শুধু প্রশ্নে আমি, উড্ডীন যে-প্লেন কোনো দিন
পারে না নামতে নিচে এরোড্রমে, ঘোরে দিগ্ধিদিক,
গুঁড়ো হয় বিস্ফোরণে, অথবা নিখোঁজ তারই মতো
উত্তর দেয় না ধরা মননের মায়াবী গণ্ডিতে।
বরং ঘোরায় নিত্য কত ছলে, পড়ি খানা-খন্দে,
আবর্তে তলিয়ে যাই, মাথা ঠুকি পাথুরে গুহায়।
গাছ কি শিউরে ওঠে ঠাণ্ডা ভয়ে যখন শরীর
থেকে তার পাতাগুলি ঝরে যায় অথবা আনন্দে
উল্লসিত পাখির চোখে সোনালি শস্যের মাঠ কোনো
কখনো ওঠে কি জ্ব’লে স্বপ্নের মোহন আমন্ত্রণে?
মাছ কি বিতৃষ্ণ হয়ে মগ্ন হয় আত্মনিপীড়নে
কোনো ক্ষণে জলের বাগানে চায় পাখির কোরাস?
নিজেকে নিঃসঙ্গ ভেবে পথের কুকুর ফুটপাতে
রাত্রির নেশায় মত্ত খোঁজে কোন একান্ত সুহৃদ?
সন্দেহ ক্রমশ কেন হতাশায় হয়ে যায় লীন
বুদ্ধির জটিল চৌমাথায়? অনিদ্রার আক্রমণে
বেসিনে আরশোলা দেখে আঁতকে কেন উঠি মধ্যরাতে
মুখ ধুতে গিয়ে, কেন ভাবি কাফ্কার নায়কের
পরিণা, বিপন্ন অস্তিত্ব যার বুকে হেঁটে হেঁটে
শুনতে চেয়েছে জ্যোৎস্না-চমকিত বেহালার সুর,
চেয়েছে খুঁজতে সম্পর্কের অবলুপ্ত তন্তুজাল।
শুধু প্রশ্নে বিদ্ধ আমি আজীবন, উত্তরের প্লেন
নামে না ঘাঁটিতে কোনো, থামে না তর্কের কোলাহল।
(রৌদ্র করোটিতে কাব্যগ্রন্থ)