আমি কেন পারি না নলিনী?
যখন চলন বিলের থেকে উবে যায় সব জল;
সব মাঠ-ঘাট ধান ক্ষেত, পরিশ্রান্ত পৃথিবীর প্রশস্ত প্রান্তর,
সাত রঙে রাঙা রঙিন আকাশ থেকে মুছে যায় সব আলো—
সন্ধ্যার আঁধার জমে গাঢ় আস্তরণ ফেলে ধরিত্রীর বুকে;
যখন হঠাৎ ঝড়ে খসে পড়ে আহত পাখির ডানা—
ধর্মের বর্মেতে পিশাচেরা বুক ঢেকে পুড়ে ফেলে স্বস্তির আস্তানা,
আমি কেন পারি না তখন তোমার মুখের পানে চেয়ে—
শুধু তোমার চোখের পানে চেয়ে, দারুণ প্রেমেতে মজে যেতে?

জানি, আমি আজ জানি,
পৃথিবীর কাদামাটি দিয়ে গড়া অভিমন্যুর হৃদয়েতে
সপ্তরথীর চেয়ে নৃশংসতর পীড়া দিয়েছিল
পৃথিবীর অখ্যাত প্রেমিকারা— কোনো এক রূপবতী নারী!
তাই তোমারই ঠোঁটের ছোঁয়া মনে হয়
কেউটের চুম্বন; ঝিরিঝিরি মিহি এলোচুল থেকে
দাবদাহ,  দাবানলে পোড়া  আহত বনের ছাই,
আর ঝলসানো মৃগ-শাবকের পোড়া মাংসের ঘ্রাণ ভেসে আসে।

জানি তোমার বুকের মাঝে অগন্তি অভুক্ত শিশুর কান্নার
বীজ বোনা আছে; তবু ওই ছলছল চোখ, এক বুক অভিমান
আজ মনে হয় যেন কপট এ পৃথিবীর ক্রূর এক মেকি পিছুটান।