শহরের কোলাহল, অশান্ত গতি,
যেখানে বৃক্ষও শিখেছে আর্তনাদ পুঁতির শৃঙ্খল গাঁথি।
তবু দূরে কোনো এক নির্জন বনে,
এক বৃক্ষ মানব চুপচাপ গড়ে গৃহ তার স্বপনে।
চোখে তার সবুজের ছবি আঁকা থাকে,
শাখায় ঝুলে শিশুর হাসি জমে থাকে।
হৃদয় তার কাঁদে পাখির গান,
ঝড়ে সে ওঠে পূবালি হাওয়ার ছন্দে প্রাণ।
বাকল তার মাটি ছোঁয়া অভিমানী খোল,
প্রতিটি দেহরন্ধ্রে ধারণ করে পৃথিবীর রোল।
পত্রপল্লবের গভীরে লুকিয়ে রাখা সুখ,
শীতের নরম কুয়াশায় বিলায় সে উষ্ণ মুখ।
তার ডালপালা মেলে দেয় আশ্রয়ের ছায়া,
তাকে ঘিরে গড়ে উঠে আকাশজোড়া মায়া।
শিকড়ে তার জমা থাকে অনন্ত ইতিহাস,
নদীর গান, মাটির গন্ধ আর বৃষ্টির আরশ।
তবু কী লড়াই, কী বিরোধ, কী অপমান,
মানুষ নামের এক ভয়াল জঞ্জাল বাহন।
কেটে নেয় তার হাত, ভেঙে দেয় বুক,
তবুও সে দেয় ছায়া, ফুলে ভরে তুলে তার সুখ।
হে বৃক্ষ মানব, তোমার ত্যাগ অনন্ত,
তোমার অস্তিত্বে বেঁধে যায় জীবনের ছন্দ।
তুমি আছো বলে আজো প্রাণ গায় গান,
তুমি আছো বলে এ পৃথিবী আকাশ ছোঁয়া দান।
তাই আজ এ কাব্য আমার নিবেদন,
তোমার প্রতি সিক্ত হৃদয়ের আর্দ্র ভাষণ।
বৃক্ষ মানব, বেঁচে থাকো তোমার নিজস্ব রূপে,
পৃথিবীর কবিতায় হোক তুমি চির অম্লান স্মৃতিতে।