ইট-কাঠের খাঁচায় বন্দী ক'জন বৃদ্ধ প্রাণ,
স্মৃতির ঝাঁপি খুলে দেখে হারানো অভিমান।
শিশুর মতো মনগুলো আজ কাঁদে অঝোর ধারায়,
সন্তানের অবহেলায় জীবন কাটে অসহায়।
ছোট্টবেলার হাত ধরে হাঁটা, প্রথম বুলি শেখানো,
ঘুম না আসা রাতে মায়ের গান, গল্প শোনানো।
বাবা-মায়ের ত্যাগে গড়া সুখের নীড়খানি,
আজ যেন অচেনা, সেখানে নেই তো দামদানি।
চোখের কোণে জল জমে, মুখে নেই তো হাসি,
বৃদ্ধাশ্রমের চার দেওয়ালে বন্দী দীর্ঘশ্বাসই।
খাবার টেবিলে শূন্য থালা, নেই তো প্রিয় মুখ,
একাকীত্বের যন্ত্রণায় বুকটা হয় বিমুখ।
জানালার পাশে বসে দেখে বাইরের রঙিন খেলা,
মনে পড়ে হারিয়ে যাওয়া সোনালী সেই বেলা।
সন্তানের কণ্ঠ শোনার আকুল প্রতীক্ষায়,
ক্লান্ত চোখ বুজে আসে, নিঝুম অপেক্ষায়।
ফোনটা আজও বেজে ওঠে, অচেনা কোনো নাম,
ভুল করে আসা ফোন, তবুও জুড়ায় মনপ্রাণ।
একটু স্নেহ, একটু আদর, এই তো চাওয়া ছিল,
সন্তানের ব্যস্ত জীবনে সেটুকুও না মিলল।
তবুও তারা স্বপ্ন দেখে, একদিন সব হবে ঠিক,
সন্তানেরা ফিরবে ঘরে, ভাঙবে না আর দিক।
বৃদ্ধাশ্রমের দরজা খুলে ফিরবে আপন নীড়ে,
ভালোবাসার বন্ধনে জীবন যাবে ধীরে ধীরে।
কিন্তু বাস্তবতা বড় কঠিন, বড়ই নির্মম,
বৃদ্ধাশ্রমের নিঃসঙ্গতা ভাঙে সবরকম ভ্রম।
তবুও তারা বেঁচে থাকে, আশা বুকে বেঁধে,
সন্তানের মঙ্গল কামনায় অশ্রু চোখে সেঁধে।
সময় বয়ে যায়, একে একে নিভে যায় আলো,
বৃদ্ধাশ্রমের দেয়ালে জমে বেদনার কালো।
শেষ নিঃশ্বাসটি ফেলার আগেও তারা ভাবে,
সন্তানেরা যেন ভালো থাকে, সুখে দিন কাটায় সবে।