কবিতাঃ স্রোতস্বিনী ।
লেখকঃ এস,এইস,মানিক।
স্রোতস্বিনী, তুমি চিরন্তন প্রবাহ,
অনন্ত যৌবনের দিশারি—
তোমার বুকে আঁকা অগণন তরঙ্গের রেখা,
কখনো আবেগে উচ্ছ্বাস, কখনো বিষণ্নতার মর্মর।
তুমি যখন পাহাড়ের বুক ছিঁড়ে নেমে আসো,
নব যৌবনার মত তুমি হই বেগবান—
তোমার চলার পথ চিহ্নিত হয় ধ্বংসে,
যেনো কোনো আগুনের স্রোত, অজানা অমিত শক্তি।
তোমার বুকে শঙ্খিনী খেলে যায় সহজেই,
জলতলে নুপুর পরে বাজিয়ে তালে তালে,
তুমি কূলে কূলে গেয়ে যাও নিবিড় গানের সুর,
সকল দ্বন্দ্ব ভুলে প্রেমের শান্তি আহ্বানে।
স্রোতস্বিনী, তুমি আমাদের মাটির সুরে বাঁধা,
তোমার তরঙ্গ যেন মাতৃভূমির স্পন্দন—
কখনো স্নিগ্ধ, কখনো কঠোর, আবার কখনো কোমল,
তোমার স্তব্ধতার মাঝে লুকিয়ে আছে প্রাণের গান।
তুমি কি জানো, নদী কিভাবে হই নারী,
কীভাবে নীরবতা হয়ে যায় কথা,
তোমার জলরাশির নিচে বয়ে চলে নিঃশব্দ কান্না,
যার সুরে সারা পৃথিবী অবাক বিস্ময়।
কালের প্রবাহে তুমি নিত্য অমর,
তোমার সাথে আমরা ভাসি,
তোমার মাঝে সব প্রহরের রহস্য লুকিয়ে থাকে—
স্রোতস্বিনী, তুমি কেমনভাবে হৃদয়ের গভীরে কথা বলো!
তুমি কোনো গোপন বার্তার প্রেরিকা,
যার কূলছাড়া টানে ভাসে আমাদের মন—
তোমার নদীর বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে থাকে বেদনার গান,
তোমার কুলে জমে থাকে আমাদের স্মৃতির ছোঁয়া।
তুমি শেষ নও, তুমি স্রোতের অন্তহীন ধারা,
আমরা তৃষ্ণার্ত তবু তোমার আশ্রয়ে,
তুমি যেন প্রেম, তুমি যেন শাশ্বত রহস্য—
তোমার সাথে একাকী, অনন্ত পথে, আজীবনের মেলা।