সকলে জানিত ডুবিয়া মরি'ল দুগ্ধবতী কমলা রাণী
বাল্য থেকে কৈশোর শুনিত যে বন্দী পাখির বাণী।
খোদার বর পাইয়া পুঁথির পাতা গেল মরে
পরমাত্মা পাইয়া নব-যৌবন শোভিত করিল সে
সকলের অগোচরে।
ভাটিদেশের মহুয়া সুন্দরীর মোমেনশাহীতে গমন
কমলারাণীও পুণ্যস্নান করিয়া হেথায় নিজ অব-দমন
যেন পৃথক বনের পক্ষী দুটির সাক্ষাৎ হইলো ঘটে
পাতালো দুজন সই,বাধিলো মন একি হৃদয় পটে
সংকল্প হইলো শত ঝড়বাদলেও সহিব সকল ব্যথা দুজন মিলে করিব মাখামাখি,রবে ইতিহাসে গাঁথা।
পরাগ বনে মধুমক্ষিকা যবে করিল প্রবেশ
নদের চাঁদ আসিয়া প্রাকার তুলিল বলিল,বেশ বেশ!
"আমার ঘৃত মধু আহারে প্রাণ মন দিলে কারে
সুন্দরী মহুয়া! সমাজ শাস্ত্র জলাঞ্জলি দিলে,
এতকাল কার পিছু রচিলাম সব; কার দ্বারে দ্বারে।"
কমলা সুন্দরী সমস্ত শুনিয়া অনিমেষ চাহিয়া রয়
কেন পুনরায় মর্ত্যে আসিলাম কিসের আশাতে
অদৃষ্টে এই ছিলো মোর হয়।।
নদের চাদ মহুয়াকে নিয়ে / গেলে দক্ষিণ দেশে
অশ্রুসিক্ত নয়নে ভাঙিল পালা সকলের বক্ষ ভেদে।
ভাটির দেশে ডিঙা বায় চাদ সাওদাগর
নতুন কিচ্ছা কইবে সগলকে
ও ময়না, তোরা করিসনে নড়চড়।।।
পরাজিত দুলদুলের মতো কমলা নামিল ফোরাতে
ডুবিয়া আত্মহনন করিল পুনরায় ;
পণ করিল আর কখনো আসিবেনা এই মর্ত্যে।।