কবিতাঃ এক গুচ্ছ কদম আর এক কাপ চা।
লেখকঃ এস,এইস,মানিক।
রাত যেন চুপিসারে এসে নামল নিস্তব্ধ নদীর পাশে,
কদম ফুলের ঘ্রাণে মেশা বৃষ্টি-ভেজা বাতাসে।
তারার মৃদু আলো গোধূলির কোল থেকে ছিটকে পড়ে,
এক ঝলক হাওয়ায় যেন স্মৃতির পাতা খুলে যায় আরও জোরে।
ছুটে আসা সেই কদম ফুলের গন্ধ—
অপরিচিতের হাত ছুঁয়ে পেলাম তার বন্ধ।
দূর হতে দেখা তার ছায়া, চেনা-অচেনার মাঝামাঝি,
হাসি যেন অভ্রভাঙা রোদের মতো লাজুক মুগ্ধ আলাপ সাঁজি।
সে হাতে নিয়ে এলো এক গুচ্ছ কদম,
আর হাতে ধরা ধোঁয়া ওঠা এক কাপ চা—স্নিগ্ধ যমুনার মতো।
তার চোখে এক অজানা ব্যথার ছায়া,
যেন কোনো গল্প বলবে, তবে বলতে ভয় পায়।
আমরা দুজন বসে রইলাম নদীর ধারে,
কদমের সুগন্ধ যেন মিশে গেল নীরবতার হিমপ্রহরে।
তাঁর দেওয়া চায়ের কাপে তুলে ধরি এক চুমুক—
তাতে মিশে থাকা রহস্য, যেন কোনো পুরনো মুখ।
তুমি কে? কেন এই চায়ের সাথে মিশিয়েছ এ গন্ধ?
তার হাসি যেন ছন্দপতনহীন নদীর মতো রন্ধ্র।
"আমি কেবলই এক আগন্তুক, এক রাত্রির পথে ভ্রমণকারী,
তোমার একাকিত্বে মেশাতে চাই একটি ছোট্ট ধাঁধার কাব্যধারী।"
তার কথা যেন গুনগুন বাতাসের সুর,
আমি বলি, "কদমের নরম স্পর্শে কেন এই রাত অন্ধকারে দূর?"
সে হেসে বলে, "কখনও কখনও ফুল নিয়ে গল্প বুনে স্বপ্নেরা,
চায়ের ধোঁয়ায় লুকানো থাকে সেই স্বপ্নের অস্পষ্ট গহ্বরা।"
রাত গড়াল, তবুও ফুরালো না সেই কথার ছড়ানো ডালপালা,
কদম ফুল আর চায়ের ধোঁয়ায় বুনে চলি এক গভীর ভালা।
সে একদিন হারাবে জানি, এই রাত থাকবে এক রূপকথার স্মৃতির মত,
তবুও তার দেওয়া কদম গন্ধের সেই রহস্যে মন থাকে জড়িত।
আমাদের কথা আর হয়তো কেউ শুনবে না,
তবে এই কদম আর চায়ের ধোঁয়া একদিন গল্প হয়ে থাকবে ঠিকানা।