কত সাধ করে হরফের নীড় সাজিয়ে ছিলাম; তড়পানো
পান্ডুলিপি, বাবুই পাখির বাসা যেন, খর তুফানের তোড়ে
এঁটেল মাটিতে গড়াগড়ি যায়, খড় সমুদয়
কুড়িয়ে আবার জড়ো করি, বিষাদের চোখ জ্বলে
নিরালায়।
এখনই কি উদ্যমের সোনালি প্রন্তর ছেড়ে অসহায় চলে
যাব কালো কুটিরে একাকী, অবনত? মুখ ঢেকে
রাখব হাঁটুতে ক্লান্ত, শস্যহারা কৃষকের মতো? প্রত্যাশার
শব পোড়ে ধোঁয়াটে শ্মশানে, ভয়ে চোখ বন্ধ করব না
আর।
কলকলে জলে ধুয়ে যাবে জেনেও বালক নদীতীরে গড়ে
সাধের বালির ঘর; আমিও কি অনুরূপ খেলা
নিয়ে মেতে আছি নিত্যদিন প্রতারক ভরসায়
শব্দের অতীত শব্দ ছুঁয়ে ছেনে? আমি এই খেলা ছাড়ব না।
আমার ললাটে আজ যৌবনের ভস্মটিকা, রক্তে হিমঝড়
অত্যাসন্ন, কে এক কংকালসার, ভয়ঙ্কর লোক
নিঃশব্দে আমাকে হাত ধ’রে টেনে নিতে চায় হু হু
হাড়ের উদ্যানে, আমি তার সহযাত্রী হ’তে অস্বীকার করি।
পুনরায় সকালবেলার রোদ চিকচিক করে মেরামত-করা
হরফের নীড়ে আর অস্ফুট শব্দের শিশু গলা
বাইরে বাড়িয়ে দেয়। এই আয়োজন সঙ্গে নিয়ে
স্বপ্নঙ্কিত পতাকা উড়িয়ে যাব আকাঙ্ঘিত গোলাপ বাগানে।
(হরিণের হাড় কাব্যগ্রন্থ)