রাতে চাঁদটা হঠাৎ যেন বেজায়
বেঁকে বসল। বলা যেতে পারে, মেজাজ তার হয়তো
অকারণেই বিগড়ে গেছে। হয়তো
এখনই সে ছিটকে মিলিয়ে যাবে জলের ঢেউয়ে।
হঠাৎ আকাশটাকে কেন যেন বেখাপ্পা
ঠেকছে। বস্তুত যেন আকাশকে কেউ ভীষণ
চড় কষিয়ে তার সৌন্দর্যকে নির্দয়ের ধরনে
ধ্বংস করে ফেলেছে। যে-জলাশয় আমার অনেক
সময়কে সাজিয়ে দিয়েছে বিচিত্র সব
চিত্রের আবদানে তার এই বর্তমান চেহারা
কেন জানি আমি কিছুতেই বরদাস্ত করতে পারছি না।
কোনও মুহূর্তেই। এই জলাশয় ছুঁতে পারছি না কিছুতে।
তবু কেন যেন আমি প্রায়শ এই জলাশয়ের
কাছে চলে যাই কখনও ভোরবেলা, কখনওবা
জ্যোৎস্নারাতে; কখনও কখনও ছুঁই তার করুণ
জলরাশি। কিছুতেই তার আকর্ষণ পুরোপুরি ছুড়তে
পারি না বাতিলের নর্দমায়। এত অপছন্দের পরেও
তার দিকেই তাকাই তাকে এত আকর্ষণীয় কেন যে মনে হয়!
ভাবি কখনও আর যাব না কিছুতেই
সেই বিচ্ছিরি জলাশয়ের কাছে নষ্ট করতে
সময়। কী লাভ ক্ষণে-ক্ষণে বেহায়া ব্যাঙের
লাফ দেখে, পচা জলরাশির দুর্গন্ধ শোঁকা?
প্রতিজ্ঞা করি কখনও এদিকে পা ফেলব না কিছুতে,
অথচ বেলা অবেলায় চ’লে আসি; শুনি বাঁকা হাসি!
(অন্ধকার থেকে আলোয় কাব্যগ্রন্থ)