নৈঃসঙ্গ্য লালিত আমি। শিরায় শিরায়, লোমকূপে
কী শীতল স্রোত বয় সারাক্ষণ, অস্থিমজ্জা
নিঝুম পল্লীর মতো। নিজে খাপছাড়া বলে লজ্জা
পাই খুব একান্ত নিজেরই কাছে। নৈরাশের যূপে
প্রায়শ আমাকে ঠেলে দ্যায়, দ্যায় বিরূপ দঙ্গলে
ছুঁড়ে ক্ষিপ্র আমার ভেতরকার কোনো প্রতিপক্ষ
এবং মনুষ্যরূপী মড়াখেকেদের সঙ্গে সখ্য
জমে ওঠে নিত্য দিকচিহ্নহীন অসিত জঙ্গলে।
আমি কি নৈঃসঙ্গপ্রিয় আজীবন? গাছপালা, পাখি
পাখালির ভিড়ে, পশুদের কাছে, খরগোশের গায়ে
মুখ ঢেকে, জনহীন ঝর্নাতলে আনন্দ আনন্দ
ব’লে মেতে থাকতেই চাই জীবনের সব ফাঁকি,
উন্মত্ত সংঘর্ষ রক্ত ফেনিলতা ভুলে বনচ্ছায়ে?
মানুষের সঙ্গ অভিলাষী আমি, থাক শত দ্বন্দ্ব।
(মাতাল ঋত্বিক কাব্যগ্রন্থ)