আমার জানালা থেকে দেখি লক্ষ লক্ষ মৃত পায়রা
স্তূপ হয়ে পড়ে আছে চৌদিকে। পাঁচ নিনিটে পাঁচ হাজার
ঝকঝকে মোটরকার গুঁড়িয়ে যায় সড়ক দুর্ঘটনায়।
একটা অগ্নিকুন্ডের ভেতরে পুড়ছে
পলাশী, নবাব সিরাজন্দৌলার মুকুটে
সূর্যাস্তের রক্তবমি ঝলসে ওঠে বারংবার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তাড়া তাড়া নোট
এক ঝাঁক ক্রুদ্ধ পাখি হয়ে ঠোকরাচ্ছে পথচারীদের;
হাজার হাজার কাঠমোল্লার আকাট হৈ হল্লায়
ডুবে যাচ্ছে প্রগাঢ় উচ্চারণ। শক্তিশালী কবিসংঘ
অষ্টপ্রহর মেতে রয়েছে বাথরুমের দরজা-জানালা, পাইপ,
বেসিন আর কমোড সারাবার কাজে এবং
কুকুরের পাল কবিতা উগরে দিচ্ছে মধ্যরাতে।
রাজনীতিকগণ কুসীদজীবীর কাছে সত্যকে বন্ধক রেখে
মজেছেন ফটকাবাজারের তেজিমন্দিতে।
স্বর্গতন্ত্রের দোহাই পেড়ে
মৃতেরা সোৎসাহে কবর গিচ্ছে জীবিতদের!
ডালের বাটিতে মরা মাছির মতো ভাসছে একদা-সুখী গ্রাম,
বিস্কুটে কামড় দিতে গিয়ে মনে হয় দুঃস্বপ্ন চিবুচ্ছি
আর আমার উদরে ঘুন্টি-অলা গলা ঢুকিয়ে দ্যায়
ইমরুল কায়েসের উট,
যে মেয়েকে চুমো খেতে যাই, তারই মুখে নিমেষে
গজিয়ে ওঠে ফণিমনসার বন,
বাহুমূলে পুরনো উইঢিবি।
খুনখারাবির কাল এখনো হয়নি শেষ, এদিকে
আহত মুক্তিযোদ্ধার বিবর্ণ ক্রাচে ধরেছে ঘুণে।
এবং নবাব সিরাজন্দৌলা করতলে
নিজের কাটা মস্তক নিয়ে আর্তনাদ করতে করতে ক্রমাগত
হোঁচট খেয়ে চলেছেন বাংলাদেশের নতুন মানচিত্রে।
(ইকারুসের আকাশ কাব্যগ্রন্থ)