কবিতাঃ দেবদাসের পার্বতী।
লেখকঃ এস,এইস,মানিক


তুমি কি জানো, পার্বতী, অশ্রুজলে সিক্ত সে রাতে,
পথের ধুলোয় মিশেছিল প্রেম, কাঁপন উঠেছিল বাতাসে।
তোমার গলায় মালা গাঁথা হয়নি তো দেবদাসের হাতে,
তবু মনে রেখো, তার হৃদয় গেয়েছিল তোমারই প্রার্থনায়।

চোখে ছিল জল, মনেতে বিষাদ, ভাঙা প্রাণে ব্যথার গান,
অবুঝ ভালোবাসা দগ্ধ হলো সে কালের কঠিন পরিমাণ।
কতবার বলো পার্বতী, সে তোমার নাম ধরে ডেকেছে?
তুমি কি শুনেছিলে কান পেতে? নাকি নিয়তির ছলে ভেসেছ?

চোখের কোল শুকিয়ে গেছে, কিন্তু মন তো শুকায় না,
দেবদাসের বুকের মাঝে এক গোপন ব্যথার বাহানা।
সেই যে রইলে দূরে দূরে, হৃদয় ছিল পরাধীন,
তবু সে প্রেম ছিল না মিথ্যে, ছিল না কোনো ঋণ।

কাঁটায় ছিঁড়ে গেছে জীবনের ডালি, ছড়িয়ে পড়েছে ফুল,
তুমি ছিলে অধরা, দেবদাস রইল কেবল স্মৃতির কূল।
যে পথে চলে গেল সে একা, তার দুঃখের ছিল না সাথি,
তোমার জন্য সে চোখের জল দিয়েছিল তবু প্রণতি।

তুমি ছিলে আলো, দেবদাস ছিল এক আঁধারের ছায়া,
তোমার পায়ে চুমু খেতে চেয়েও ফিরেছিল সে নিরাশায়।
পূজার মন্ত্রে উচ্চারিত হলে না, ছিল শুধু মনের পূজা,
তোমার প্রেমের কুঞ্জ ছিল তার কাছে, অমল অশ্রু-দূজা।

আজও যদি শোনো দূর বাতাসে, কাঁপে তার গভীর আর্তনাদ,
পার্বতী! সে তো মিশে গেছে ধরণীর অশ্রুহীন জলস্রোতধারায়।
তবু তার সেই ভালোবাসা, অবিনশ্বর মায়ায় আঁকা,
দেবদাসের পার্বতী তুমি, তার অন্তিম নিশ্বাসে বাঁধা।

সেই গল্প আজও বয়ে চলে, প্রেমের এক মায়াবী আখ্যান,
দেবদাসের চিরন্তন পার্বতী, অমর হলে তুমি তারই জবান।