বিক্রেতা নেই।
তবুও বিক্রি চলছে,
বিক্রি হয়ে যাচ্ছি যত্র-তত্র।
স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, অফিস,
রাস্তা-ঘাট, হাসপাতাল কোনখানে নয়?

এই তো সেদিন,
পাঁজরের মানুষের সাথে
নীলাকাশ আবৃত সবুজ চত্ত্বরে
নর্তকী ফুল, ডানার পাখি, ঠিকানার আকাশ
দেখতে গিয়েছিলাম প্রিয় তালুর ভেতর
মেহেদি রাঙা বিশ্বস্ত হাত জমা দিয়ে,
মনে হয়েছিলো বুকের ভেতর
সন্ধ্যামাখা বাতাস নিয়ে ফিরবো
ভবিষ্যতের মানচিত্র নিয়ে,
হয়তো কোন একদিন জীবনের পড়ন্তক্ষণে
অলস কোন দুপুরে বা রাতের গভীরে
জেগে থাকা চোখে ভাসবে এ বিকেল।

কিন্তু হায় ঈশ্বর!
ফিরেছি খুবলে খাওয়া মাংসপিন্ড হয়ে,
একদল হায়েনার কাছে উপর্যুপরি
গণবিক্রী হয়ে গেলাম।

এ কেমন পাথর সময় দিনের পর দিন!
এ কেমন বর্তমান কেবল ঘোষণা করে
ইতিহাসের নিকষ কদর্য অসভ্যতার পৈশাচিকতা,
এ কেমন কথার দোকান কেবল ‘মানি…কিন্তু’
অত:পর যৌক্তিক নিরুপণ চলে
আমলের পূর্বাপর কদর্যতার সংখ্যায়,
আত্মপক্ষের কথা হয়ে ওঠে কেবল শিল্প,
বলাৎকার সময় ঢাকা পড়ে যায় গল্পে,
গল্পে কল্পে প্রাণিত কল্কে উর্বর হয় হায়েনা,
নিয়তি তখনও ধর্ষিত হতে থাকে
উজাগর রাত কেটে যায় গর্ভমূলে রাক্ষসবিষে,
দিনের পর দিন সময় হয়ে ওঠে পাথর
দিনের পর দিন পাথর হয়ে যায় সময়।

বইয়ের আগামী পাতায় প্রস্তুত হয়ে যাই
কেবল একটি সংখ্যা হিসেবে,
হে সুমেরীয় সভ্যতা, মিসরিয় হায়ারোগ্লিপ,
মায়া সভ্যতা, পিথাগোরাস, আর্কিমিডিস-
একবার এসে দেখে যাও
আমি তোমাদের গণনার সংখ্যা হয়ে উঠেছি,
আগামীর আলোচনায় আমি কেবল একটি সংখ্যা,
আমি বলে কেউ ছিলাম না, থাকতে নেই,
আমার স্বপ্ন ছিলো না, মাথার আকাশ ছিলো না,
সবুজ চত্ত্বর ছিলো না আমার, মানচিত্রও আমার নয়,
আমার কোন পক্ষ নেই, আমি একা,
কহতব্যের কিছুই নয় আমার।
আমি একটি শিল্পের উপকরণ কথার তুলি
যত খুশি রং দাও তাতে
আমি তোমাদের বেঁচে থাকার ক্যানভাস।

আমি ক্লান্ত।
বিশ্বাস করো হে কথকগণ
পৃথিবীর পথে আমি ক্লান্ত।
আমার কেউ নেই।
কেউ আমার জন্য নয়।
নো ম্যান্স ল্যান্ডে দাড়িয়ে আমি এক কাকতাড়ুয়া।
বাতাস সরায় আমার জীর্ণ ছেড়া কাপড়।
লজ্জা আমার নেই।
কারণ সবই পাথর সময়।

বিশ্বাস করো হে বন্ধুগণ
আমি বিক্রেতা নই
তবুও বিক্রি হয়ে যাই।
----------------------
ক্ষণকাল, রৌদ্রজ্বলা দুপুর
২:১৩ তে বাঁজলো নুপুর।