যেদিন আমার দেহ থেকে
এই প্রাণ নেবে বিদায়,
চারদিক নিস্তব্ধতার বলয়ে পরবে আটকা।
সেদিন কি আমায় ভালবাসবে?
নাকি মাত্রই দু ফোটা চোখের অশ্রু ঝরিয়ে-
করুণা ধারায় সিক্ত করবে?

যেদিন আমার নিথর দেহ পরে থাকবে ঘরের একপাশে,
চারদিকে যখন জ্বলন্ত আগর বাতির সুঘ্রাণ।
পাশে বসা ছোট বাচ্ছা কিংবা স্বজনদের
কোরআন পাঠের গুণগুণ আওয়াজ,
আহাজারি আর আর্তনাদ।
সেদিন কি আমায় ভালবাসবে?
নাকি মাত্রই দু ফোটা চোখের অশ্রু ঝরিয়ে-
করুণা ধারায় সিক্ত করবে?

যেদিন আমার এই দুটো চোখ
তোমার সৌন্দর্য দেখার ক্ষমতা হারাবে,
এই দুটি কান তোমার কণ্ঠ শুনার ক্ষমতা হারাবে,
ক্ষমতা হারাবে তোমার চুলের গন্ধ শুকার এই নাক,
যখন লাশ শব্দে পরিচয় হবে আমার।
সেদিন কি আমায় ভালবাসবে?
নাকি মাত্রই দু ফোটা চোখের অশ্রু ঝরিয়ে-
করুণা ধারায় সিক্ত করবে?

যেদিন আমার নিথর দেহখানি
অন্তিম বিদায়ের সাদা কাফনে সজ্জিত করা হবে।
স্বজনদের কাঁধে শোভা পাবে আমার কফিন।
সেদিন কি আমায় ভালবাসবে?
নাকি মাত্রই দু ফোটা চোখের অশ্রু ঝরিয়ে
করুণা ধারায় সিক্ত করবে?

যেদিন হাজারো মুসল্লির সম্মুখে
আমার মৃত দেহখানি রাখা হবে
ধর্মের রিতিরেওয়াজ পালনে ব্যস্ত সবাই,
দৃশ্যমান জানাজার নামায।
সেদিন কি আমায় ভালবাসবে?
নাকি মাত্রই দু ফোটা চোখের অশ্রু ঝরিয়ে-
করুণা ধারায় সিক্ত করবে?

যেদিন আমার অবয়ব মাটির নিছে শায়িত করা হবে,
তোমার চোখের আড়ালে যাবে আমার শরীর।
খেজুর পাতা দেওয়া
তরতাজা করব দৃশ্যমান হবে আমার।
সেদিন কি আমায় ভালবাসবে?
নাকি মাত্রই দু ফোটা চোখের অশ্রু ঝরিয়ে-
করুণা ধারায় সিক্ত করবে?

অথচ আমি করুণা চাই নি!
হৃদয়াসিক্ত ভালবাসা চেয়েছি।
আমার বিদায় কালেও যদি-
তোমার হৃদয়াকুটিরে কিঞ্চিৎ ভালবাসার জন্ম নেই,
আমার মরা দেহের কানের কাছে এসে  
কিংবা কবরের পাশে এসে
চুপিসারে বলো -ভালবাসি।
অন্তত সেদিন আশা সঞ্চারিত হবে,
ওপাড়ে তোমার আঙ্গুল ছোয়ার।
মরনের পরেও আমি তোমাকে চাই।
ভালো থেকো প্রিয়, আজ চির বিদায়।