তোমাকে নিয়ে কখনও কোন আলোচনা হয়নি,
হয়েছে, নগণ্য ছিটেফোঁটা বৃষ্টির মত।
ওতে ধুলিময় পথের একটি কণাও ভেজেনি।
প্রশান্ত হয়নি সে পথ।!
শেষের দিকে তোমার বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা চলছিলো না,
তুমি যে মণিপুরে ভাড়ার বাসায় থাকতে তা ক'জন জানি!
তোমাকে যখন ফোন করে জিজ্ঞেস করা হতো-
" কেমন আছো শিবু দা?"
তুমি বলতে, "ঘুমিয়ে ছিলাম, মাত্র একটু চোখ মেললাম,
এই যা। এর বেশি বলার কিছু নেই।"
কেন বলোনি দাদা?
তোমার লজ্জা পেয়েছিলো?
নাকি যন্ত্রণার পরশে তুমি যন্ত্র হয়ে উঠেছিলে?
নাকি আমাদের অসীম নির্লজ্জতা দেখে
তুমি নিমজ্জিত হয়েছিলে স্বীয় অপমানে!

পুঁজিবাদী রাজনীতির সংজ্ঞা জানি,
কিন্তু রাজনীতিতে পুঁজিবাদ আজও বুঝি না।
বড্ড কঠিন সে বিষয়। বেসামাল সূত্র।
নিউটন-গ্যালিলিও সব একাকার এ ঘাটে,
পিথাগোরাস তো কোন ছাড়!
মেধাবীরা সীমান্তে দিগন্তে ঘাস ফড়িং আজ,
প্রেমিকেরা নতজানু হিশ হিশ সরীসৃপ;
মূর্খদের প্রগলভতায় বাহবা বেশ,
হাটি হাটি পা পা করে তারা এখন উদ্যানে উদ্যানে
বাগিচায় বাগিচায়, পুচ্ছ নাড়িয়ে নাড়িয়ে।

এ সবে কোন শিল্প নেই শিবু দা।
তোমাকে আর দেখতে হবে না এসব।
তুমি ঘুমাও।
বোশেখ রোদে তাপিত মাধবীলতার মত
অনেক সয়েছো তুমি উত্তাপ।
তুমি ঘুমাও।
পার্থিব ঔষধে তোমার আর প্রয়োজন নেই,
তোমার আর এখানে ঘর ভাড়া দিতে হবে না,
তুমি বরং দিলে তোমার ভাঁড়ার ঘর এ পলিতে।

হাটু গেড়ে তোমাকে সালাম।
শান্তিতে ঘুমাও তোমার আঁকা পতাকা নির্দেশিত স্বপ্নময় সে মাটিতে।
তুমি চিরঞ্জীব, অমলিন
তুমি আমাদের স্মৃতির ভায়োলিন
একাত্তর, পতাকা, লাল-সবুজ,
তোমার সেলাই মেশিন
আমাদের হৃদয়ের লেখনি।

আমরা তোমাকে ভুলে যাবো বার, বার।
হয়তো কখনোই আর মনে পড়বে না তোমাকে।
হারিয়ে যাবে অনেক স্মৃতির আড়ালে তুমিও।
আমাদের জন্য কেবল লজ্জাই রইলো।

তোমাকে নিকষ কালো অন্ধকার থেকে ছিনিয়ে আনা দুর্লভ প্রজাতির শ্রদ্ধা।
বিনম্র শ্রদ্ধা হে সাগরতলসম প্রাণ।
তুমি ঘুমাও বাংলার অণু-পরমাণু।
অগণিত বাকহীন সবুজাভ উদ্ভিদ জন্ম হোক তোমার ডিএনএ মাথায় নিয়ে।

তোমাকে লাল শ্রদ্ধা, সবুজ শ্রদ্ধা
তোমাকে হৃদয় অলিন্দের শ্রদ্ধা
তোমাকে ফিনিক্স শ্রদ্ধা
তোমাকে চোখের জলের শ্রদ্ধা
তোমাকে চোখের জলের শ্রদ্ধা
তোমাকে চোখের জলের শ্রদ্ধা।
-------
ক্ষণকাল, বিকাল
এখানে ছেড়া পাল।
৩:৪৮ মি:
১৯.৪.২০২৪