তুই তো শুধু নিঃশব্দ দাঁড়িয়ে,
হাসিস না, কাঁদিস না—কিছুই তো চাস না,
তবু চোখ তোর কী এক অভিমানে ভরা,
যেন শত শব্দও সেখানে হার মানে চিরকাল!

তোর পেছনে কার হাত, কিসের ইতিহাস?
কে বানাইছে তোকে এই রকম নিঃশ্বাসহীন?
তুই জানিস না—তবু তোর গড়নে লুকায়
একটা গল্প, একটা কান্না, আর এক জীবনের চিন।

তোর বুকের ভেতর কাঠ—তাও যেন বাজে
একটা নিঃশব্দ ঢাক, কোন উৎসব ছাড়াই,
তোর কোমল চেহারায় বিষাদের রেখা
যেন সারা পৃথিবীর শোক একাই বইসাই।

"হয়তো তুইও একদিন মানুষ ছিলি—
চোখে স্বপ্ন, মুখে গান, হৃদয়ে প্রেম,"
কেউ হয়তো তোর সেই গানে হেসেছিল একদিন,
আজ শুধু পুতুল, কন্ঠ বিহীন সেই ছায়ার নাম।

তোর হাত তোলে না, তুই কথা বলিস না,
তবু কেমন করে যেন বুঝিয়ে দিস সব—
এই সমাজের কাঠামোতে কতজন মানুষ
আজ কাঠের পুতুল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে চুপ!

তুই একা না, আমরাও তো চলি সুতোয় বাঁধা,
নাট্যশালার চরিত্র হয়ে গেছি কবে যে জানি না।
জীবনের রঙমেলাতে সবার মুখে হাসি,
ভেতরে কাঁদে এক কাঠের মন, কেউ দেখে না!

"যারা ভাবে ও তো পুতুল, কিসের ব্যথা তার?"
তাদের জন্য তোর চোখে জল জমে কখনো,
কারণ পুতুলও জানে—ভালোবাসা কী জিনিস,
শুধু সে বলতে পারে না, হৃদয় চিৎকারেও।

তোর দিকে তাকিয়ে আমি ভাবি—
তুই যদি পারতি কথা বলতে,
তোর গল্পে হয়তো আমি নিজেকে পেতাম,
একটা জীবন্ত ছায়া, কাঠের ভেতর হারিয়ে যেতাম।

তোর নীরবতা আমাকে জাগায়—
যেমন মৃত কবরে বাতাস হঠাৎ হাহাকারে কাঁপে,
তুই কাঠের পুতুল, তবু তোর ভেতরে
একটা জীবন আজও ধুকধুক করে বাঁচে।