তোমার ভোটাধিকার আছে বলে কজন নিঝুম প্রজাপতি
ক্যানভাসারের মতো উড়ে যায় গহন দুপুরে
আমার চুলের গুচ্ছ ছুঁয়ে, কান ছুঁয়ে ।
ব্যালটবাক্সের গায়ে বহুবর্ণ স্বপ্নের কামিজ ঢিলেঢালা,
নানান প্রতীক ওড়ে চতুর্দিকে । স্বর্ণকন্ঠ পাখিরা এখন
কেবলি স্লোগান গায়, পরীদের নাচ জমে ওঠে
বেবাক ব্যালটবাক্স ঘিরে । ভোট দিন ভোট দিন
বলে দেবদূত কতিপয় পা দোলান দূরে অলীক কার্নিশে !
সহসা বিলোন তারা রঙিন পুস্তিকা, ম্যানিফেস্টো,
করি না কখনো পাঠ । সেসব কাগজ, মনে হয়,
নীলিমায় উড়ে যাওয়া ভালো ;
ওরা মেঘে গেলে পাবে ভিন্ন অবয়ব,
কিছুটা সত্যতা পেতে পারে ।
কতবার ভোটকেন্দ্র ছেড়ে আমি
এসেছি নিজের খুব কাছে ফিরে, পা মেলে আপন
হৃদয়ের একলা চত্বরে,
নতুন প্যাকেট থেকে তাজা সিগারেট বের করে
খানিক ভেবেছি কারো কথা, ধোঁয়া ছেড়ে
ভেবেছি সমুদ্রে হোমারের আর যেহেতু ইউলিসিস নই,
এসেছি আবার ফিরে জীর্ণ ঘরে মশার গুঞ্জনে,
স্বপ্নের চিবুক ধরে শুয়ে থাকি, কখনো চেয়ারে ঢুলি আর
অকস্মাৎ তড়িঘড়ি ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা চাই বলে করি পায়চারি ঘরময় ।
কখনো আমাকে ক্ষিপ্র শোকে স্বপ্ন, যেমন শশক লতাগুল্ম ।
তবু আমি ভোটকেন্দ্রে যাবো, বসবো সহাস্য মুখে
নতুন কাপড়-ঘেরা-এলাকায় প্রীতি ম্যাজিশিয়ানের মতো,
হঠাৎ উড়িয়ে দেবো রুমাল, পায়রা ।
ব্যালটপেপারে খুব ঝুঁকে
আমি ভালোবাসাকেই ভোট দিয়ে ঘরে
কিংবা পার্কে যাবো শিস বাজাতে বাজাতে ।
(কাব্যগ্রন্থ : বাংলাদেশ স্বপ্ন দ্যাখে )