যাচ্ছিলাম একা সুনসান অচেনা রাস্তায় । হঠাৎ
কোত্থেকে ক’জন ডাকাবুকো লোক আমার
ওপর প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ে। কেউ
টুঁটি চেপে ধরে আমার, কারও মুঠোয়
বন্দি আমার মাথার উস্কো-খুসকো চুল
আর অন্য একজন ক্রমাগত মারছে লাথি।
মগের মুল্লুক না কি? কেউ কি নিজের উন্মশহরে
নিরাপদে পথে হেঁটে চলতে
পারবে না? তাকে কি গুণ্ডাদের খঞ্জরের আঘাতে
মুখ থুবড়ে পড়তে হবে খোলা রাস্তায়? জ্যোৎস্নাস্নাত
পথ কি রঞ্জিত হবে নিরপরাধ, কারও সাতে, পাঁচে
না-থাকা, নিরামিষ ধরনের ব্যক্তির রক্তধারায়?
কখনও কখনও মনে হয়, আমার প্রিয় শহর
এই ঢাকা রত্নপুরী, এখানে
নগরবাসী সবাই উত্তম চরিত্রের অধিকারী,
প্রত্যেকেই ধীমান, শিল্পকলা-চর্চায় মনোযোগী। কখনও
কখনও কবিমেলা অনুষ্ঠিত হয় অপরূপ উৎসবের
ধরনে, সংবাদ যার রটে যায় দেশ-দেশান্তরে।
এই স্বপ্ন, এই অভিলাষ অর্ধসত্য হয়ে রয়
কারও কারও চেতনায়, কেউ কেউ
খেলাঘর ভেঙে গেলে বেদনার্ত চিত্তে কবিতা রচনায়
মাতাল হয়ে খাতার পাতা কখনও নিরাশায়, কখনও-বা-আশায়
বাংলা বর্ণমালার রূপ নানা সাজে সাজিয়ে
আসমানের মেঘে, বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ে ভাসায়।
(গোরস্থানে কোকিলের করুণ আহবান কাব্যগ্রন্থ)