ভোরের গোলাপ দ্যাখো মেলেছে কী পূর্ণ দৃষ্টি তাজা,
টেবিলে রোদের গাথা, হলতে পর্দা দোলে মাত্রাবৃত্তে;
উড়িয়ে-আঁচল, ঢেউ তুলে বায়ুস্তরে একাকিনী
তুমি কি আসবে ফের সান্নিধ্যে আমার?
বাগানে পাখির ঝাঁকে, পাতায়-পাতায় আনন্দের
গুঞ্জরণ, আলনায় শার্ট আর পাজামায় জাগে
শিহরণ অব্যক্ত স্বপ্নের মতো। সুগন্ধি নিঃশ্বাস নিয়ে
তুমি কি আসবে ফের সান্নিধ্যে আমার?
পুরোনো কবরে সাদা কবুতর ঝরিয়ে পালক
উড়ে যায় আসমানে, গোর-খোদকের শক্ত হাতে
হঠাৎ লাফিয়ে ওঠে গন্ধরাজ, মাধুর্যে সুস্মিতা,
তুমি কি আসবে ফের সান্নিধ্যে আমার?
এই তো ডালিম গাছে কত যে স্বপ্নিল টেলিগ্রাম,
টেলিফোন যেন মেঘচর পাখি বিমুগ্ধ উড্ডীন,
তোমার চন্দ্রালোকিত কণ্ঠস্বর হওয়ায় ঝরিয়ে
তুমি কি আসবে ফের সান্নিধ্যে আমার?
বৃষ্টিতে পাখির কান্না, আমার হাতের নখ থেকে
ভুরু থেকে, ওষ্ঠতট থেকে নিঃসঙ্গতার মতন
বৃষ্টি ঝরে অবিরল, কালো বৃষ্টি-জাল ছিন্ন করে
তুমি কি আসবে ফের সান্নিধ্যে আমার?
যে-দরজা নেই তা খোলার জন্যে একটি সোনালি
চাবি পেয়ে গেছি গোধূলিতে, একজন আলুথালু
কিশোর সারস হাতে রয়েছে দাঁড়িয়ে-সেই পথে
তুমি কি আসবে ফের সান্নিধ্যে আমার?
রেশমি পতাকা হয়ে ওড়ে খবর কাগজ আর
কফির বাতিল কৌটো, পিলসুজ স্বপ্নে ভরপুর;
কবি শব্দহীনতার ছায়ায় ঘুমোয়, বাণী হয়ে
তুমি কি আসবে ফের সান্নিধ্যে আমার?
(উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে কাব্যগ্রন্থ)