দূর থেকে দেখে ঈর্ষার তাপ লাগে সত্তায়।
তার এলোমেলো রুক্ষ চুলের ঘন অরণ্যে
হরিণের খেলা,
সোনালি সাপের এঁকে বেঁকে চলা, অথবা কখনো
কাঠুরের চোখ, শাণিত কুঠার দেখেছি সহসা।
জ্বলজ্বলে গালে
কর্কশ দাড়ি, ছিপছিপে গায়ে ছেঁড়া পাঞ্জাবী, পায়ে চম্পল
বিবর্ণ আর মুমূর্ষু খুব। রাস্তার ভিড় গহন দুপুরে
চিরে যায় সেই
সতেজ একলা যুবক, যেমন সাগর-জলের বুক কেটে দ্রুত
এগোয় জাহাজ, কেমন অচিন। নিজের ভেতর
জ্বলি অনিবার।
ঔদাস্যের
পাল তুলে চলে হাওয়া থেকে কী যে যখন তখন
মোহন মাগনা কুড়িয়ে সে নয়, আবার ফিরিয়ে
দ্যায় সহজেই
শূন্যের হাতে রূপান্তরের ভিন্ন খেলায়, যেন যাদুকর।
আমাকে দ্যাখেনা। আমি তাকে দেখি, যেমন দুপুর।
রোদ্দুর দ্যাখে।
তার জ্বলন্ত
মহানিশাময় ক্ষুধার্ত চোখ কোথায় কখন
হয় নিবদ্ধ, কেউ তো জানে না। বুঝি তার চোখে
কিলবিলে কীট, পদ্ম-কোরক! পদযুগল তার অবশ্য এই
শক্ত মাটিতে সচল, অথচ প্রায়শই মাথা মেঘমালা ছোঁয়।
কখনো সখনো
থাকতে দ্যায় না আমাকে আমার মধ্যে সে তেজী,
আমাকে আমার গহন ভেতর থেকে টেনে আনে!
বাইরে দাঁড়িয়ে
বড় অসহায়, ভীষণ নগ্ন, আড়ষ্ট লাগে।কিন্তু সে রোজ
ত্রিলোক-বিহারী। দূর থেকে দেখে আমি কি শুধুই
জ্বলতে থাকবো?
(প্রতিদিন ঘরহীন ঘরে কাব্যগ্রন্থ)