প্রিয় খুকু,
কেমন আছিস রে খুকু,ভালো আছিস ত। কতোদিন যে তকে দেখি না,দেখার জন্য মনটা বড়ো কাঁদে রে। বৌ’মা নানু মনি কেমন আছে রে,তাদেরকে খুব কাছে পেতে আদর করতে ইচ্ছে করে রে। জানি’স খুকু আমি আর আগের মতো দেখতে পাই না রে। সব কিছু কেমন জানি কুয়াশার মতো দেখায়,চশমাটাও আর আগের মতো কাজ হচ্ছে না। সে টা হয়তো’বা অস্রুর অঝর ধারার নিয়তি আমার খুকুকে দেখার সামার্থ কেড়ে নিতে চায়। জানিস খুকু গতরাত হতে বিছানা থেকে উঠতে পারছিনা। পা গুলো কেমন জানি অবশ হয়ে আসছে। দেখতো আমার দেহটা তর দেহের সাথে দেহের আলিঙ্গনের আশায় বিরাগ করে বসে আছে।
আমার মন তো রাগ করে না।

তকে একটা চিটি লিখবো ভাবছি কিছু দিন ধরে।
মনের মধ্যে লুকিয়ে রাখা সুখের উপচে পড়া কতগুলো কথা বলব ভাবছি। এর আগেও বেশ কতো গুলো চিটি পাঠিয়ে ছিলাম উত্তর পাই’নি রে আমার মনে হয় চিটিগুলো তর হাতে পৌছায়’নি, না হয় তর মন ভুলা মনে কোটের পকেটে জমা হয়ে আছে। সময়ের কারনে পড়তে পারিস’নি তাই নারে খুকু।
সময় করে উত্তর দিস।
আজকে একটা বিশেষ দিন রে ২৫শে বৈশাখ মনে আছে কি তর?
এই দিনটা এলেই তকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথের গান কবিতা ছড়া গল্প উপন্যাস পড়ে শুনাতাম। তর জন্মের পর যখন তর বাবা মারা গেল অনেক কষ্ট করে তকে বড় করেছিলাম,তর বাবার অভাবটা বুঝতে দেয়’নি। এই দিনেই তর পৃথিবীতে আসা, আর আমার সাদা শাড়ি উঠলো গায়ে।  খুকু এই চিটিটা হাতে পেলে উত্তর দিস,হয়ত’বা আর কোন দিন লিখতে পারবো কি’না জানি না। আমার হাতটাও যে আর চলছে না,
বড্ড মায়া পড়ে আছে তর লাগি।
জানিস খুকু গত কয়েক দিন যাবৎ শুধু তর বাবা আমাকে ডাকে আর বলে। তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না গো। আমার কাছে চলে এসো না। আমি বলি এখানে কোন কষ্ট নেই। আরে কি যে বলো না, আমি ভালোই আছি সুখে আছি।
এই দিকে তুই খুকু অন্য দিকে তর বাবা আমি মধ্য খানে বসে আছি রে। কি যে করি খুকু তকে শেষ বারের মতো যদি একবার দেখে যেতে পারতাম। তকে আগের মতো খুকু বলে ডাকতে পারতাম,আদর করে কপালে চুমু খেতে পারতাম,নিজ হাতে খাওয়াতে পারতাম,কাছে কাছে থেকে সোহাগ দিতে পারতাম।
তবে তর বাবার কাছে গিয়েও সব বলতে পারতাম । তোমার খুকু ভালোই আছে। তবে যাবার আগে একবার আমাকে তর বদনখানি দেখবার স্বাদটুকু পূরন করে দিস খুকু।

ইতি,
তোর মা