একটাই তো পরীক্ষা বাবা
না হয় হয়নি ভালো
পরের বারেই পার হবো যে
সামান্য এই সাঁকো
তোমার হাতের আঙুল ধরে
হাঁটতে শিখেছিলাম
তোমার ছায়ার ভরসাতে
অনেক দূরে এলাম
মায়ের হাতের ভাতের দলা
কচুর ঘন্ট বড়ই কলা
নতুন চালের চিতই পিঠা
পুঁটি মাছের ঝোল
তাই দিয়ে মা মন বেঁধেছে
করিনি কোন গোল
বলতে আমায় চোখের মনি
তোমার মা যে আমি
ভেসে ছিলাম তোমার স্নেহে
ডুবিয়ে দিলে তুমি
আমি তোমার মেয়ে বাবা
সেই কথাটা গেলে ভুলে
পাশের বাড়ির মাসি-খালা
ওদের কথাই সত্যি পেলে
মা কে মেরে বেহুঁশ করে
জুড়ালে তুমি রাগ
বুঝে গেলাম তোমার মনে
ফুরিয়েছে ঝিয়ের ভাগ
তোমার কাছে আমার চেয়ে
পরীক্ষার ফল বড়
ফেল করেছি বলে এবার
জীবন তোমার জড়
এবার যদি ছায়া দিতে
হতেম কিছু জানি
রবি ঠাকুর নজরুল না হয়
জয়িতা বা রানী
কেন বাবা করলে এমন
বাঁচতে দিলে না যে
মেয়ের চেয়ে পরীক্ষা বড়
আবার প্রমাণ মেলে
এমন পরীক্ষা কেন হবে
কাকে জবাব দেবে
থাকো বাবা তোমায় নিয়ে
মাকে মেরো নাকো
আমার ছবি টাঙিয়ে রেখে
জীবন বয়ে নিয়ো
যাচ্ছি চলে সেই জীবনে
পরীক্ষা নেই যেথায়
পাশ ফেলের ভাবনা নেই
শুধুই অবকাশ মেলে
১ ডিসেম্বর ২০২৩
(বাংলাদেশে ২০২২ সালে মাত্র ৫৩২ জন আর ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে ৩৬১ জন কিশোর-কিশোরী, ছাত্রী-ছাত্র আত্মহত্যা করেছিলো। জয়ী সাহা, অশ্রুতা ঘরামি সহ যে সব বাচ্চাগুলোকে সম্প্রতি আমরা হত্যা করলাম পরীক্ষার ফলের উছিলায় (ওরা পরীক্ষায় খারাপ ফল করার পর বাবা-মা’র লাঞ্ছনা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে), তাদের প্রতি কর্পোরেট ক্ষমা চেয়ে। এদের কেউ হয়তো ব্যবসায়ী, কেউ নার্স, কেউ শিক্ষক, কেউ নেতা, কেউ মমতাময়ী মানুষ হতে পারতো। আমরা হতে দিলাম কোথায়?)