কবিতাঃ মহাকাল
লেখকঃ এস,এইস,মানিক
সময়ের স্রোতে ভেসে যায় দিন,
ধূলির গানে মিলে শত স্মৃতির বীন।
কখনো নদী, কখনো সমুদ্রের ঢেউ,
মহাকাল বলে—সব কিছু থেমে গেল এক সময়ে।

তারার পানে তাকিয়ে থাকে মন,
আলো ছুঁতে চায়—আধারে অম্লান।
বিশাল আকাশে চিরন্তন পথ,
মহাকালের অঙ্গে লেখা চিরন্তন রথ।

জন্মে মানুষ, হারায় পরিচয়,
ক্ষুদ্র এক প্রাণের ক্ষণস্থায়ী চৈতন্য।
মাটি থেকে উঠে ফের মাটিতে মেশে,
মহাকাল হাসে—এটাই তো তার দেশে।

পাহাড়ের উচ্চতা, সাগরের তল,
সব মুছে দেয় এক শ্বাসের টলমল।
রাজা-রাণী থেকে পথের শ্রমিক,
মহাকালের সামনে সবাই সমান এক।

ঘড়ির কাঁটায় চলা আমাদের সময়,
তবু মহাকাল তাতে করে না কোনো হ্রাস।
সে অবিচল, চিরঞ্জীব, নিরাকার,
মানবের ভবিষ্যৎ তার হাতে যার।

তবু মানুষ স্বপ্ন দেখে রাতভোর,
অস্থির জীবনে পেতে চায় মর্মের ধ্রুপদ।
মহাকাল বলে—"থামো একবার,
জীবনের সত্য বুঝবে, যদি দেবে আমার দরবার।"

তার হাতে আছে শতাব্দীর চিত্র,
মুছে গেছে কত শত শহর ও গ্রাম।
তবু মানবের পিছু হাঁটে চিরকাল,
কালের স্রোতে ভাসে ইতিহাস নিরন্তর।

মহাকাল ঠাকে চেনা অসীম রাগে,
তবু মৃদু স্বরে বলে, "এটা নেহাত ভাগ্যে।
তোমার যা করণীয়, এখনই করো,
আমি আছি শাশ্বত, তোমার পথ ধরে রহো।"

শেষ নেই, থামাও যায় না তাকে,
মহাকাল ঢেউ তোলে মানবের বাঁকে।
যে তাকে বুঝে সে জিতেছে সব,
সে অমৃতময় এক অক্ষয় জ্যোতির রব।