আমার বুকের বাম অলিন্দে
উপরের পৃথিবীর
প্রিয় মানুষের আঙুলের খোঁচাখুঁচি টের পেলাম!
চোখের পাতা খুলতে পারছি না-

আলোকিত সেই পৃথিবীতে আমি একটি গাছ লাগিয়ে এসেছিলাম, নীল কষ্ট গাছ!
সেই গাছের গা দিয়ে আঠালো রস বের হয় চোখের জলের মত ,
সেটা নীল কষ্ট গাছের কান্না।
সে জল দিয়ে অনায়াসেই আটকে রাখা যায় দুটো গ্রহকে-
তোমরা আমাকে যেভাবে শায়িত করে গেছো
ঠিক সেভাবেই রয়ে গেছি,
দেখতে পাই না ,
ছুঁতে পাইনা, শুধু টের পাই।
বাম অলিন্দে প্রিয় মানুষের আঙ্গুলের খোঁচাখুঁচি নয় এটা!
ওপরের পৃথিবী থেকে নিচে নেমে এসেছে আমার বুকের উপরে একটি শিকড়!
আমাকে এখানে রেখে যাওয়ার দিন বুকের উপর তোমরা পুতে দিয়েছিল ফুলের একটি গাছ -
সেই শিকড় এসেছে আমার বাম অলিন্দে।
ওর কাছেই জানতে পারলাম উপরের পৃথিবীতে থাকা
সব মেয়েরা এখনো আগের মতই আছে!
তারা এখনো রোজ তাদের প্রিয় মানুষকে হাসতে হাসতে খুন করে বাক্য বাণে,
তারা আজও চরম যৌন সুখের ন্যায় সুখ খুঁজে পায়
প্রিয় মানুষকে  অপমান করে ,
এখনো তারা নারী মুক্তির চেতনায় বিশ্বাস করে,  
এখনো তারা দিনশেষে কারো শাসনের বেড়াজালে আটকে থাকতে চায়।
এখনো তারা ফাঁস করেনি সেই বহুগামিতার গোপনীয়তা!
তারা এখনো সতীত্ব আর বেশ্যাপনার
পার্থক্য খোঁজে
অচেনা পুরুষের বুকে মাথা রেখে!

আমার প্রতিবেশীদের সাথেও কথা হয় না,
তোমাদের কখন দিন
কখন রাত তোমরা টের পাও ।
তোমরা ঘুমাও তোমরা জেগে ওঠো ,
তোমরা কাজে যাও
কাজ শেষে ঘরে ফের,
স্ত্রী-সন্তান ,বন্ধু ,আড্ডা হাসি তামাশা,  ক্রিকেট খেলা দেখা  সবই কর।
আমার পৃথিবীতে শুধুই অন্ধকার!
নিশ্চুপ নিথর!
প্রতিবেশী নেই ,বন্ধু নেই- মাটির গন্ধ আছে শুধু!
এখানে থাকা কিছু পোকামাকড়ের ম্যারাথন গান শোনা যায়।
আমার অনন্তকালের এই যাত্রায়
সঙ্গী নেই বন্ধু নেই --
আছে শুধু প্রতীক্ষা,
সীমাহীন প্রতীক্ষা।
নিজেকে প্রশ্ন করে  জানতে চাইলাম --
কোন প্রত্যাশা আছে কি আর?
মুহূর্তেই মনে পড়লো!
হ্যাঁ , একটি প্রত্যাশা এখনো
আমার পুরো দেহ আচ্ছাদিত কাফনের মত সঙ্গী হয়ে আছে --
" আমার কবরের পাশেই যেন ঠাঁই হয়  বহুগামী রহস্যের সতীত্ব জয়ী সেই মানুষটার"!!!