একটা ঘুম দরকার ছিলো
আকাঙ্ক্ষা করেছি, প্রার্থনা করেছি
এমন কি সব আলো নিভে গেলেও
এমন কি সব অন্ধকার আরও কালো হলেও
এমন কি সব লজ্জা ভেঙে গেলেও
আমি তোমাকে চেয়েছি
বিমুগ্ধ নতজানু প্রেমিক যেমন চায়।

তোমাকে পাওয়ার জন্য অযুত-নিযুতবার
রেটিনাল দুয়ার বন্ধ করেছি
ঘরের সব জানালা বন্ধ করেছি
তবু ফিরে ফিরে এসেছে
ছুটে চলা পুলিশের সূচাগ্র গুলিতে
ঘরে খেলতে থাকা শিশু আহাদের লাশ
সাজু, হোসেন অথবা সামিরের নিথর দেহ,
মেয়েদের দিকে কিলবিল যৌনাতুর হাত
মানুষের পোড়া কংকাল
খসে পড়া মাংস, চুইয়ে পড়া রক্ত
উপুড় ঝুলিয়ে রাখা মনুষ্য লালা
হাতদুটো ঝুলে আছে নিথর পেন্ডুলামের মত;

ফিরে এসেছে সাঈদের বিদীর্ণ মানচিত্র বক্ষ
ফিরে এসেছে মুগ্ধের জলছবি,
উপোস ইয়ামিনের শ্বাপদের ট্যাংকের
উপর থেকে ফেলে দেয়া লতানো দেহ,
আঠারো পূর্তিতে মায়ের চিঠি ফাইয়াজের প্রতি;
অথবা বুক চিতিয়ে টেবিলে পড়ে থাকা
মায়ের প্রতি আনাসের অলৌকিক পত্র;
ফিরে এসেছে সেই চোখগুলো বার বার
অন্ধত্ব বরণে আজ যা বৃত্তান্ত
যেখানে লুন্ঠন করে দৃষ্টি লুণ্ঠনকারী ছররা গুলি।

ক্লান্ত আমি নৃশংসতার উপত্যকায় দাঁড়িয়ে
পৃথিবীর সব মিউজিয়ামের উপর
কালো কাপড়ের আচ্ছাদন দিয়েছি
পৃথিবীর কথিত সভ্যতার চিহ্ন ঢেকে দিতে,
পতনের অযোগ্য করে তুলতে
ইতিহাসের পাতাগুলো কালিময় করেছি;
বিচ্ছিন্ন হতে হতে
পৃথিবীর সব মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হব বলে
আমি একটা ঘুম চেয়েছি।

দিনে রাতে নিমন্ত্রিত অতিথির মত
আমি তোমার আবর্ত দেখেছি,
লুণ্ঠনকারী তোমাকে পেয়েছে পরমানন্দে;
অথচ বহুকাল আমি তোমাকে চাই
আমার আমিকে মুছে দিতে চাই,
তুমি কি আমায় নেবে না?
-----------------------------
সিলেট, টিলাগড়
বিচ্ছিন্নতা প্রগাঢ় অনড়।
২১, সেপ্টেম্বর, ২০২৪
৬:০৯ পিএম।