রেইনট্রি গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে
দ্বাদশীর চাঁদ আলগোছে মুখ লুকায়।
আবার উঁকি দেয় চপল কিশোরের কৌতুহল নিয়ে
কালো মাটির লাল কৃষ্ণচূড়াকে আরেকবার দেখবে বলে।
হেডলাইটের আলোগুলো
একবার নিম্নগামী হয়
একবার ঊর্ধ্বগামী।
মনে হয় খুঁজে ফেরে পথের দিশা।
হেডলাইটের পেছনের মুখগুলো স্থির স্থবির
খোদাই করা পাথরের মুখ যেন।
কালো কাপড়ে ঢাকা আপাদমস্তক
সিনেমার জল্লাদদের মতো।
হেডলাইটের আলোগুলো
গোল পূর্ণিমার চাঁদের ঢঙে
কালো মাটির পথে মুখ ঢাকে ঢোলকলমীর ঝাড়ে।
মাটিতে দাগ রেখে যায় কালো গাড়ির চাকা
শ্বাপদের হেটে যাবার চিহ্নের মতো।
আজ শিকার ধরার দিন
খোঁজ মিলেছে চতুর্ভুজা থেকে
একেবারে পাকা খবর
নিস্তার নেই কোন পলাতক হরিণের।
দোতলা বাড়ির গেটে থামে হেডলাইটের আলো
সচ্ছন্দ গতিতে বুটগুলো ঢুকে যায় হরিণের আবাসে।
আলাপ জুড়বে বলে আদরে তুলে নেয় খাঁচায়
আবার হেডলাইট ঘুরে যায় ঢোলকলমীর ঝাড়ে।
দ্বিপদ হরিণ একবার ফুঁপিয়ে ওঠে নিরাপদ খাঁচায়
তারপর শীতল নিরবতা
হেডলাইট হঠাৎ একবার থামে মরা খালের ধারে
কয়েকটা নিরীহ গুপ গুপ শব্দ
যেন বোবায় ধরেছে কাকে।
হেডলাইটের আলো কালো রাতের বুক চিরে
ছুটতে থাকে গহ্বরের নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরবে বলে।
মরা খালের পাড়ে পড়ে থাকে নিথর শরীর
অনেকগুলো তপ্ত সীসার জ্বালা বুকে নিয়ে।
চোখের শেষ আলো খুঁজে ফেরে দ্বাদশীর চাঁদ
ঘাস কাদা মুঠো করে ধরা
কানে বেজে আছে মেয়েদের আলতো কথা -
বাবা, ফিরবে কখন? কাঁদছো কেন?
ফেরার পথ হারিয়ে কেঁদে ফেরে অসার শরীর
ঢোলকলমীর ঝাড়ের পাশে।
হেডলাইটের আলো দ্রুত সরে যায়
বুটপড়া পাথর শরীরগুলো বয়ে নিয়ে
আরেকটি অভিযান শেষে।
চাঁদ মুখ লুকায় রেইনট্রির পাতার ছায়ায়
রক্তের শুকিয়ে যাওয়া কালো দাগ মুখে এঁকে।

০৬.০৬.২০১৮
আরুয়া, উগান্ডা