তখন ছিল নিত্যদিনই আকাশ-নদীর বৈরী খেলা
এমনি এক বিকেলবেলা কৃষ্ণচূড়া গাছের তলে-
বসেছিলাম ঘোলা জলে নীলের আভা আঁকবো বলে,
হটাত দেখি গাছের ডালে গানের পাখি উঠল ডেকে,
গুচ্ছফুলের একটি কলি ঠিক তখনি হাওয়ায় নেচে-
পড়ল খসে সবুজ ঘাসে, বসল দেখি পাশেই এসে-
অবাক করে বলল কথা লালচে রাঙা মিষ্টি স্বরে-
‘আমার রূপে এমন করেই সুরের পাখি কণ্ঠ ভরে’
তখন থেকে আমি ছিলাম ফুলের প্রতিই পক্ষপাতী ।
অন্য আরেক সন্ধ্যাবেলা যুদ্ধরত আকাশ-নদী
অকস্মাৎ-ই একটি পাখি উড়ছে দেখি ডানায় চড়ে
ইচ্ছে হল বলতে তাকে ‘কোথায় তুমি যাচ্ছ উড়ে’ ?
অদ্ভুতুড়ে শব্দ-কথায় আমায় দেখে শুধায় এসে-
‘যাচ্ছি আমি অচীনপুরে মুখে নিয়ে ফলের আঁটি-
নতুন কোন ফুলের চারা ফোঁটার তরেই খুঁজছি মাটি’
ফুলের চেয়ে আমি তখন পাখির প্রেমেই আকাশমুখী;
নিজের কাছেই প্রশ্ন রাখি- কোনটি তবে ফুল না পাখি ?
ফেরার পথে হেঁটে হেঁটে যখন ছিলাম খেয়া ঘাটে-
তখন শুনি অনেক লোকে জটলা পেকে বলছে কথা
বেশিরভাগই ফুলেই হারা- ‘অন্যকিছু যায়না ভাবা’,
কারো কথায় পাখি ছাড়া জীবনপ্রভাই অসম্ভবে;
আমি শুধু বুঝতে পারি দুটোর সুধাই ভিতর কাড়ে...
সেদিন রাতে স্বপ্ন দেখি বসে আছি নদীর তীরে,
জীবনমুখী গানের সুরে ইচ্ছে হাওয়ায় অচীন পাখি -
ছেয়ে যাওয়া রঙিন ফুলে রক্ত-রাঙা কৃষ্ণচূড়া-
আমার মতই খুঁজছে তারা- অথই জলে প্রণয় খেলা;
ঘুম হারানো প্রভাতবেলা তখন থেকে নিত্য আজও-
মেঘলা আকাশ রঙিন করি- স্বপ্ন গড়ি জলস্রোতে,
ইচ্ছে হলেই ভাসাই তরী সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা-রাতে ।