ইচ্ছে আমার হোক বেসুরো মনকে রাখি সুরে,
চোখের লোনা মুছতে ছুটি সুনীল সমুদ্দুরে।
শরত রোদে ফাগুন খুঁজে কে পেয়েছে কবে …
এমন শত ভুল চাওয়া তাই ভাসাই মহার্ণবে।
সায়র হাসে, দুঃখ যে তার গর্ভে ভরাট জলে,
মানব চোখের দুই ফোঁটা দুখ নতুন কি আর বলে !
তার সলিলে নিযুত চাওয়ার চুর বালুকার ভার,
ডুববে অতল অন্ধকারে, তাও মানে না হার।
ইচ্ছে আমার ছন্দবিহীন ছন্দ বুনি মনে,
ডোকরা জীবন তাও অভিনয়, লক্ষী প্রতিক্ষণে।
হেমন্ত-সুখ ধীর বিকেলে কে পায় ঝড়ের ভয়,
অরূপ রূপে এই ক্ষ্যাপা তো আটকে থাকার নয়।
কার্তিক তাই হাসে, বলে, ছলটা কি তোর একার ?
ইচ্ছে আমার ঝুম বিকেলেও শীতকে ঝুঁকে দেখার।
রূপ তো যাবে ধূসর মাঘে, শ্বেত তুহিনের শাপে,
ছন্দরা সব টুকরো হবে মিল অমিলের মাপে।
ইচ্ছে আমার ঋণখেলাপী, মনকে রাখে দেনায়,
হয় তো বা তাই কাব্য এখন জীবন বীমা কেনায়।
কাব্যে খুঁজি নিত্য রুজি প্রেম বিষাদ আর দ্রোহে,
এই ধরাতে বিক্রি হলাম, কবি … ভিন্নগ্রহে।
দৈব বলে কে জানে কার পূণ্যে তোর এই জনম,
সবার হাতে অদৃষ্ট ভার, তোর হাতে তো কলম !
বিক্রি যা হয় কাব্য তো নয় ভাবনা সুখের ঝোল,
ধরায় তো নেই কোনোই কবি, যতোই পেটাক ঢোল।
ইচ্ছে আমার অংকে কাঁচা, মন গাণিতিক, তাই,
অনিচ্ছাতে নিজের ভুলেই প্রেমের ক্লাসে যাই।
সেই ক্লাসে প্রেম নিত্য শেখায় ব্যাখ্যা শোধন পাঠ,
ডিগ্রি খুঁজে তরল এ মন তাই হয়েছে কাঠ।
প্রেমলীলা শ্লোক তাও বলে শোন, বই ছেড়ে খোঁজ মন,
পাঠ্যবইয়ে জ্ঞানই শুধু, নেই তো শিহরণ।
নিখাদ প্রেমে নেই ভাষা নেই তত্ত্ব বিদ্যা নীতি,
অংক হিসেব শূন্য, শুধু আছে … অনুভূতি।
ইচ্ছেরা তাই ইচ্ছে হয়েই দিব্যি আছে সুখে,
কলমটাতেই ঘর করেছে আসবে না আর মুখে।
মন যাযাবর আউল বাউল ভাবনা করে ফেরি,
ইচ্ছে লেখে সুস্থে ধীরে, হলোই না হয় দেরী।
চলছে এমন ইচ্ছে মনের ঝলমলে চারদিক,
একটা জাতে মাতাল, আর মনটা তালে ঠিক।
কেউ বলে এই মন তো আমার, কেউ বলে মন কই ?
ইচ্ছে বলে, মন আমারই … কারোই আমি নই।