আমি তো এখনো যাই কল্পনার ধূপখোলা মাঠে
চাঁদের হলুদ রোদে, কৈশরের দূরন্ত ঘোড়ায়

আমি তো এখনো যাই ফটিক জানির জলে
যেখানে চকচকে রুপালী আঁচল
হাটুজলে খেলা করে কচি কাঁচা মাছের বাথান।
টইটম্বুর দিঘীর পাড়ে ছুটে গিয়ে দেখি
এখনো মাছরাঙ্গা জলে বসে বসে
শিকারী চঞ্চু শানায়
সন্ধ্যার অলীক মেঘে।

দুরন্ত জীবনের চলমান পথে হঠাৎ
থমকে পেছন ফিরে তাকাতেইঃ

কতদিন পরশ পড়েনা পায়ের - -

এখনো কি লাঙ্গল কাঁধে হেঁটে যায় পৃথিবীর চরে
লাল বধু ঘোমটা খুলে বেড়ার ফাঁকে
চেয়ে দেখে গাঁয়ের স্বজন ??

এখনো কি ঘোষের ঘাটের মাঠে
খেলা করে ফিরে যায় এপাড়া ওপাড়ার ছেলে ?

এখনো কি মধুমতীর কোলে জেগে ওঠা
জমির দখল নিয়ে লাশ হয়ে ফেরে
ছমির শেখের ছেলে ?

সবাই ভুলেছে তাকে
মা এখনো তার দেখে যান  অদৃশ্য খোয়াব।

এখনো কি বেঁচে আছে নোয়াব আলী চাচা !
সারির কন্ঠ তার ছু্ঁয়ে যেত আকাশের পায়া
প্রজন্ম পাড়ী দিত স্বপ্ন সাগর
পল্লীবালার লাল পেড়ে শাড়ীর আড়ালে ঢাকা
সাজানো ঘুঙুর থেমে যেত মুহুর্তের মাঝে
আজ তার ঠাঁই হত রাষ্ট্রঘোড়ায়
স্বাধীনতা ও একুশের পদকের কাছে।

এখনো কি হিজলের চর হতে কথা কয়
আকাশের অলীক নীলিমা ছুঁয়ে দিয়ে
গাভীন ধানের শীষ !

এখনো কি চেয়ে আছে সুপারী পাতার ফাঁকে
হাজার বছর আগের
উদ্ ভ্রান্ত ও কল্লোলিত তার দু'টি চোখ !

যদি যাই  তবে যাবো  মাছোর খালের তীরে
যেখানে দাঁড় বেয়ে চলে যায় জেলেদের নাও
গাংচিল উড়ে ফেরে চুনোপুটি মুখে
পরম স্বপ্ন সুখ।

যদি যাই তবে যাবো সোনালী ধানের ক্ষেতে
প্রিয়তম গান গেয়ে সানাইয়ের সুর সাথে বাজে তো বাজুুক
যদি যাই তবে যাবো ভাংগনপাড়ের কাছে তেকাটিয়া গ্রামে
দিন ক্ষণ প্রহর গুনে কবিতাকে বুকে নিয়ে
আমাদের প্রতিভা আছে চরম উৎসুক।
******************************
রচনাকাল ১৬-১২-১৯৯৩ সাল।
সোনাডাঙ্গা, খুলনা।