কবিতাঃ নীলাম্বরী।
লেখকঃ এস,এইস,মানিক

নীলাম্বরী, তোমার নামের সাথে যেন মিশে আছে
নীলচে রাতের আকাশে ফুটে থাকা গ্রহ-তারার ভাষা।
তোমার চোখে দেখি চাঁদের মায়া,
যেন তা কেবলই আমার জন্য লুকিয়ে রাখা।
তোমার কণ্ঠে ঝরে অশ্রুভেজা সুর,
যে সুর ডেকে আনে অজানা পথে চলার দূর।

তুমি যখন নীল শাড়ি পড়ে,
নীল নদীর ঢেউ তখন মগ্ন হয়ে থামে।
পাহাড়ের কালো ছায়াগুলো জানালা দিয়ে আসে,
চাঁদ আলো দেয় তোমার শাড়ির কোণায়।
নীলাম্বরী, কে তুমি?
কোন দিগন্ত থেকে এসে তুমি ছুঁয়ে দিলে হৃদয়ের গান?

আমি যে পথ চিনি না, তবুও প্রতিদিন হেঁটে যাই,
নীলাম্বরীর কাছে যাওয়ার একটি অলীক মোহে।
জানি, একদিন কোথাও গিয়ে শেষ হবে এই পথ,
আর সেখানে অপেক্ষা করবে নীলা, এক স্বপ্নছায়া।
তবে কি তুমি মানুষ, না প্রকৃতি?
তোমার মাধুর্যে আমি মেঘলা সন্ধ্যায় হারিয়ে যাই।

একদিন ঝড়ো বাতাসে শুনলাম তোমার নাম,
“নীলাম্বরী, ফিরে এসো।”
বৃক্ষদের পাতারা কেঁদে উঠল,
পাহাড়ের খাঁজে নেমে এলো বিষণ্ন শীতলতা।
তুমি কি চেয়েছিলে আমায় ভুলে যেতে?
নাকি নীলাকাশে এঁকেছিলে আমারই জন্য প্রতীক্ষার মায়াবী রেখা?

তোমার জন্য আমি লিখি কবিতা,
আঁকি শিল্পকর্ম, গাই গান।
কিন্তু প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি রং, প্রতিটি নোট
শেষ হয়ে যায় তোমার মতো গাঢ় রহস্যে।
নীলাম্বরী, তুমি কি জানো?
তোমার নামের মধ্যেই গোপনে মিশে আছে
আমার সমস্ত হারানোর আনন্দ।

তুমি এসেছিলে স্বপ্নে, এক অনন্ত জোছনায়,
তোমার হাত আমার হাতে—
দিগন্তজুড়ে ছড়িয়ে ছিল নদীর ধবধবে তীব্র রূপালি।
আমি দেখেছি, তুমিই সেই নীল আলো,
যার কাছে ধরা দেয় সময়, আর থেমে যায় ক্ষণ।
তোমার আকাশঘেরা প্রেমে ডুবে,
আমি এক অনন্ত রহস্য হয়ে থাকি।

নীলাম্বরী, তুমি কি আমার?
নাকি শুধু সেই অপরূপ, অপার্থিব গান
যা প্রতিদিন শুনি, আর রাতের বুকে জ্বলে উঠি?