এই বেশ বেঁচে গেছি
যদি বলতো সে 'ভালোবাসি', এক সন্ধ্যায়
যদি না ফেরাতো সে আমায় তীব্র হেলায়
এলোচুল বাঁধতে হতো আজকে আমায়।
অগোছালো কাঁচা হাতে এলোমেলো বেণী
লাগতো কি ভালো তার? কে জানে! কী জানি!

এই বেশ বেঁচে গেছি
যদি বলতো সে ভালবাসি তাকিয়ে এ চোখে
তার মন খারাপের দিনে, ছোট-ছোটে শোকে
সাজালে অপরাজিতায় তাকে, বলতো কী লোকে!
রঙনে রঙিন হয়ে  সে কি ক্ষীণ লাজে
লুকাতো আপন মুখ অবগুণ্ঠন মাঝে?

এই বেশ বেঁচে গেছি
যদি বলতো সে 'ভালোবাসি' কভু একবার!
হয়তো শীতের সকাল পুরো না হতেই তার
কে জানে চাপতো ভুত মেঠো পথে হাটবার
তার বাঁকা চোখের ওই করুণ আবদার
উপেক্ষার ছিলো নাতো সাধ্য আমার!

এই বেশ বেঁচে গেছি
যদি বলতো সে 'ভালোবাসি' এ কাঁধে আমার
তার নিঃস্পৃহ জীবনেও একরাশ মুগ্ধতা আর
হাসি ছড়ানোর চাপত কী গুরু-দায়ভার!
নগণ্য এ জীবনে ছিলো কী সে সাধ্য আমার _
আলগোছে অগোছালো তাকে আগলে রাখার!

এই বেশ বেঁচে গেছি
যদি বলতো সে 'ভালোবাসি' না করে অপমান
তার রোজকার সব কথা,  হাসি-ব্যথা-গান
সাজানোর,  তার সব অভিযোগ অভিমান
জানানোর দিনলিপি হতাম আমি! এই প্রাণ
সইতো না কভু প্রিয়তম দেবতার সেই বরদান!

এই বেশ বেঁচে গেছি
যদি বলতো সে 'ভালোবাসি' হয়ে বেখেয়াল
তার ক্লান্তিতে হেলান দেবার একটা দেয়াল
হতাম। একটা হৃদয় হতাম যাহা চিরকাল
হাসত হাসিতে তার, হতো তার লজ্জায় লাল
কাঁদত ব্যথায় তার গাড় নীল হয়ে চিরকাল!

এই বেশ বেঁচে গেছি
যদি বলতো সে 'ভালোবাসি' বা র'তো নিরুত্তর
হতাম  শ্রান্তি-হারী আমি এক কুড়ে ঘর
রোজকার ঘামঝরা ক্লান্ত দিনের পর
যেথায় সে মাথা গুজে হয়ে যেত জড়!
কাপত এ বুক তার পরশেতে থর থর!

এই বেশ বেঁচে গেছি
যদি বলতো সে 'ভালোবাসি' কভু আনমনে
'একান্ত ব্যক্তিগত' কাউকে সে সেই ক্ষণে
খুঁজে পেত নিরালায় মনের এক কোনে।
আমার করে চাইনি তাকে, অতি সযতনে
চেয়েছিনু তারই হতে! বুঝত সে মনে মনে!

এই বেশ বেঁচে গেছি
যদি বলতো সে 'ভালোবাসি', এক সন্ধ্যায়
যদি না ফেরাতো সে আমায় তীব্র হেলায়
যদি কিছু ব্যথা না-ই দিতো এই অবেলায়...