে দূরে
আড়াআড়ি চোখে, তোর নজরের বহু দূরে_
আমাকে হারিয়ে রেখেছি।

চার দিকে কোলাহল, শব্দের ঝংকার  
মনেও বাজে প্রনয়ের বীণা, তবলা_
তোকে দেখতে-দেখতে সময় পার।


হীরাপঙ্খি

কাশ ফুলের সাদা বনে, তোর বরণে ফুটে
আকাশ সাদা তোর চোখেতে, মেঘেরা দূর ছুটে।
তোর চরনে নদীর কোলে, ঢেউয়ে-ঢেউয়ে দেয় ধুয়ে
তোর চরণে নূপুর হাসে আমায় চেয়ে-চেয়ে।
সাদা মেঘের জুমকা দিবো, সবুজশ্যামল নলক
সূর্য সাজে তোর কপালে, টিপ পরানো দোলক।
কৃষ্ণ চুড়ার লাল শাড়িতে, কলমিলতার চুড়ি_
তোর গায়েতে সাজিয়ে দিবে চাঁদেরে দেশের বুড়ি।

তোর হাসিতে মধু আছে কথার কথা রাখি
আমার মনে পুষে রাখা তুই হীরাপঙ্খি।


প্রেমের ইতি

ভুলে যাও তুমি ভুলে যাও!
ভুলে যাও সে দিনের_
কোমল, সতেজ, লাল গোলাপ,
ভুলে যাও আমায়,
শত জনমে আসিবার।

শুধু রাখিবার দাও আমায়
তোমার স্মৃতি, মনের পন্থায়।
আমার মনের শহরে শুধু তুমি
তোমার পায়ের ধূলি!
হেঁটে যাও বার-বার, আঁখি তুলি।
এই প্রেম আমার ইতি
তুমি আমার প্রথম-শেষ গীতি।

ভালোবাসার মহা কাব্য রচনা করি
রোপণ করি ভালোবাসার বীজ,
বীজ থেকে গাছ , শাখা-প্রশাখা, ছড়াবে ছায়া,
সে ছায়া দু'জন মিলে করিবো খেলা-মায়া।
তুমি আমার ইতি_
ভালোবাসার শেষ গীতি।

পুরানো কলেজ, মাঠ, রাস্তা
দু'জনের মাখামাখি কত! ,
রাতের নির্ঘুমে কত ভাবনা_
তোমায় নিয়ে শত কাব্য রচনা।

পৃথিবীর যেমন একটি উপগ্রহ চাঁদ
তুমিও আমার মনের পৃথিবীর একটি উপগ্রহ।
তুমি আমার প্রেমের ইতি
জীবনের শেষ গীতি।


ভালোবাসা কাঁদে

আমি অস্বাদ তোর লয়ে?
বিস্তৃত মধু কাননে অবাধ্য মন, দুঃখে-দুঃখে    
আনমনে বিষাদ দেহ ক্ষয়, ভয়ে-ভয়ে
তোর শরীরের ঘ্রাণ দূর থেকে ডাকে, সুখে-সুখে।

তোর কথা ভেবে ভেবে হারাই কোন কুলে
আবার হবে কবে দেখা কোন সে ভোরে?
তোর চোখ দেখে দেখে সব যাই ভুলে
বার বার তোর তরে আসি ফিরে ফিরে।

শরীরের সাথে শরীর নয়, মনের সাথে মন
চোখের সাথে চোখের কথা, ভাষা হবে ব্যকরণ
চোখের ভাষা বুঝিসনা তুই, নাকি করিস অভিনয়
তোর জন্য মনের ঘর তিলে তিলে উদয়।

তোর ঘরে ভয়ে ভয়ে তোকে খুঁজি বারে বারে
তোর দেখা মিলে গেলে মন আর কাঁদে নারে
দূরে গেলে মরে মরে মন আমার মানে নারে
ভালোবাসা খোঁজে তোরে, তোর মনের দ্বারে-দ্বারে।

আজও কি বলবিনা লুকানো ভালোবাসার কথা?
তোর দুয়ারে কত অবহেলা, বেলা-অবেলা?
চোখ বলে সব অভিনয়, ভালোবাসা তোর হৃদয়ে গাঁথা
ভালোবাসা দে,না ঠেঁলে দূরে, করিসনা মোরে হেলা।


ধূসর জোছনা

আমি মিথ্যে নই_
মিথ্যের আড়ালে সত্য গুলো-নীরবে কাঁদে।
ঘৃণায় জমেছে ধূলিবালি, আর কত দূরত্ব নিবি?
জোছনার আলো ছিলো নাকো  মিছে,
তুমি আসবে জেনে, আঁধার আছে ঘুমিয়ে।

তুমি হেরে গেলে, আমিও হেরে যাই
দু'টি দেহে একটি জোছনা, করে মাখামাখি
আলো-আঁধারির খেলা আকাশের ওপারে
এপারে জোছনার আনাগোনা।

ভালোবাসা অদৃশ্য!  
দু'টি দেহের অস্তিত্ব খোঁজেই ভালোবাসার সৃষ্টি।

জোছনা দেখতে দেখতে, এক টুকরো মেঘ এসে
আড়াল করে দিলো-আলো,
তুমি নেই, ভালোবাসার পাশে
আজ আর আমি জোছনা দেখি না।
মনের আঁধারে আলো দিবে কে?
তুমি যে নেই, একাকিত্ত্ব রাতে
জোছনা দেখার স্বাদ জাগে
পাশে হাত দিয়ে দেখি তুমি নেই_
অদৃশ্য,
সত্যি তুমি নেই?
তুমি আছ হ্রদয়ে, জোছনা রাতের স্মৃতি হয়ে
ভালোবাসি তোমায়, ভালোবাসি জোছনা রাত।

তোমার সমাধিতে, জোছনা নেমেছে
দেখো একটু চোখ খোলে
না হয় আমার চোখে চোখ রেখে
আমি চাইনি আমাকে জিতাও
আমি হারতে চাই হারতে
তুমি চলে গেলে আমাকে হারিয়ে
আজ আমি জিতেও হেরে গেলাম
তুমিই জিতে চলে গেলে, আমায় কাঁদিয়ে,
আজ জোছনা দেখতে খুব ইচ্ছে করে।


আজও ভালোবাসি

আজও কি ভোর হয়নি?
নাকি; হারানো দিন গুলোতে স্তব্দ হয়ে আছো
ভুল করে কি এক বারও আমায় ভাবনি?
নাকি; অন্য দেহের সংস্পর্শে মিশে আছো!

না হয় ভুল করেছি আঠারের আগে
আজতো আঠারো পূর্ণ
আমার সবটুকু ভালোবাসা তোমার জন্য।

গত দিন গুলোতে ভুলে থাকতে পারেনি
স্তব্দতার মাঝে একটি একটি করে দিন গুনেছি
ভিতরে শত-ক্ষত চিৎকার শুনি
বোবা মনে সত্য প্রেমের ঘর এঁকেছি।

যদি ভাবো মিথ্যের আড়ালে প্রেম
তবে চোরাবালিতে আমার দেহ আবদ্ধ
জীবনের স্বাদ না হয় মরন যুদ্ধ।

চোখের জল দৃশ্য ক্ষণিকের জন্য
দাগকাটা মন ক্ষত–বিক্ষত_অদৃশ্য
তুমি তুমি বলে চিৎকার করে মন, আর নেই অন্য
ভিন্ন-অভিন্ন শুধু তুমি, না হয় সব শূন্য।



মুখোমুখি

আমার মুখোমুখি তুমি
তোমার মুখোমুখি আমি
চার দিকে তাকালে একটি চাঁদ
আর অনেক গুলি তারা
তবুও দু’জন মুখোমুখি।

লজ্জায় লাল একটি মুখ
চোখে চোখে তাকালে
দেহ শিহরে উঠে
আর দীর্ঘ শ্বাসে
ভালোবাসার মুখ আরো কাছাকাছি
ঠোঁটের আবাস_
লজ্জায় মাখামাখি
তবুও দু’জন মুখোমুখি।

সে রাত স্মৃতি মাখা রাত
যে রাত আকাশ ছিল কালো
তোমার মুখ ছিল আলো
তুমি শুধু এদিক ওদিক
পাচারি করছিলে
আমার হাত ধরে
চন্দ্রবৃন্দুহীন ছাদে  
তবুও দু’জন মুখোমুখি।


ভাবনা

একটি কবিতা লিখবো আমি
           তোমায় নিয়ে_

সাজানো–গোছানো, পরিপাটি সংসার
শারীরিক হিমালয়ের শান্ত তোমার দেহ ঘর।
ঝর্নার মত চলন্ত তোমার বেসামাল দৃষ্টি,
          তুমিতো ঝর্না_
পাহাড়ি কন্যা, দূর আকাশের পান্না।

তুমি অরণ্য, সবুজ শ্যামলার সঙ্গ
তুমি ফুল, জেসমিন ফুল।
তুমি গোধূলি মাখা বিকেলের শান্ত ছায়া
মন ভুলানো চাহনি, চক্ষু মায়া।

তুমি চাঁদ, তারারা তোমার সঙ্গি
দূরের আকাশে আমি একেলা পাখি
চাঁদ দেখিব বলে উড়ে বেড়াই ঢঙ্গি।
মেঘ জমা আকাশে, বেখেয়ালি মনে
বৃষ্টি নামে চাঁদের এপারে ঘাসে
তোমায় দেখি—ভাবি, চাঁদ মুখি_
যত আসুক ঝড় শ্রাবণে।


ক্ষমা কর মোরে

আমার শির নত করি তোমার সম্মুখে
ক্ষমা করো আমায়, ক্ষমা কর সব দুঃখে।
তোমার চোখে দর্শন করার যোগ্য আমি নই
আমার দেহে পাপ এত, আমার দেহে সই
তোমার স্পর্শের বাহিরে আমার দেহ ভই
শুধু একটু ক্ষমা করো আমায় যত দূরে রই।

যত টুকু দোষ আমার ছিল, সবাই ছিল নির্দোষ
ইচ্ছে মত বকো আমায়, মিটাও মনের জোশ।
একটু কথা বলো তুমি, চুপ করে থেকো না
আমি যে আর পারিনা সইতে, দিওনা আর যাতনা।
আমার দোষে জ্বলিব আমি, জ্বালাও আমার প্রাণ
তুমি কেন জ্বলিবে দুঃখে, অন্ধকারে বিরহের গান
কর আমায় ক্ষমা, কর প্রিয় মম সুখ দান।

অন্ধকারে দেখি আলো, কালো আমার চোখে
আমি মানুষ আরও কালো, কালো আমার সুখে।

শুঁকনো পাতার ঝনঝন শব্দ কানে করুণ বাজে
তোমার মুখের মিষ্টি কথায় ডাকো নতুন করে।
তোমার চরণ লেগেছিল শিশির ভেজা ঘাসে
হলুদ পাখি খেলা করে সন্ধ্যা মালতির সাথে।
সন্ধ্যা তারা উঠেছে আজ তোমার আলো পেয়ে
দু’জন মিলে চাঁদ দেখিব দূরের কোন গাঁয়ে।

সবি আমার স্বপ্ন ছিল, স্বপ্নে কাটে ভোর
তোমার কথা মনে পড়ে, তুমি অন্য দূর।  
সুখে থাকো তুমি, বহু সুখে, যত দূরে রবে
সৃষ্টি কর্তার কাছে আশির্বাদ_
ক্ষমা করো মোরে, ক্ষমা করো, ক্ষমার কর ভবে।




পাগল প্রেমিক

জোনাকিরা আজ রঙ্গিন হয়ে
নিঝুম রাতের তারা গুণে।
ফুল বাগানের ভ্রমর আজ
উড়াল পারে নতুন ফুলে।
নতুন প্রেমিক পাগল হয়ে
খোঁজে তার প্রেমিকারে।
প্রেমের ভেলা বহিব আজ
প্রেম যমুনার তীরে।
দু’জন আজ রং মাখাবো
কৃষ্ণ চূড়ার তলে।
নামটি সাথী, হৃদয় আঁকি
মুখটি চাঁদের বাতি
ক্যাশ তোমার অমানিশি
বাহু দু’খানা গোলাপের পাপড়ি।
আমার গাঁও, তোমার গাঁও
একটু খানি দূরে, যদি বলো_
আসবো আমি বকুল তলার মাঝে?
শিশির ঝরে, প্রভাত হাসে
স্বপ্ন দেখি আকাশ ভেসে।
মুখটি তোমার কত যে মায়া
শুধু ভাবনায় কাটে সময়ের ছায়া।
পাগল আমার মন
করিনা পাগলামি
শুধু এক বার বলো ভালোবাসি!


হটাৎ নেমে আসা অন্ধকার

আমার স্বর্গ ছুঁয়া প্রেম
নরকের পদতলে মিশিয়ে দিলে
সত্যের পরাজয়, মিথ্যের দাম?

অন্ধকারে পথ চলা
উড়ো চিঠির আত্ম চিৎকার, না বলা কথা।
মিশে যাওয়া আকাশ
দুর্স্বপ্নের বিরক্ত বাতাস।
নির্ঘুম রাত, একলা ছাদ
স্মৃতির সন্ধানে আপদ।
চোখের দৃষ্টি, মায়া মুখ
জল নেই চোখের কোণে, অবিরাম দুঃখ।
পাশাপাশি হেঁটে চলা
আঙ্গুলে-আঙ্গুলের স্পর্শতা  
আজ আর নেই, নেই তোমার চঞ্চলা।

তুমি চলে গেলে আমায় মিথ্যে করে_
অন্ধকারের নিষিদ্ধ ঘরে ঠেঁলে,
আমি আজ অন্ধকারে, আমায় নরক খেলে।



লাশকাটা ঘরে অসমাপ্তি প্রেম

শরীরের সাথে শরীরের গাঁথনি
মনের সাথে মনের আর কত দেরি?  
প্রেমের সাথে অবহেলার আড়ি
প্রেম পিপাসায় জীবন কোরবানি।

তুমি আমার, আমি তোমার, শ্রেষ্ঠ বিশ্বাস?
তুমি ভাবো কার লয়ে, তোমার আশ্বাস।
তোমার নিশ্বাসে বিশ্বাস খোঁজে—উদাস
প্রেম বুঝি এমনি না দেখিলে মন হায় হুতাশ।

লাশ কাটা ঘরে আমার নিস্তব্ধ লাশ
মনের ঘরে তুমি—নিসর্গ করো বসবাস,
দেহ কেটে চার পাশ_
মন আমার যায় না কাটা দেখি খোলা আকাশ,
দেহে ক্ষত-বিক্ষত, উড়ায় প্রেমের বাতাস।

ক্ষত-বিক্ষত, রক্তাক্ত শরীর, নরম মন
মস্তিষ্ক ছিন্নভিন্ন, খন্ডিত লোহিত কথন।
খবরের পাতায় বেওয়ারিশ লাশ_
নেই কোন তালাশ,
পাঠকের মুখে দীর্ঘশ্বাস।  
পোস্টমর্টেমে কোন্ বংশের বাস
বিস্ময়কর,  দেহের ভিতরে প্রেমের সর্বনাশ!
অজানা তথ্য, অতীতে প্রেমের চাষ,
স্বর্গ-নরক কোন্ পারে বাস?
কেয়ামত থেকে কেয়ামত ভালোবার লাগি ফাসঁ।



অভিশাপ

                  ১
অনেক বছর আগের দাগ কাঁটা একটি মনের অভিশাপ
আজও পিছু ছাড়েনি_
বিষাক্ত অভিশাপের দারু
জীবনের ভাঙ্গন।

বেদনারা বাসা বেধেছে আঁধারের হয়ে
রঙ্গিন দিনের ঝলসানো বালি উড়ে_
চোখে মুখে অভিশাপের চাপ মেখে
কবেকার অবহেলিত প্রণয় অবিচলে_
মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে অভিশাপ।

               ২
কে তুমি, কোন কালের অভিশাপ?
অতীতের পাপের পাল্লা কি বড্ড ভার?  
একাল—সেকাল, কিসের কাল?
দু'হাতে আমার রাশি ফল।
দুঃখ আছে ও মশাই;
পাপের পাল্লা বড্ড বারাই
অভিশাপ—তো দেখি রেখায়
অনেক দিন আগের দাগ কাঁটা বিষণ্ণ প্রণয়।

গণকের কাছে;—
আমি বৃশ্চিক রাশির জনক  
ধাপে ধাপে বেদুঈনদের বাহক
পদতলে বাধে কাটার পাবক
পথভ্রষ্ট রুক্ষের দৃষ্টি মাদক।  

আজ আমি মত্ত, ক্যান্সারের অনু বিষাক্ত লয়ে
চার দিকে আঁধার, আলোর ক্ষয়ে
জীবন–যৌবনা দিলাম তারে
কালো ধোঁয়া সিদ্ধির দারে।  

আমি বিবর হয়ে কাকের মত উদাসীন অন্ধকার  
অতীতের অভিশাপ আমাকে খুবলে খুবলে খায়
অভিশপ্ততা বিষাক্ত ধোঁয়া উড়িয়ে চোখে চায়
এ কালের প্রণয় আমাকে বাঁধলো না—সুখ আর।  



অবহেলা

অবহেলা করো মোরে, করো মোর প্রাণে
তৃষ্ণা মিটাইয়া কৃষ্ণ কাননে
বিছাইয়া আঁখি বাধিয়াছ ঘর কার মনে।
রাগিণী কাটাইবো তোমার সাথে দিন-রজনি
পড়াইবো মঙ্গল গ্রহের পাথর খনি।  

কেনো এলে, কেন মনে ইন্দ্র জ্বাল বুনে পুষলে?
কেনো মোর মন খানায় চন্দ্রের গন্ধ দিলে?
বন্ধ বক্ষে তোমার চরণ পুষ্প দোলে।
কুন্তল এলিয়া পূর্ব গননে মেঘ ধরিলা
ভরিয়া দিলা অন্তর অপরূপ লীলা।

আজ কোথায় তুমি, চোখের আড়ালে
রংধনু সং সাজে তোমার কোপালে।
আমার মন খানা নদীর ঢেউয়ের মত করে খেলা
এপার-ওপার তোমার ছায়া, বাসে ভেলা
শুধু আমি নেই সেই ছায়া, করো অবহেলা?

নেই কোন প্রমাণ, নেই কোন দলিল
শুধু ভালোবাসি তোমায়, ছিঁড়ে দেখো মোর দিল।

ওগো আমার হিরানি আর দিওনা দূরে ঠেঁলি
একের অধিক তাহা অতীত, তুমি মোর ‘স্বরনালী’
আমি তোমার প্রেমে ভিখারি দেখো আঁখি তুলি।



বিপরীত মুখি

কালের আবির্ভাবে শত্রুর তরবারি দ্বার
বার-বার ছুটে যাই চক্ষু বালি কার?
আমার বিপরীত মুখি তুমি—ব্যাবধান চার
আমি যার, তুমি কার, ছিলে কবেকার?

শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি মন ধূসর ঘাসে
মন তো থাকে না দেহে—উড়ে আকাশে_
তোমার খুব কাছে বিহঙ্গ হয়ে চোখে মিশে।  

সাদা মেঘের ঘোড়ায় চড়ে নীল হয়ে আছি
চাঁদ দেখার স্বাদ জাগে সাদা চোখ রচি।  
মাঝে-মাঝে কালো মেঘের হামলাতে মরে
বৃষ্টি হয়ে ঝরবো—তোমার চোখে অঝরে।

দক্ষিনের বাতাস মিশে যায় উত্তরের হিমালয়ে
আমার শরীরে নরম বাতাস না ছুঁয়ে,
আমার বিপরীতে তোমার শরীরে লেগে আছে_
মৃদু বাতাস; হিমালয়ের মাতা নাচিতেছে।  

মহাকর্ষ সূত্র;
প্রত্যেকটা বস্তু–বস্তুকে আকর্ষণ করে নিজের করে
শুধু টানে না আমায় তোমার চোখ নজরে  
আমার লয়ে সব বিপরীত মুখি
থাকো তুমি দূর হিমালয়ে পাখি ঘাসের মত সুখি
আমার সব সুখ, তোমার নজর মায়াবি আঁখি।


দেহ ভালোবাসা

তোমার ভালোবাসা মিথ্যে ছিলোনা
মিথ্যে ছিল তোমার দেহ
যৌন উত্তেজনায় তুমি উত্তেজিত
অন্যের হস্তে লাঞ্ছিত।

কাম কাজে দেহ তোমার ঘুরে
আমার স্পর্শের বাহিরে
চোখের দর্শনে পাপ পূর্ণতা
ভালোবাসার দেহে স্পর্শতা
গভীর মনের প্রবণতা।

তুমি করেছো দেহ ব্যবসা অন্য ঘরে
আমার ঘরে মরিচিকার চিৎকারে
ভালোবাসার ক্ষতরা
মাকড়সার জালে আটকানো।

বন্ধ ঘরে আমার অঙ্গ নড়ে
কখনও দ্বার ভঙ্গ করে বের হতে চায়নি
কারণ; আমার ভালোবাসা রুক্ষচর ছিলোনা_
ছিলোনা দেহ লোভের আখাঙ্খা।

‘তোমার দেহ থেকে পাপের গন্ধ ছড়ায়’
ছড়িয়ে পরেছে সারা শহরে_
নরকের বিষন্ন গভীরে।


একটি শব্দ সত্য

আমি বিশ্বাস করি না পৃথিবী
আমি বিশ্বাস করি না আমাকে
আমার সব বিশ্বাস অকালে মরে গেছে

আমি উন্মাদ, পাগল, বরবাদ?
আমি ভুলে গেছি সব অপবাদ  
আমি অশ্লীল, বখাটে,
আমি অহংকার, সংঘাত  
এটাই সত্য, অন্য সব অভিনয়।

আমার দেহে শুধু মিথ্যা মিথ্যা  
সত্য কি?
আমি নিজেই অবাক!
বিশ্বাস করি না সত্য সত্য
মিথ্যা আমার সংসার।

আমি নজরুলের-বিষের বাঁশি, অগ্নি বীণা,
জিবনানন্দের ধূসর পান্ডুলিপি_
এক দিন হতে ছেয়েছি?
মিথ্যে মিথ্যে মিথ্যে_
আমি হতে চেয়েছিলাম দেবদাস, মজনু
পাগল প্রেমিক?
সব মিথ্যে মিথ্যে মিথ্যে
আমার কথা, আমার লিখা,
আমার আমি তাও মিথ্যে?
সত্যি _____ সব মিথ্যে!

শুধু একটি শব্দ সত্য, ভালোবাসি তোমায়।