কালীগঙ্গা আমাকে রোজ ডাকে,
সন্ধ্যা নামার ঠিক আগে।

তীর ঘেঁষা কচুরীপানা আমার ভেজা পায়ে চুমু দেয়,
শীতল ঘোলা জলের স্পর্শ
অবসাদ মাখা অনুভূতিতে ভরায় ...

সেই ছেলেবেলা থেকে তার ডাক শুনছি,
আমার সাথে বড় না হয়ে দিন দিন ছোট হচ্ছে নদীটা।

আমার মনটাও ওর বুকের মতোই অনাবৃত ...
সব বলি তাকে।
গণিত স্যারের চড়, বাংলা স্যারের কানমলা ...
পাওনাদারের কাছে বাবার অপমান,
উনুনের ভাপে লুকানো মায়ের কান্না ...
গুপ্তখুন হওয়া বন্ধুর শেষ হাসি,
জোছনা রাতে জারুল গাছে ঝোলানো শ্যামলা মেয়েটার মৃতদেহ,
শেষ বেন্চের চুপচাপ সেই ছেলেটার সন্ত্রাসী রূপান্তর ...
পৈশাচিক সহিংসতায় মাটিতে জমাট প্রিয়জনের রক্ত,
ভিটেমাটিহারা বন্চিতের আর্তনাদ,
শহরে পাঠানো ছেলেকে চিরতরে হারানোর কান্না,
... সব।

কালীগঙ্গা শোনে ...
নির্বেদ স্রোতে ভাসিয়ে নেয় কথাগুলো,
কিছ্ছু বলে না।
কিছ্ছু না।

শুধু সন্ধ্যা শেষের মায়াবী অন্ধকারে
আবিল পলি মেখে গহন অভিমানে
আমার মতো অনেক কাঁদে সে,

অনেক।