তুমি কি নও কভু বিচলিত, বিস্মিত
অভিযোগ দয়িতার
নাকি মুখোশ থাক এঁটে উদ্বেগহীন সুস্থির
আবেগমুক্ত, ভাবলেশহীনতার।
স্নেহী পিতার অকাল বিয়োগ
শৈশাবধি পিতৃসোহাগ হারা
অনুদিন কাটে মায়ের ছায়ায়
গভীর মমতায় ঘেরা।
বুকের পাঁজর ভেঙ্গে
সে মা-ও ছাড়ি বহুদূর পরপার
অমনি দু্ঃসময়ে ভীষণ অসহায়
কেমনে সইব দহন, অনন্ত যাতনাভার।
সেই শেষ কবে কান্না থেমেছে
ফুরায়েছে চোখের পানি
জীবিকার লাগি কৈশোরে ছোটা
হয় সক্ষম, বাস্তবতা অনুসন্ধানী।
অজান্তে কখন নিষিদ্ধ হয়েছে
সকল যন্ত্রণা ক্লেশ
অনুমতি নেই নিজেকে ছোঁয়ার
বিষণ্ণতা অবশেষ।
অশেষ বেদনা মাড়িয়ে তব
হয় স্থির প্রত্যয়ী
দুঃখ শোকে প্রেরণালব্ধ স্পৃহা
অদম্য বিজয়ী।
... বধূর ও-মুখ বিমুগ্ধ আবেশ
তৃষিতপ্রাণ ভরি শীতল পরশ
অন্তরতরে প্রখর অনুরাগ
শুধু নেই তার মূর্ত বহিঃপ্রকাশ।
মন চায় দিতে প্রাণখোলা হাসি
এক উত্তুঙ্গ চিৎকার
ব্যর্থ ভরে নির্লিপ্ত হাসি, গুপ্ত রয় সব প্রস্ফুটিত ফুল
যেন সব সারা অব্যক্ত অনুভূতির।
দিলকোঠাতে অসীম সজীবতা
রসকষহীন বেরসিক বহিঃরূপ
অথচ, ভ্রামরীমিত্রতা চায় প্রাণবন্ত উচ্ছলতা
ফলত, বয়স্যহীন বিযুক্ত এক দ্বীপ।
একদা বউ বলল, একটা উপহার দেব
দাও না ..., না ... দেরি হবে
ও আচ্ছা
বা ... রে! কত দেরি, জানতে চাইলে না
ও ... তাইতো, কত দেরি
দশমাস দশদিন ...।
চোখে নিস্তরঙ্গ চাহনি
সেথা তৃপ্তি
আর এক সমুদ্র ভালোবাসা।
... ওটিতে তিনজন মানুষ
একজন জীবিত, মৃত দু-জন
অন্তরদলানো কষ্ট
বাঁধভাঙ্গা কান্নার আওয়াজ
অন্তরাত্মা কাঁপে, বিষ্ময়ম্ভিত দৃষ্টি
সেথা একরাশ অবিশ্বাস।
জ্বলে চৈত্র দুপুর হুতাশন
যবে ব্যথা দিলে তব সব ব্যথা দাও
দগ্ধ-হৃদয় সন্তাপে হয় শুষ্ক
শাওন-সিক্ততা রূপ লভিনু
যেন কাঠফাটা রুক্ষ।
আজীবন গেল কষ্ট বরণে
আমি তব কষ্টের পাখি
কষ্টের মাঝে লালিত স্বপ্ন
দুঃখকে স্মরণে রাখি।
ফিরোজ, টিকাটুলি, ১৯/০৯/১৯৯৯