তুমি রোজ সন্ধ্যায় এ রাস্তা ধরে
হেটে যাও বাড়ি ফেরার বেলায়,
একাকী সাবধানে সন্তর্পনে পথ চলা তোমার;
ক্লান্ত শরীরটাকে যেন জোর করে টেনে নিয়ে যাও-
কি জানি কোন ভয়ে ওরম নিঃশ্চুপে
তড়িঘড়ি পথ চলা তোমার!

তুমি সঙ্গীহীন এমনি রোজ পথ চলো-
ভাবলেশহীন, পথের ধুলোতেই নিবদ্ধ দৃষ্টি;
তোমাকে দেখে কেন জানি হাজার প্রশ্ন জাগে,
মনে হয় কোনো বিদ্রোহী আত্মা ঘুমিয়ে ওই বুকের খাঁচায়;
মনে হয় তোমাদের কারখানার সাইরেনের মতোই
আকাশ ভেদ করে বলতে চাও জমানো অনেক কিছু।
বড়ো ইচ্ছে করে তোমায় সঙ্গ দিই,
নির্জনা এই পথে তোমার পাশে পাশে পথ চলি –
নির্বাক তোমার মতোই;
অন্তত কিছুক্ষনের জন্য হলেও
তোমার একাকিত্বে ব্যাঘাত ঘটাই,
মনের অন্দরে ঘুরেফিরে দেখি, কি আছে রুদ্ধ দ্বারে।

তুমি একবারও চোখ তুলে তাকাও না, কোনোদিন না,
কেবল আড়চোখে দেখে চলে যাও
আমার নিয়ত উপস্থিতি।
যদিও তোমার অজান্তেই দেখে নিয়েছি
কি নিদারুন লেলিহান মশাল ঐ চোখে-
ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি যেন চুপচাপ ভেতরে ভেতরে জ্বলছে ।

কেন এতো আগুন? কেন এতো উত্তাপ?
সমস্ত দেহে তুমি এতো স্নিগ্ধ তবু
কোন অভিমানে, না জিঘাংসায়
এমন জ্বলছে তোমার হরিণ চোখ?
ও চোখে তাকাতে আমার বড়ো ভয় -  
তোমার সঞ্চিত আগুনে পুড়ে যাওয়ার ভয়।
তবুও দুঃসাহসে যেদিন চোখ রেখেছিলাম,
বিদ্যুৎ ঝিলিকের মতন তুমিও পাল্টা তাকিয়েছিল-
আমার হৃদস্পন্দন তখন স্তব্ধ;
তবুও স্পষ্ট দেখেছিলাম    
তোমার ও চোখে যেন হাহাকার করে
যুগ-যুগের বিনিদ্র মধ্যরাত।