লিমেরিক (পাচঁ লাইনের কবিতা) এর নামকরন এবং এর রাজার ইতিহাস


পাচঁ লাইনের কবিতার নাম লিমেরিক কেন হল? লিমেরিক আসলে একটা জায়গার নাম, এর নিজস্ব একটা ইতিহাস আছে, সে ইতিহাস লিমেরিকের মতই অদ্ভূত। পাচঁ লাইনের এই ছড়া বহুযুগ ধরেই ছিল

যেমন

Hickory dickory dock
The mouse ran up the clock
The clock struck one
The mouse ran down
Hickory dickory dock

লিমেরিক আয়ারল্যান্ডের একটি জায়গার নাম, ফ্রান্সের সৈন্যদলের আইরিশ ব্রিগেডিয়াররা ওই লিমেরিকে অবস্থান কালে এই রকম ছড়ার গান গাইত, সেখানে ধূয়োর মত শেষ লাইনে থাকত এই কথাটি “ Let us come up to Limerick”. সূর করে কোরাসের মাধ্যমে, নিশ্চয়ি কোন অজানা কবির হাতে এই ধরনের গান চালু ছিল। সৈন্যারা হয়ত লিমেরিকের এই ধরনটার অনুকরনে মুখে মুখে ছড়া তৈরী করে মুখে মুখে গান গাইত। যূদ্ব শেষে যে যার বাড়ী চলে গেল গান শুনাল তাদের ভাবী বংশধদের। লিমেরিক থেকে আমদানি বলে এবং “Let us come to Limerick” এ শেষ কথাটি “Limerick” বলে ছড়াগুলোর নাম হয়ে গেল লিমেরিক।

নিজের কষ্ট নিয়ে যিনি কৌতুক করতে পারেন তারা অজানতে দিয়ে যান এক পবিত্র আকাশ। সে আকাশে থাকে রামধনুর শুষমা, রামধনু যদি হয় সে আকাশের হাসি তবে বৃষ্টি হল তার চোখের পানি, আর বৃষ্টির পানি নিয়েই তো রামধনুর যত চোখের রং।

কি জীবনে কি সাহিত্যে এডোয়াড' লিয়র ছিলেন সে রকম একজন। তার মজার উৎস টুকু ছিল তার বেদনাবোধ। নিজের বেদনাটুকু নিছক হাসিতে রুপান্তরিত করে গেছেন, কেনা পড়ছে তার পঞ্চদশী সেই সব ছোট আকারের তৃতীয় ও চতুথ' আকারে লাইনে মিল এবং অপেক্ষাকৃত বড় আকারের প্রথম, দ্বিতীয় এবং পঞ্চম লাইনে মিল। লিমেরিক ছড়া ছারাও তার আছে লিরিক ছড়ার সম্ভার। আর আছে তার চিত্রকর রুপে বিরাট পরিচয়। তার “ননসেন্স” এর অজানা দিকটি থেকে যাবে যদি না তার লিরিক গুলোর সাথে পরিচয় থাকে। যেমনঃ

There was an old man in a barge,
Whose nose was exceedingly large;
But in fishing by night,
It supported a light,
Which helped that old man in a barge.


আরও শুনবেন?

The Goodnatured Grey Gull,
who carried the Old Owl, and his Crimson Carpet-bag,
across the river, because he could not swim.



There was an old man in a tree,
Whose whiskers were lovely to see;
But the birds of the air,
Pluck'd them perfectly bare,
To make themselves nests on that tree.



লড' ষ্টানলির ছেলেমেয়েরা লিয়রকে খুব ভালবাসত, তিনি লিয়রকে কি ভাবে যেন জোগার করে এনে দিয়ে ছিলেন একটি ছবির সঙ্গে ছড়ার বই নাম “Anecdotes and Adventure of fifteen gentlemen”. প্রকাশকাল সম্ভবত ১৮২২। লেখকের নাম আজ গবেষনার বিষয়। এছাড়াও ছিল “The history of sixteen wonderful woman”. প্রথম ছড়াটি শুনুন

There was a sick man on Tobago
Liv’d long on rich gruel and sago
But at last to his bliss
The Physician said this –
To roast leg of mutton you may go.

কি দক্ষ হাত লিমেরিকের একনাম না জানা এই কবির, এই নাম না জানা কবির লিরিকের সাথে ছবি আকলেন লিরয়।

একেবারে জন জীবনে প্রতিষ্টা পেয়ে গেল লিমেরিক। উনবিংশ শতাব্দির ইংরেজী “light verse” ইতিহাসে এই সব কবিতা “Nonsense” আখ্যা পেল। লিয়রের লিমেরিক আর লিরিক, যা তিনি গান গেয়ে শুনাতেন এর অনাস্বাদিত রুপ আর রস নিয়ে। লিরয়ের ‘A book of Noonsense” অবশ্য প্রকাশিত হয়েছিল ষ্টানলির বাড়ির সেই ঘটনার ১৩ বৎসর পর ১৮৪৬ সালে, এখানে লিয়র এক অদ্ভুত ছদ্মনাম নিয়েছিলেন। Derry Down Derry. এই বই লেখার পেছানে অমরত্ব কোন চিন্তা ছিল না লিয়রের কিন্ত অমরত্ব নিজে এসে ধরা দিল লিয়রের কাছে।


লিয়র বাবা মার বিংশতম সন্তান। ছোটবেলে থেকেই অভাব অনটনের বিরাট জ্বালা সইতে হয়েছে বড় বোন অ্যান এর কাছে মানূষ হয়েছেন লিয়র। মায়ের বংশধারা থেকে তিনি পেয়েছিলেন মৃগী রোগ, হাপানি এবং ব্রঙ্কাইটিসের মত মূল্যবান উপহার। ক্ষীন দৃষ্টিশক্তি ও ছিল আজন্মসঙ্গী। অভাব জন্ম থেকে। এই সব অভিসম্পাত তার স্পশ'কাতর মনটাতে চাপ ফেলে। বিরল এক প্রতিভার অধিকারী অথচ স্বচ্ছল একটি জীবন যাপনে এত প্রতিবন্ধকতা। ১৫ বৎসরে স্কুল এর পাট চুকান ভাল লাগেনি বলে। অথচ চিত্রকলায় ছিলেন ভীষন পারদশী'। কমপক্ষে ১২ টি ভাষায় কথা বলতে পারতেন। রাগে অভিমানে বিয়েই করলেন না। নিসং গতা ঘুচাতে ঘুরে গেচেন ভারতে। Bombay Times এ তার বিখ্যাত ননসেন্স কবিতা প্রকাশিত হয়ে ছিল ১৮৭৪ সালের জুলাইতে নাম “The Cummerbund” মানে “কোমরবন্ধ”। শুনবেন কোমরবন্ধ ননসেন্সটি

And where the purple Nullahs threw
Their branches far and wide,--
And silvery Goreewallahs flew
In silence, side by side,--
The little Bheesties' twittering cry
Rose on the fragrant air,
And oft the angry Jampan howled
Deep in his hateful lair..

স্নায়ুরোগের জন্য লিয়র মানুষের ভিড় পছন্দ করতেন না তাইত কোলকাতার রাজভাবন দেখে বলছেন “Husslefussabud” অথ্যা’ৎ “বড্ড গোলমেলে”। এই জগৎটি যেন চিত্রিত হয়েছে লিয়র এর ক্যানভাসে প্রসংশা পেলেও ময্য'দা পাননি। শিল্প বিপ্লবের তারনায় তখন ইংল্যান্ডে চলছিল সংস্কৃতির অবমূল্যায়ন। শুধু লিমেরিক বা লিরিকেই না বাস্তবেও নিজেকে ব্যঙ্গ করেছেন। সারা জীবন পরেছেন বেঢপ প্যান্ট শাট' আর মোটা নাকের ডগায় জুলিয়েছেন ল্যাগব্যাগে চশমা। তবে তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠছিলেন এতে কোন সন্দেহ নেই। একবার একটা সস্তার সরাইখানায় রাত কাটাচ্ছিলেন, শুনলেন পাশের রুমে তাকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে “How pleasant to know Mr. Lear!

একবার ট্রেনে করে লিয়র ভ্রমন করছিলেন এক অপরিচিত ভদ্রলোক এর পরিবারে সাথে। ভদ্রলোকের বাচ্ছারা পড়ছিলেন “A book of nonsense”. ভদেলোক লিয়র কে বলছেন এমন মাজার বই আর হয় না। কে এক এডোয়াড’ লিয়র লিখছেন বইটি, আসলে লেখক লিয়র না ডাবি'র আল'। EARL কথাটি ঘুরিয়ে তিনি “LEAR” লিখছেন। বাধ্য হয়ে লিয়রকে বলতে হল তিনিই লিয়র। ভদ্রলোক আর তার পরিবার তো হেসেই বাচেনা। বাধ্য হয়ে লিয়র কে রুমাল আর টুপি খুলে টুপির গায়ে “EDWARD LEAR” নামটি দেখাতে হয়। অসহায় লিয়র টুপি খুলে প্রমান করেছেন তিনিই লিয়র। এই ঘটনা পরে চিত্রিত করে গেছেন লিয়র। বাংলার আবোল তাবোল এর লেখক সুকুমার রায় আর লিয়র এর মধ্যে খুব বেশি পাথ্য'ক্য আমি পাইনা খালি আথি’ক দিক ছাড়া।

চলুন লিয়র দিয়ে শুরু করে সুকুমার দিয়ে শেষ করি

সৎপাত্র- সুকুমার রায়

শুনতে পেলাম পোস্তা গিয়ে—
তোমার নাকি মেয়ের বিয়ে ?
গঙ্গারামকে পাত্র পেলে ?
জানতে চাও সে কেমন ছেলে ?
মন্দ নয় সে পাত্র ভালো
রঙ যদিও বেজায় কালো ;
তার উপরে মুখের গঠন
অনেকটা ঠিক পেঁচার মতন ;
বিদ্যে বুদ্ধি ? বলছি মশাই—
ধন্যি ছেলের অধ্যবসায় !
উনিশটিবার ম্যাট্রিকে সে
ঘায়েল হয়ে থামল শেষে ।
বিষয় আশয় ? গরীব বেজায়—
কষ্টে–সৃষ্টে দিন চলে যায় ।
মানুষ তো নয় ভাইগুলো তার—
একটা পাগল একটা গোঁয়ার ;
আরেকটি সে তৈরী ছেলে,
জাল করে নোট গেছেন জেলে ।
কনিষ্ঠটি তবলা বাজায়
যাত্রাদলে পাঁচ টাকা পায় ।
গঙ্গারাম তো কেবল ভোগে
পিলের জ্বর আর পাণ্ডু রোগে ।
কিন্তু তারা উচ্চ ঘর,
কংসরাজের বংশধর !
শ্যাম লাহিড়ী বনগ্রামের
কি যেন হয় গঙ্গারামের ।—
যহোক, এবার পাত্র পেলে,
এমন কি আর মন্দ ছেলে ?
সুত্রঃ
http://www.poets.org/poet.php/prmPID/140