ঢের পথ ঘুরে এক হ্রদের কিনারে এসে বসি
সন্ধেবেলা শারীরিক ক্লান্তি মুছে ফেলে
শান্তির শীতল স্পর্শে ডুবে
যাওয়া খুব সহজেই হবে-
এমন ধারণা খেলা করছিল কিছুক্ষণ থেকে।
ফলত হ্রদের দিকে তাকাই আনন্দে প্রীত জলে।
মনে হ’ল, প্রীত জল থেকে মাথা তুলে
তাকাল আমার দিকে অপূর্ব সজল চোখে আর
ইশারায় দিল ডাক। অপরূপ তরুণীর আহ্বান উপেক্ষা
করার ক্ষমতা কোনও মানবের নেই। আমি জলে নেমে
যাওয়ার আগেই দৃশ্য তরুণীবিহীন হয়ে গেল।
বিষাদ আমাকে ছেয়ে ফেলে, তবুও মুক্তির আভা জাগে।
বেশ কিছুক্ষণ পর আসমানে যুবতীর সুডৌল স্তনের
মতো চাঁদ জেগে ওঠে। জ্যোৎস্নাধারা হ্রদ,
পাশের গাছপালা, ঝোপঝড় যেন
বাতাসের স্পর্শে নর্তকীর মতো হয়ে যায় আর আমি
লোভী বালকের মতো তাকাই কাছের
প্রকৃতির দিকে, ভাবি কী মহিমা ছড়ানো চৌদিকে।
সমুখে তাকিয়ে ভাবি, আমি কি এখন হ্রদে নেমে
ভাসাব নিজেকে? হয়তোবা আমার প্রকৃতি-প্রেমে কোনও
জলপরী মুগ্ধ হয়ে কাটবে সাঁতার বেপরোয়া
কবির সান্নিধ্যে-হয়তোবা তার মায়া
ক্ষণিকের হলেও বয়েসি লোকটির কতিপয় মুহূর্তকে
রাখবে অক্ষয় ক’রে। দেবে কি কবিকে অমরতা?
(অন্ধকার থেকে আলোয় কাব্যগ্রন্থ)