হতে পারে কোনদিন -
কোনো তীব্র যানজটের শহরে।
সিগন্যালে দাড়িয়ে আমি,
সাথে আমার জীর্ন ফুডকার্ট।
ক্লান্ত সারাদিনের হিসেব করছি আর অপেক্ষায় আছি -
কখন সিগন্যালের বাতিটা পরিবর্তন হবে।
আমাকে ফিরতে হবে।
পথ চেয়ে আছে কয়েকটা উদাসীন চোখ।
অনেক কথা বাকি আছে তাদের,
কিছু আবদার, কিছু শাসন আর কিছুটা ধিক্কার।
এতকিছু ভাবনার মাঝে আমি জানতে পারছিনা-
আমার পাশে যে গাড়িটা রয়েছে তার কালো গ্লাসের ওপাশ থেকে দুটো চোখ আমাকে দেখছে;
যে চোখ দুটোর ঝিলিক দেখার জন্য রোজ বিকেলে নদীর ধারে বসে থাকতাম।
কখনো বিকেলে আবার কখনো সন্ধ্যায় দেখা হতো।
সে ছিলো আমার চায়ের সাথে শিঙাড়া খাওয়ার একমাত্র সঙ্গী,
একটা চকলেটও সমানভাবে ভাগ হতো যার জন্য।
চাঁদনী রাতে নদীর ধারে ঘাসের উপরে শুয়ে আকাশ দেখা-
আর সিগারেট ফুকা ছিলো আমাদের দৈনন্দিন রুটিনের একটা অংশ।
সবাই যেখানে আমায় সর্বদা বিরক্তিভরা চোখে দেখতো
তখন ওই চোখ দুটোই আমায় খুজতো পূর্ণ বন্ধুত্ব আর ভ্রাতৃত্বের মায়ায়।
আমাকে অপমান করার লোকের অভাব ছিলোনা।
তবে -
সে অপমানের বদলা নেবার মানুষ ছিলো এই একটাই।
আহা!
আজ আমি জানছিনা, দেখছিনা সেই মানুষটা একযুগ পড়ে আমায় সেই আগের চাহনিতে দেখছে।
তবে তার সেই চোখদুটো ঐ-কালো গ্লাসের ভিতরেই বন্ধি থাকলো।
সে গ্লাসটা নামিয়ে মুখ ফুটে বলতে পারলো না-
ঐ ঢালী এদিকে আয়, বোস আমার পাশে।
কিছুক্ষন থাক আমার সাথে।
আর কতকাল থাকবি অভিমান করে?
অথচ সে জানলোনা -
সেই কবেই আমি তার ভুলগুলো ফুল করে হৃদয়ে সাজায়ে রেখেছি।
সিগন্যাল ছেড়ে দিলো,
আমিও প্যাডেলে পা বাড়ালাম।
পাশ থেকে গাড়িটা শো করে চলে গেলো।
রয়ে গেলো কিছু অবাস্তব কথা...
২৫ আগস্ট ২০২৪
নজরুল নিবাস, বরিশাল।