থাকুক কিছু কাব্য আমার গোপন তোমার কাছে,
অচল বাতুল ভাবনা শোনার পাহাড় আমার আছে।
পাহাড় অটল অরব অখল নিরেট নীরব স্থির,
হাজার বছর অগম বেশেই অভিমানের নীড়।

সবাই বলে মহার্ণবের ঘূর্ণি গহন জলে,
নিযুত মনের ভাবনা মেশে অব্যক্ত নিষ্ফলে।
সেই গভীরে কাব্য রেখে চাই না ফেরত ফেনায়,
কি আর হবে, ভাবনা আবার কাঁদবে বালির হেলায়।

সায়র ফেনার বিম্বে নাকি অনেক কবির গ্লানি,
ঢেউ বা অতল অন্তঃস্রোতে নিমগ্ন হাতছানি।
আমার মনের কাব্যরা চায় কৃষ্ণ গুহার বর,
তোমার কাছে ঠাঁই না পেলেও চাই যে তাদের ঘর।

পাহাড় থাকে মহার্ণবের পাশেই নিথর হয়ে,
জলোচ্ছাসের জোয়ার ভাটার বিনিদ্র দুখ সয়ে।
চূড়ায় যে তার হিমেল জমাট মেঘমলয়ের ক্ষোভ,
অশ্ম তুষার জলপ্রপাতেও নেই বেনামী লোভ।

কবি আসে, যায় কবি কোন মূক অভিমান রোষে,
কাব্যমনের অরব রোদন শৈলগিরিই পোষে।
সূর্য ওঠে সূর্য ডোবে বৃষ্টি হিম আর তাপে,
পাহাড় জমায় দুঃখ কবির ... ধার্য অভিশাপে।

এমনিভাবেই পাহাড় আমার বন্ধু প্রেম আর উর,
উপত্যকায় মুখ লুকিয়ে দুঃখ করি দূর।
প্রস্তরে তার কষ্ট লেপে অকুণ্ঠ নির্ভারে,
তোমার কাছে গোপন রাখা সব কথা দেই তারে।

কবি ঘুমোয় ... পাহাড় তবু জাগতে থাকে একা,
কবির বিষাদ পোষে, তবু পায় না কবির দেখা।
আমার গোপন কাব্যে জমাট বরফ গলা দ্রবে,
ঝরনা সুখের কান্নাটা তার কে বুঝেছে কবে ?

তোমায় যতো না বলা সব পাহাড় এখন জানে,
তোমায় ডাকে সাগর, আর পর্বত আমায় টানে।
জলে জমাট লোনায় যখন খুঁজছো তুমি ত্রাণ,
আমি তখন আঁকড়ে পাহাড় নিভৃতে গাই গান।

এখন আমার কাব্যরা সেই সংগীতে তন্ময়,
পাহাড় জানে পাহাড় বোঝে সুর তাল আর লয়।
সেই প্রেমে নেই সংজ্ঞা বা নাম পার্থিব সুখ-দুখ,
তোমায় দেয়া দিনশেষে তাই থাকছি যে উন্মুখ।

তোমার কাছে জীবন রেহান, কিন্তু যে নেই আশা,
এক নাগরিক কবির বুকে গিরির ভালোবাসা।
মন-পাবনের উমেদ আছে, নেই রিপু-রস-কাম,
খুব আদরে তাই দিয়েছি পার্বতী তার নাম।