অনড় ফ্রেমের স্বচ্ছ চশমায় ঢাকা দুটো চোখ
সব কিছু দেখে, তবু আখির কোটরে সেই
নয়নতারার কোনো ব্যাকুলতা—
কোনো অস্থির চলন নেই আজ;
ইতস্তত পথিকের হাবভাব নেই তার স্বভাবে শরীরে।
কোনো নিবিড় ক্লান্তি, ক্লেশ নেই—
অনুরাগ, বিরক্তি নেই—দ্বিধা, আফসোস নেই—
লজ্জা, গ্লানি, সংকোচ নেই— অপ্রস্তুত ভাব নেই—
অনুশোচনার নেই কোনোই বালাই:
দাবানলে ছাই হয়ে যাওয়া বনে সে যেন
উচ্চতম নিশ্চল শিশুটির মতো নির্মম মাথা তুলে আছে—
এত নিরাবেগ, নির্বিকার হয়ে এভাবে মানুষ বাঁচে?
অথচ কী সৌম্য স্বভাব ছিল একদিন এই দুটো চোখে:
ঘৃণা কিবা ভয়ে নয়, বিদঘুটে ন্যাকামোয় নয়—
একদিন চড়ুইয়ের মৃতদেহ, শালিকের ভাঙা ঠ্যাং দেখে
ভূমিকম্পের মতো থরথরে কাঁপন ধরে যেত বুকে—
একদিন প্রেম ছিল পরাণের সহজাত প্রবণতা;
প্রাণের প্রথম ভাষা ছিল ভালোবাসা—
হৃদয়ের অস্ফুট মুদ্রাদোষ ছিল 'ভালোবাসি';
প্রশান্তি রেখা ছিল কপোলের চারু কারুকাজে—
একদিন নির্বোধ দুটো ঠোঁটে ছিলো
হেমন্তের রৌদ্রোজ্জ্বল হাসি।