বেঁচে থাকার কি মানে -
যখন তোমার অস্তিত্ব টেনে ধরে শৃংখলিত আকাঙ্ক্ষা
পদদলিত হয় গোলাপের ঝাড়,
হাসনাহেনার লতানো আলিংগন
সুগন্ধ বেলীর ঝোপ আর
জবার উচ্চকিত শাখা।
বেঁচে থাকার কি মানে -
যখন প্রতিনিয়ত অপমানিত তোমার মনুষ্যত্ব
অথচ বোধহীনতায় তুমি নির্লজ্জ।
রঙিন বেসাতির অন্ধকূপ
চকমকে বিজ্ঞাপনের ঠুলি
তোমাকে ভুলিয়ে রাখে রাস্তার অভুক্ত শিশুর মুখ
কংকালসার মায়ের দুধহীন কুঁচকানো স্তন।
বেঁচে থাকার মানে কি -
যখন রাস্তায় পড়ে থাকা ছিন্ন পা বা হাত
সদ্য কিশোরীর ক্ষতবিক্ষত থ্যাতলানো দেহ
তরুণীর সর্বস্ব হারানোর আর্তচিৎকার
কিছুই তোমার মনের মধ্যে ছায়া ফেলে না।
বেঁচে থাকার মানে হলো -
শৃংখল ভেংগে জেগে ওঠা
মাথা উঁচু করে দেয়া অধিকারের চিৎকার
রক্তে ডাকানো বান
যে বানে ভেসে যায় ক্ষুধা জান্তব লালসা
আর অমানসিক আকাঙ্ক্ষা।
বেঁচে থাকার মানে হলো -
আগুনের নদীতে জীবন বাজি
রাইফেলের নলের সামনে বুক পেতে দেয়া।
উদ্ধত কৃপান ধরা হাতে কাস্তের ছোবল
কামুকের হাতে হাড়ভাংগা হাতুড়ির ঘা।
বেঁচে থাকার মানে হলো -
দেয়াল বেয়ে বেড়ে ওঠা অপরাজিতের ঝাড়
উঠোনে সাপ ডাকা নেশাতুর গন্ধের কামিনীর ছায়া
পূর্ণিমার রাতে তোমার হাত ধরে
চন্দ্রাহতের মতো ঘোর লাগা।
ঝুম বরষায় কাক ভেজা হয়ে পথে পথে
শিশুর সরল মুখে একটুকরো মিষ্টি হাসি
তরুণ মায়ের চিমসানো দেহে দুমুঠো তিনবেলা আহার।
রাজপথে ফুটপাতে অলিতে গলিতে
তরুনীদের ভয়হীন চলাচল
নদীর জলে অবগাহন সন্ধ্যা সকাল।
আর বাতাসের ঝিরি ঝিরি আনন্দে
ঝালমুড়ি চিবোতে চিবোতে
একটা সিগারেট।
তারপর,
আবার শুরু করা আরেকটি লাল ভোর।
০৫.০৫.২০১৮