ধুলো গিলে ভিড় ছেনে উকুনের উৎপাত উজিয়ে
ক্লান্তি ঠেলে রাত্তিরে ঘুমোতে যাই মাথাব্যথা নিয়ে।
না-জ্বেলে ক্ষয়িষ্ণু মোমবাতি স্বপ্নচারী বিছানায়
গড়াই, লড়াই করি ভাবনার শক্রদের সাথে-
হাত নাড়ি লাথি ছুড়ি পৃথিবীর গোলগালা মুখ
লক্ষ্য করে। বিবেকের পিঁপড়ে যদি সত্যি হেঁটে যায়
পিচ্ছিল দেয়ালে, মন থেকে মুছে নেব ছোটখাটো
পাপবোধ অল্পবিস্তরেণ…পোষমানা মূল্যায়নে
পাব সুখ দেখব কি নেড়েচেড়ে এক টুকরো হলদে
নিষ্প্রাণ কাগজে মোড়া আত্মা, সত্যি একরত্তি সেই
আধ্যাত্মিক পিণ্ড…আর পরাবিদ্যা ভাসাব জ্যোৎস্নায়?
দিনে কৃষ্ণচূড়া রাতে রজনীগন্ধার স্পর্শ যারা
পেতে চায় অন্তরঙ্গ সাহচর্যে, যদি বলে তারা
‘গুনে-গুনে রেজগি দিয়ে প্রতিদিন অভ্যাসবশত
ছুঁয়েছি লাভের বুড়ি, লোকসান বলে কাকে জানি না ইয়ার’
‘কী দেবে জবাব তবে অসংখ্য তারার ব্যালেরিনা,
ভ্যানগগ রক্তে তার কালো কাক ফসলের ক্ষেত
সূর্যমুখী এক জোড়া জীর্ণ বুটজুড়ো কেবলি মথিত করে
রোদে সূচ্যগ্রে বিদ্ধ হল শাশ্বতীর আকাঙ্ক্ষায়,
সহযাত্রী বন্ধু তার হলুদ যেসাস খোঁজে আরেক প্রান্তরে
নতজানু, ঊর্ধ্ববাহু, কণ্ঠে কালো বৃষ্টির আরক।
এ-পাড়ায় ১৭টি উজবুক ৫ জন বোবা
৭টি মাতাল আর ৩ জন কালা বেঁচেবর্তে
আছে আজও দুর্দশার নাকের তলায়। মাঝে-মাঝে
দুর্লভ আঙুর চেয়ে কেউ-কেউ তারা বলে থাকে
‘টক সব টক-তার চেয়ে তাড়ির ঝাঁঝালো ঢোঁক
ঢের ভালো, ভালো সেই গলির মোড়ে জ্বলজ্বলে
পানের দোকান আর বাইজির নাচের ঘুঙুর।
বমির নোংরায় ভাসে মেঝে, রুটির বাদামি টুকরো
চড়ুই পালাল নিয়ে। তাকাব না কখনো বাইরে…
ঘরে জানলা নেই…হলুদ যেসাস বিদ্ধ কড়িকাঠে…
রৌদ্রঝলসিত কাক ওড়ে মত্ত রক্তে কাঠফাটা
আত্মার প্রান্তরে। সারারাত
অনিদ্রা দুঃস্বপ্ন আর
ছারপোকা, ছিদ্রান্বেষী ইঁদুরের উৎপাত উজিয়ে
ময়লা চাদর ছেড়ে উঠি ফের মাথাব্যথা নিয়ে।
(রৌদ্র করোটিতে কাব্যগ্রন্থ)