ভাবিনি চলার পথে এত বেশি কাঁটা
এবং পাথর বারবার
আমাকে ভোগাবে নানাভাবে। ছেলেবেলা
যখন পিতার আর মাতার মমতা
আমাকে রেখেছে নিত্য ঢের
কষ্ট থেকে মুক্ত, জেগেছেন সারারাত।
বেশ আগে পিতামাতা আমাকে সংসারে
রেখে চ’লে গেছেন ওপারে
জীবনের। সত্য কথা করি উচ্চারণ
আমার নিজের প্রায় শেষ-বেলায়-এখন
বস্তুত তাদের কথা প্রতিক্ষণ মনে পড়ে না কিছুতে
মাঝে-মধ্যে পড়ে আর কখনও-সখনও অশ্রু ঝরে।
নিজেও জনক আমি একজন যার
ছোট এক ছেলে হারিয়েছে প্রাণ জলাশয়ে
সাঁতার জানেনি ব’লে। কখনও-সখনও
মনে হয়, বেজায় করুণ সুরে ডাকে সে আমাকে
ভুলে-থাকা মেঠো-পথে। তখন নিজেকে
বড় বেশি অসহায়, এমনকি কেমন নিষ্ঠুর মনে হয়।
আমার সে-সন্তানের মাকে ভুলেও কখনও তার
ছেলেটির কথা তুলে দুঃখ দিতে চাই না কিছুতে।
কখনও-সখনও কী-যে হয়, সন্তানের
অভিমানী মুখ আজও তাকায় আমার দিকে। আমি
ভীষণ লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলি, চুল
ছিঁড়ি বারবার আর জলাশয় হাসে ক্রূর হাসি!
(অন্ধকার থেকে আলোয় কাব্যগ্রন্থ)