খোয়াইয়া ধার ঘেঁষে
তোমার চুল নেমেছে আঁধার কালো।
একটা দিন একটা রাত ও কি
আমরা কাটিয়েছি ভালো?
যাক সে কথা।
সেই যে সেবার পৌষ মেলায়
লাল মাটির পথ দিয়ে তোমার বাড়ি ফেরা।
সেই বাড়ি, যার সামনে খোলা মাঠ
আর বাইরে দেওয়া বেড়া।
মনে আছে?
মনে আছে? ছাতিম তলায়?
ভিজে একসা বৃষ্টি ভেজার দিন।
এসব কথা ভুলে যাব
এই সম্ভাবনা ক্ষীণ।
হটাত খেয়াল!
বাউল গান শিখবে তুমি।
একতারা নিয়ে সোজা ছুটেছিলে জোড়ে।
তার ছেঁড়া সেই একতারা
আজও আমার কাছে পরে।
তুমি হয়তো,
সামনে থাকলে বলতে
"খুব মনে পড়ছে"।
আসলে আমরা তো স্থির
আর দিন গুলোই শুধু সরছে।
ভাবতে অবাক লাগে তাইনা!
এত গুলো বছর
অনেকটা রেলগাড়ি যাওয়ার মত।
তুমি বলতে "কি যে বল
বুঝি না অতশত"।
কাঁচা বয়স।
আমিও কি বুঝেছি তখন
কোপাইয়ের জলে হারাবো সেই দিন।
পাশাপাশি হাঁটা কাঁথাস্টিচের পাঞ্জাবি
আর ফুল ছাপা শাড়ি রঙীন।
সেই যে,
সেবার পৌষ মেলার শেষে
তুমি এলে আমাদের বাড়ি
সঙ্গে তোমার বাবা।
বাইরে পার্ক করা নতুন গাড়ি।
মিষ্টির প্লেটে,
চামচ না রেখেই বললেন কিছু কথা।
আমাকে শুনতেই হল।
আমি তখন বেকার।
শোনা ছাড়া, আর কি ই বা করব বল?
আসলে কিন্তু,
সমাজটা ছিল ভিন্ন ধারার
চাকরি ছাড়া দুজনের সংসার
কি করে চলতে পারে?
এ কথা শুনেছি বার বার।
তুমি জানো,
আজ এত দিন পরেও
তোমার খবর রাখি আমি
কিনেছ মস্ত বাড়ি। দুটো ফ্ল্যাট
বিদেশী গাড়ি দামি।
আমার কথা কি আর বলব?
আমিও আছি এক রকম
একটি মেয়ে বছর পঁচিশের, চাকরি করে
ভালবাসে শুনেছি একটি ছেলেকে
ছেলেটি এখনও পড়ে।
সেদিন আর নেই
এখন কিন্তু অন্য রকম সময়
ভেবে দেখো এই তিরিশ বছরে
বদলেছে অনেক কিছুই
আমাদের অগোচরে।
সমানতার চোখেই দেখি তবে।
থাকনা সেই বেকার ছেলে ঘরে
পড়ে পড়ুক যত দিন সে পারে।
বিয়েটা ওদের হবেই জেনে রাখো
মেয়েটা আমার ভালই চাকরি করে।
কখনও তোমার,
মনে পড়ে? সেই কাগজের নৌকা?
ডুবেছিল যা একদিন কোপাইয়ের জলে।
আবার ভাসাবো আমি উজান স্রোতে
নতুন করে বছর ত্রিশেক পরে।