আমার ছিলো মা-জননী
পুণ্য ভরা মুখ,
মুখের পানে দৃষ্টি দিলে
হারতো সকল দুখ ।
সেই জননীর দুঃখের কথন
বলবো এখন শোন,
তারায় তারায় আকাশ ভরা
আমার তারা যেনো ।
সেই যে কবে বাবার কথা
শুনেছিলাম শেষ,
সেই কথাটি নেই-রে মনে
চক্ষু পাতে রেশ ।
হ্যাঁ-রে খোকা তোর বাবা কী
জানিস কোথায় আছেন ?
ঐ আকাশের শেষ সীমানায়
স্বর্গে বসে হাসেন ।
সেই যে শুরু একলা চলা
কাটতো মায়ের দিন,
জনম জনম শতক জন্মে
শোধ হবে না ঋণ ।
একলা কষ্টে একলা ক্লেশ
না ছিলো তাঁর খেদ,
জীবন যুদ্ধে ক্রমাগত
না ছিলো তার ছেদ ।
বুকের মাঝে পাথর ব্যথা
আসতো অনেক ঝড়,
হাসি মুখে বলতো তবু
পড়-রে খোকা পড় ।
পড়বি বেশি গড়বি জীবন
অনেক বড় হবি,
মানুষ হবি জনের মনে
থাকবে তোর-ই ছবি ।
জ্বরের আঁচে ঘোরের মাঝে
আমার প্রলাপ বাত,
শিয়র পাশে কাটতো মায়ের
নিদ্রা বিহীন রাত ।
ছেলে এখন অনেক বড়
অনেক মাইনে পায়,
মায়ের বুঝি কষ্ট সরে
সুখের নাগাল পায় ।
সুন্দরী এক টুকটুকে বউ
আনলো ঘরে তুলে,
সুখের হাওয়া বইবে ঘরে
দুঃখ যাবে ভুলে ।
হঠাৎ আঘাত নিসাড় দেহ
পক্ষাঘাতে হায়,
সংগ্রামী মা তাঁর কপালে
সুখ যেনো না সয় ।
দিবস কাটে রাত্রি কাটে
মৃত্যু কথার ভিড়,
আমার মায়ের পুণ্য-মুখটি
শান্ত পাখির নীড় ।
দুর্ভাগা এক ছেলে আমি
বুকের মধ্যে নদী,
মা-ও গেলো দূর নীলিমায়
একলা কেবল কাঁদি ।
ফিরোজ, দিলকুশা, ০২/১০/২০১৯