আসরের সবাইকে আমার অনেক শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা।
ভিন্ন কিছু ব্যস্ততার কারণে আমি কিছুদিনের জন্য আসর থেকে ছুটিতে যাচ্ছি। কতোদিনের জন্য এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। আমি বা আমার ছুটিতে যাওয়া আসরের জন্য একটি খুব ক্ষুদ্র ব্যাপার। তবে আসরে আমার কিছু খুবই প্রিয় কবিবন্ধু আছে, যারা হয় তো আমার এবং আমার কবিতার অনুপস্হিতি অনুভব করবেন। তারা আমাকে অনেক স্নেহ করেন ও আমার কাজ নিয়ে তাদের অনেক আগ্রহ প্রকাশ করেন। আমি তাদের জন্য আজকের এই লেখাটা লিখছি, কারণ আমার ধারণা তারা আমার ভবিষ্যত কর্মকান্ড জেনে আনন্দিত হবেন ও আমাকে শুভকামনা জানাবেন।
আমার ভিন্ন ব্যস্ততার কারণ দুটি।
১. আপনাদের শুভকামনায় সম্প্রতি আমি একটি টেলিফিল্ম নির্মাণের সাথে জড়িত হয়েছি। পরিচালক ও প্রযোজক আমার একটি গল্পের অবলম্বনে টেলিফিল্মটি তৈরী করতে চাচ্ছেন, এবং আমাকে সেই গল্পের ভিত্ত্বিতে একটি চিত্রনাট্য তৈরী করতে বলেছেন। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ঢাকা ও কোলকাতায় টেলিফিল্মটির শুটিং-এর কাজ শুরু হবে। আমাকে তার আগে চিত্রনাট্য তৈরী করতে হবে, এবং শুটিং-এর আগে আমার লেখা চিত্রনাট্য ও টেলিফিল্মের কাস্টিং নিয়ে বেশ কয়েকবার তাদের সাথে স্কাইপে মত বিনিময় করতে হবে। লেখার আগে আমাকে কিছুদিন টেলিফিল্মের লোকেশন ও কনটেক্সট নিয়ে গবেষণা করতে হবে, যা আমি ইতিমধ্যে শুরু করেছি। আমার অনেকদিনের স্বপ্ন চলচ্চিত্র নির্মাণ করা। এই বিষয়ে অনেক পড়াশোনাও করেছি। চলচ্চিত্রে আমার এই প্রথম পদার্পণ হচ্ছে। এই প্রজেক্ট সফলভাবে শেষ করার পরপরই একই প্রযোজক আমাকে আরেকটি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য ও পরিচালনার কাজে নিবেন বলে কথা হয়েছে। কাজেই আমার জীবনে সামনের কয়েকটি মাস অনেক বড় পরিবর্তনের সময় হতে পারে।
২. আমি এপ্রিল মাসের শুরুতে একটি নতুন অডিও এ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালনা ও সুর দেয়ার কাজ শুরু করেছিলাম। সুর দেয়া শেষ করেছি। এখন সেটার রেকর্ডিং শুরু হবে। পুরো জুন মাস ধরে সেটার রেকর্ডিং চলবে। রেকর্ডিং আমার ব্যক্তিগত স্টুডিওতে হয়, কাজেই সেই কাজ আমাকে পুরোপুরি ব্যস্ত রাখে। আমার পরিবারই রেকর্ডিং-এর সময় আমাকে খুব একটা পায় না। রোজার মাসে আমি গান জাতীয় কাজ করি না (আঠারো ঘন্টা রোজা রাখার পরে শরীরে কুলায় না)। রোজার আগে আমাকে এ্যালবামের রেকর্ডিং শেষ করতে হবে।
রোজার পরে টেলিফিল্মের শুটিং পর্ব শুরু হবে, যদিও শুটিং-এ আমার কোনো ভূমিকা নেই। তবে আমার ধারণা টেলিফিল্মটির আবহ সঙ্গীত আমাকে করতে দেয়া হবে, যেটার একটা ধারণা আমাকে দেয়া হয়েছে। যদি তেমন হয়, আগস্ট মাসে আমাকে আবার স্টুডিওতে বসতে হবে।
সেপ্টেম্বর-অক্টোবর-নভেম্বর আমি উপন্যাস লিখি কারণ বইমেলা কাছাকাছি এসে পড়ে, এবং প্রকাশক তখন বই দিতে বলেন। সামনের বইমেলার জন্য তিনি বই চেয়ে রেখেছেন, কাজেই আমাকে তখন সেসব করতে হবে।
আমার নতুন এসব কাজের মাঝে কবিতাকে দেয়ার মতো সময় আমি হয় তো বের করতে পারবো না। সেটা আমার জন্য আক্ষেপ, আফসোস। তবে আমাদের সবার দিনে চব্বিশ ঘন্টাই থাকে। আর আপনারা সবাই জানেন, সৃষ্টিশীল কাজে দুই-তিন জায়গায় মনোনিবেশ করা খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আমি গদ্য লেখার সময় কবিতা লিখতে পারি না। আর সঙ্গীত সৃষ্টি করা একেবারে ফুল টাইম জব।
বাংলা কবিতার আসরে আমি প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি এবং অনেক ভালোবাসা ও ভালোলাগা নিয়ে আসরের আশীর্বাদ গ্রহণ করেছি। এখানে আমার খুব ভালো কিছু কবিবন্ধু হয়েছে। এরা আমার কবিতা অনেক আগ্রহ ও ভালোবাসা নিয়ে পড়েছেন, আমাকে প্রতিনিয়ত উত্সাহ দিয়েছেন। আমার অংশগ্রহণকে আমার বন্ধুরা অনেক অর্থবহ করেছেন। আমিও মন খুলে এদের কবিতা ও অন্যান্য অনেক কবিতা পড়েছি, নিজের মতো করে শিখেছি, ও আমার ভালোলাগা জানিয়েছি। এই অভিজ্ঞতা আমার জন্য একটি অসাধারণ পাওয়া। কবিতা লিখতে আমার ভালো লাগে, এবং আমি কবিতা লিখে কখনোই ক্লান্ত বা পরিপূর্ণ হই না। আমার আরও লিখতে ইচ্ছা করে। কিন্তু আমার হাতের অন্যান্য কাজগুলোও আমার খুব প্রিয় ও স্বপ্নময়।
তাই আমাকে কবিতা আসর থেকে কিছুদিনের জন্য ছুটিতে যেতে হবে। তবে আমি যখন সময় পাবো, লগ ইন করে কবিতা পড়বো, আমার ভালোলাগা জানাবো। আমার করা এ্যালবাম ও টেলিফিল্ম রিলিজ হলে আমি অবশ্যই বাংলা কবিতায় সেটা জানানোর ব্যবস্হা করবো।
আমি আমার প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা জানাই আসরের সবাইকে। মাননীয় এডমিনকে অনেক শ্রদ্ধা ও শুভকামনা জানাই। আমার লেখা কবিতাগুলো আপনাদের সবার কাছে ঋণী থাকবে। সবাই ভালো থাকবেন ও আমার জন্য দোয়া করবেন।
আমি হয় তো আর কয়েকদিন আছি, এরপর হঠাত একদিন কিছু না বলেই ছুটিতে চলে যাবো। তবে আমি কখনো আবার ফিরে আসবো, ইনশাল্লাহ।
আসরের সমৃদ্ধি কামনা করছি, ও আপনাদের সবার মঙ্গলময় জীবন কামনা করছি।